Posts

Showing posts from July, 2024

মোজেস

Image
  আব্রাহামিক রিলিজিয়ানে অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি সম্ভবত মোসেস। কারণ আব্রাহামের দর্শন থেকে মোট সাতটি ধর্ম সম্প্রদায় উৎপন্ন হয়েছে। তাঁর মধ্যে তিনটি প্রধান --- খ্রীষ্টান, ইহুদী এবং মুসলিম। বাকি চারটে হল বাহাই, সামারিটান, দ্রুজ এবং রাস্তাফারি। প্রধান তিনটে ধর্মের যে মূল ধর্মগ্রন্থ সেখানে মোসেস-এর উল্লেখ আছে, বিস্তারিতভাবে। এর মধ্যে ইহুদী এবং খ্রীষ্টধর্মে মোজেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।       গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার বড়ো কারণ – The Promise Land. ঈশ্বর আব্রাহামকে কথা দিয়েছিলেন, তাঁর উত্তরপুরুষেরা এই ‘প্রমিস ল্যান্ড’-এর অধিকারী হবে। কিন্তু বাস্তবে, দেখা যায়, প্রায় চারশো বছর ধরে মিশরের অধীনে তাদের ক্রীতদাস থাকতে হয়। এই সময়ে আসেন মোজেস। ঈশ্বরের বার্তাবাহক হয়ে। মিশরের রাজপরিবারে তাঁর বড়ো হয়ে ওঠা, সেখান থেকে পলায়ন, সিনাই পর্বতে ঈশ্বরের মুখোমুখি হওয়া, মিশরে ফিরে এসে ইহুদিদের মিশর থেকে স্বাধীন করা, তারপর এক অজ্ঞাত ক্ষমতা প্রয়োগে রেড সী-র মধ্যে দিয়ে সোজা আবার সিনাই পর্বতে ফিরে আসা। এরপর তিনি আর বেশিদূর এগোতে পারেন নি তাঁর সম্প্রদায়কে নিয়ে। নেবো পর্বতের পাদদেশে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যু অব্যবহিত পূর্বে তিন

ম্যালিস

Image
  একটা খুন হয়েছে প্রথম পর্বে - হিদাকা। দ্বিতীয় পর্বে গোয়েন্দা সমস্ত অ্যালিবাই যোগাড় করে ফেললেন – কিয়োচিরো কাগা। এবং তৃতীয় পর্বে খুনী তার খুন করা শুধু স্বীকার করে নিলেন, তা-ই নয়, খুনের কারণও বিস্তারিতভাবে লিখিত জানিয়ে দিলেন – নোনোগুচি। গল্প শেষ হল নবম পর্বে গিয়ে। ডিকেক্টিভ কাগা প্রকৃত রহস্য সমাধান করলেন অবশেষে। আমারও মাথা ঘুলিয়ে গিয়েছিল চতুর্থ পর্বের সময়। মনে হচ্ছিল লেখক হিগাশিনো এটা ঠিক কি লিখছেন? কেনই বা লিখছেন? তাহলে খুনী কি অন্য কেউ? আসল খুনীকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে? গতানুগতিক লেখায় যা হয় আর কি! না। খুনী আসলেই খুনী। ঘটনাটা এভাবে ভাবা যাক, বিষয়টা তারপর কি দাঁড়াচ্ছে বোঝার চেষ্টা করা যাবে - যে কোন খুনের একটা মোটিভ থাকে। সেই মোটিভকে তথ্যপ্রমাণ সমেত জোগাড় করা হলে তা অ্যালিবাই হিসাবে আদালতে পুলিশ জমা দেয়। অপরাধের শাস্তি নির্ভর করে খুনের সেই মোটিভটার ওপর। কিন্তু, যদি এমন হয়, খুনীর খুন করার উদ্দেশ্য হল খুনের মোটিভটাকেই ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করা? সে খুন করেছে তা সে অস্বীকার করছে না, কিন্তু খুনের ‘মোটিভ’ হল ‘মোটিভ’ আড়াল করা। মূল মোটিভের ধারেকাছে যেন পুলিশ আসতে না পারে। এই হল আসলে

দ্য অ্যালকেমিস্ট

Image
  ‘দ্য অ্যালকেমিস্ট’ আমার পড়া প্রথম ইংরাজি উপন্যাস। আমি তখন স্কুলে শাড়ি পরে যাওয়া আরম্ভ করেছি মাত্র। গডব্রাদারের দেওয়া প্রথম ইংরাজী উপন্যাস, পেঙ্গুইনের বই, কলেজ স্ট্রিট থেকে আনানো, মহার্ঘ। আমার সংগ্রহে সেটা আর নেই। কিন্তু এটুকু মনে আছে পচাত্তর পার্সেন্ট বইটার বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারি নি আমি। একটা বড়ো কারণ ভাষা। একটা বড়ো কারণ সেই ভাষায় প্রথম আমি এতোবড়ো একটা উপন্যাস পড়ছি । তখন পড়তে সময় লেগেছিল এক মাসের কিছু বেশি। আজ শেষ করতে আমার লাগল মাত্র তিনদিন। যদিও এবার বাংলায়।       সে সময়ে, বুঝি চাই না বুঝি, আমার মনে একটা দাগ কেটে গিয়েছিল বৈ কি। প্রথম পড়া এবং প্রথম শেষ করতে পারা ইংরাজী উপন্যাস। সেই পারাটা আমার জীবনে একটা ‘অ্যাচিভমেন্ট’ বলা যেতে পারে। আর প্রত্যেকের জীবনে প্রথম শেষ করা বইয়ের স্মৃতি বড়োই মধুর হয়। আপনারা নিজেদের প্রথম শেষ করা বইয়ের কথা ভাবুন। তা সে মাতৃভাষাতেই হোক, কিম্বা অন্য ভাষা।       তবুও, তার বাইরেও এমন একটা কিছু ছিল, বিষয়বস্তুর মধ্যে, যা আমাকে বার বার বইটার দিকে টেনে আনে। পরবর্তীকালে বেশ কয়েকবার বিচ্ছিন্নভাবে বইটা পড়লেও, বাংলা অনুবাদ যখন সহজলভ্য হয়ে উঠল, তখন না কিনে পারলাম

গণেশ হালুই ও পূজাবার্ষিকী

Image
  প্রত্যাশামতোই আনন্দবাজার পত্রিকার পূজাবার্ষিকী সংখ্যা আত্মপ্রকাশ করেছে। তারা শ্রাবণ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করে নি, মড়া আষাঢ়েই হয়েছে প্রকাশ, এবং গতবারের মতো, এবারেও প্রচ্ছদ বিতর্কে গত দুই দিন ধরে ফেসবুকে চোখ রাখা দায়। প্রসঙ্গত গতবারের ‘দেশ’ পত্রিকায় শ্রদ্ধেয় রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুর্গা’ যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছিল, আমার বিশ্বাস, তা পত্রিকার বিক্রীটাকে বাড়িয়ে দেয়। এবং আমার আরও বিশ্বাস, এবারে আনন্দবাজার পত্রিকার পালা। কারণ, আনন্দবাজার পত্রিকা’র সে জৌলুস বহু বছর আগেই অস্তাচলে। এবং এবারের পালা শ্রদ্ধেয় গণেশ হালুই-এর। এই ছবি নিয়েও দুই ভাগ হয়ে গেছে। তৃতীয় একটা অদ্ভুত দলকে চোখে পড়ছে, তাদের কথা পরে আসছি। প্রথম ভাগ, অবশ্যই ছবির সমর্থনে কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য, এই ছবির মাহাত্ম্য অসাধারণ পর্যায়ের। গণেশ হালুই নিজেই কিংবদন্তী। তিনি দুর্গা-ই বা কেন আঁকবেন? শিল্পে কি বিদ্রোহ হতে পারে না? নতুনত্ব আসতে পারে না? পূজোসংখ্যায় দুর্গা আঁকাটাকেই কি মাস্ট করতে হবে? গণেশ হালুই শারদীয়ার বন্দনা করেছেন, নিজের মতো করে, প্রচলিত প্রথায় নয়, এবং এ এক ধরনের বিদ্রোহ। প্রথাগত শারদ প্রচ্ছদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। শিল্পীর

মহারাজা

Image
  সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি, আমার কাছে, চিরকালই, খুব একটা ভালো লাগে না। বড্ডো কড়া। সবকিছুতেই এরা বেশ কড়া। গল্প বলাতেই হোক, কিম্বা লার্জার দ্যান লাইফ দেখাতে গিয়ে ‘অতি লার্জার দ্যান লাইফ’ করে ফেলাই হোক, কিম্বা ইমোশনের সমস্ত আত্মীয়-স্বজন এক করে দেওয়াই হোক --- দক্ষিণী সিনেমায়, মানে কমার্শিয়াল সিনেমায়, এ সবই দেখা যায়।       কিন্তু তবুও কিছু সিনেমা ভালো লাগে। কারণ, অতি নাটকীয়তার পেছনে কোথাও যেন একটা ‘সেন্সিটিভ’ বিষয় কাজ করে। এই সংবেদনশীলতা আমাকে ভাবায়। সংবেদনশীল প্রশ্নটা সারা সিনেমা জুড়ে ভুলতে দেয় না। আর দ্বিতীয় কারণ, মানুন চাই না মানুন --- কয়েকজনের অভিনয়। মারাত্মক কিছু অভিনেতা সিনেমাটাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে, একাই।       বিজয় সেতুপতি তার পঞ্চাশতম সিনেমায় এক ন্যায়বিচার অন্বেষিত পিতা। আর অনুরাগ কাশ্যপ সাংঘাতিক নিষ্ঠুর এবং পরবর্তীকালে প্রতিশোধপরায়ণ বাবা। দুটো বাবাকে একসাথে পাঞ্চ করলে ‘মহারাজা’ সিনেমা দাঁড়ায়।       যদি দ্বিতীয় প্যারার বিষয় নিয়ে পুনরায় কথা বলতে যাই, তাহলে একটা উদাহরণ দিই। সিনেমায় দেখবেন, পুলিশ এক পর্যায়ে আইন জনসাধারণের হাতে তুলে দিচ্ছে। কোন ধরনের পুলিশ? যে নিজেই কি না ঘুষ

আকাশ জোড়া মেঘ

Image
  কার্টুন দিয়ে, বলা ভাল কমিক্স দিয়ে আমার পড়া শুরু, সেই-ই-ই-ই-ই... ছোট্টোবেলায়। তারপর কখন যে কমিক্স ছেড়ে বড়ো হলাম মনে পড়ে না। কেবল মাঝে মাঝে ছোটবেলায় ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, ছোটবেলার স্বাদ পেতে।       কমিক্সের ওপর একটা ভালোবাসা বুকের মাঝে থেকে যাওয়ার আরেকটা বড়ো কারণ আমার বন্ধু সমর্পিতা। সে কমিক্স বড়ো ভালবাসে। সে প্রচুর কমিক্স পড়ে। কিছুদিন আগে জাপানী অ্যানিমে-র কথা বলাতে সে বলল, সে ওসব প্রচুর পড়ে। দুটো অ্যাপসও তার আছে, যেখানে সে নিয়মিত কমিক্স পড়ে। আমি বললাম, আমায় বলিস নি কেন হতভাগী?       সে থতমত খেয়ে বললে, আমি তো জানি, তুই কমিক্সের থেকে ওইসব মাথা-চাটা বই বেশি পছন্দ করিস। কমিক্স তুই শেষ কবে পড়েছিস শুনি?       তাই তো? আমি শেষ কমিক্স কবে পড়েছি? আমার জমানো বইয়ের এক কোনায়, অন্ধকারে আমার যে এক টুকরো ছেলেবেলাটা অজ্ঞাতবাস করে তাকে আমি আবার টেনে নামাই। ধুলো ঝাড়ি। আবার রেখে দিই।       এতএব সমর্পিতার জন্মদিনে কিনলাম বই তিনটে। কিনেই মনে হল, আমি তো ‘বিশ্ব হিংসুটে’, তা আমার কাছেই বা কেন এক কপি করে থাকবে না? এতএব, জেমস্‌ বন্ড, লে আও ফিরসে।       জেমস বন্ড* ফোনের ওপারে একরকম ঝাঁঝিয়েই বলে ওঠে, তো

3 Body Problem

Image
  আমাদের পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। অর্থাৎ, গ্রহটির একটাই নক্ষত্র। একটাই কক্ষপথ। দিন-মাস-বছর সবকিছুই নিখুঁত হিসাবের মধ্যে। কিন্তু যদি তার তিনটে সূর্য থাকত? অর্থাৎ, গ্রহ এক। তার নক্ষত্র সংখ্যা তিন। এতএব তার প্রদক্ষিণ পথ নির্দিষ্ট নয়। এবং শুধু তাই নয়, কক্ষপথের সাথে সাথে তার দিন-মাস-বছর এমনকি আবহাওয়া --- ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। এমতাবস্থায়, সেই গ্রহের অধিবাসীদের অবস্থা কি হবে? তারা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে। মজার কথা, তারা এর মধ্যেও লড়াই করে বেঁচে আছে। প্রতিটা সভ্যতা কিছু দিন অন্তর অন্তর বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অবশিষ্টাংশ থেকে আবার নতুন করে নতুন সভ্যতার জন্ম হচ্ছে। এইভাবে উন্নততর সভ্যতাটি টিকে আছে। শুধু তাই নয়, বেঁচে থাকার আকুল তাড়নায় তাদের উন্নতি আকাশছোঁয়া। মানব সভ্যতার থেকে তারা অনেকটাই এগিয়ে। একটি মানুষ একদিন যোগাযোগ করে এদের সাথে - রেডিও সিগন্যাল। সভ্যতাটির হাতে জ্যাকপট লেগে যায়। তারা দেখে, কোনভাবে যদি পৃথিবীতে চলে আসা যায়, তাহলে, তাদের পক্ষে সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব। তারা একশোটি মহাকাশযানে তাদের যাত্রা শুরু করে। তাদের আসতে সময় লাগবে চারশো বছর। কিন্তু এই চারশো বছ

জলের ওপর পানি

Image
  “পৃথিবীর পথে এই নিহত ভ্রাতার ভাই আমি। আমাকে কনিষ্ঠের মতো জেনে তবু হৃদয়ে কঠিন হয়ে বধ করে গেল; আমি রক্তাক্ত নদীর কল্লোলের কাছে শুয়ে অগ্রজ প্রতিম বিমূঢ়কে বধ করে ঘুমাতেছি।”       লিখছেন জীবনানন্দ। এই সেই সময়ের আর্তনাদ, যে সময়ে সবাই সবাইকে আড়চোখে দেখছে। হত্যা তখন বঙ্গজীবনের অঙ্গ। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, রঘুপতির জবানীতে, “পাপপুণ্য কিছু নাই। কে বা ভ্রাতা , কে বা / আত্মপর! কে বলিল হত্যাকাণ্ড পাপ! / এ জগৎ মহা হত্যাশালা।”       এই হত্যাকান্ড কোন সময়ের? মূলত দুটো সময়ে। সাতচল্লিশ এবং বাহাত্তর। দেশভাগ। একটা পোড়া দগদগে ঘা। ১৯৪৭। ঘায়ের ওপর মাছি। ১৯৭২। জলের ওপর পানি। উপন্যাস। ১৯৬৮ থেকে শুরু। লেখক স্বপ্নময় চক্রবর্তী।       ফর্মুলা একটাই --- সুনীলের সেই সময়-এর স্টাইল। ঐতিহাসিক এবং কাল্পনিক চরিত্র। ইতিহাস এবং ফিকশান। হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে। স্বপ্নময় চক্রবর্তী হাঁটিয়েছেন। বলা হচ্ছে, এই উপন্যাসের উৎসবিন্দু ‘চতুষ্পাঠী’ উপন্যাস। পড়া হয় নি আমার। আমি সরাসরি প্রবেশ করেছি ‘জলের ওপর পানি’-তে। ধারাবাহিকভাবে বেরিয়েছিল একটি পত্রিকাতে। দাবী, তা প্রসংশিতও হয়েছিল। এখন সমস্যা এই, পত্রিকা বেশিরভাগ লোকে কেনে অভ্যাসে।

টেরাকোটার যোদ্ধারা

Image
  কুইন সাই হুয়াং --- চীন --- রাজত্বকাল ২১০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ। মূল চীন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। চীনের নামকরণ ওনারই। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর কবর ঘিরে রাখা হয় মাটির তৈরী অসংখ্য যোদ্ধাদেরকে। যাদেরকে বলা হয় ‘ টেরাকোটা ওয়ারিয়র্স ’ । অনেক মানুষের তৈরী এই শিল্প পুনরাবিস্কারের পর থেকেই বিস্ময়ের অবধি নেই। এদের কথা আমরা প্রত্যেকেই কম-বেশি জানি। ‘দ্য মমি’ সিরিজের একটা সিক্যুয়েল এদেরকে নিয়েই তৈরী। রাজার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জেট লি। দুষ্টু রাজা। সেই টেরাকোটার যোদ্ধাদের সাথে কি আর কিছুই ছিল না? ছিল। একটা গোটা নগরকে মৃত্তিকায়ন করা হয়েছিল। কেন? রাজার অমৃতের পুত্র হওয়ার সাধ ছিল। সে শখ সব রাজারই কম-বেশি থাকে, ইতিহাস সাক্ষী। সুদূর মিশরের পিরামিড কিম্বা ভারতের তাজমহল। অমর হতে চায় সকলেই। কেবল তার পিছনের দর্শন আলাদা আলাদা। কিন্তু, রাজাদের এই শখের ক্ষতিপূরণ বলে কি কিছু হয়? এমন একটা বিস্ময়ের পেছনে কি শুধুই আলোকময় এক প্রচেষ্টা? না তো। কত রক্ত, কত নির্মমতা, কত বিশ্বাসঘাতকতা! ঘাটতে গেলে একটা কথাই ইতিহাস বলে ওঠে, “রাজা তোর কাপড় কোথায়?” ইতিহাস সেই শিশুর মতো এসে প্রশ্ন করে। হুয়াং-কে প্রশ্ন করে? কত হত্যা ঘটিয়েছ

দ্য পিরামিড

Image
১লা জুলাই , ইসমাইল কাদারে , মারা গেলেন । অ্যালবানিয়ার লেখক, ফ্রান্সের অভিবাসী। তাঁর মৃত্যুর খবর আমি পাই সোশাল মিডিয়া থেকে। অনেকে বলেন, বিশ্বসাহিত্যে তিনি কাফকা-র সার্থক উত্তরাধিকারি; অনেকে বলেন, আলবেনিয়ার জর্জ অরওয়েল; অনেকে তুলনা করেন মার্কেজ, গোগোল এবং নাগিব মাহফুজের সঙ্গে; অনেকের সিদ্ধান্ত, তাঁর নোবেল পাওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষামাত্র। তাঁর আগে তার নাম পর্যন্ত শুনিনি। তাতে আমার কোন দোষ নেই। আমার বয়স আর অনভিজ্ঞতা আমাকে সাহিত্য ক্ষেত্রে অনেক অজ্ঞাত অপরাধের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়ে এসেছে এযাবৎ। এখন ছোট-বড় অনেক প্রকাশক পুস্তক তালিকার ডিজিটাল ভার্সান নিয়ে এসেছেন । আমি মাঝে মাঝেই সেখানে চোখ বোলাই। ইসমাইল কাদারে-র নাম নেই। অনুবাদশূন্য লেখক । অথচ বাংলা তর্জমা আমাদের মতো ইংরাজী দুর্বলা অবলার যে কতোটা সহায়ক তা বোঝাই কি করে? এছাড়াও কাদারে-কে নিয়ে কোন লেখা বড়ো বড়ো জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া গ্রুপে কিম্বা ম্যাগাজিনেও চোখে পড়েনি। যারা বিরোধিতা করবেন, তাদের বলি, মহাসমুদ্রের মধ্যে একটা সাবমেরিনের পেরিস্কোপের লেন্স চোখে পড়া সম্ভব কি? না। এতএব বাংলাদেশের দিকে মুখ ফেরাই। খুঁজে পেতে একটাই উপন্যাস হাতে পেলাম। দ্

স্যালভেশান অফ আ সেইন্ট

Image
  যে কোন গোয়েন্দা কিম্বা থ্রিলার গল্পে বা উপন্যাসে হত্যাকান্ড একটা বড়ো বিষয়। হত্যার খুঁটিনাটি, এবং সেই খুঁটিনাটিকে সূত্র হিসাবে ধরে যদি হত্যাকারীর কাছে আসা যায়, যা সাধারণত ঘটে গল্পের শেষে, দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে হত্যাকারীর সেটি সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড ছিল। এই পরিকল্পনা, যা হত্যাকান্ডকে তরান্বিত করে, তা অবশ্যই কোন এক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যের পরিণাম।       কিন্তু, এমন যদি হয়, হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্যই ছিল হত্যাকান্ডটিকে মন্দীভূত করা? অর্থাৎ, হত্যার উদ্দেশ্য ছিল হত্যা না করা? তাহলে?       গুলিয়ে গেল কি?       মানে, আমি বলতে চাইছি, সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডের ছক কষে রাখা হয়েছে। সমস্ত রকমের ফাঁদ প্রস্তুত। হত্যাকারী যে কোন মুহূর্তেই হত্যাটি ঘটিয়ে ফেলতেই পারে। কিন্তু, যে উদ্দেশ্যে এই হত্যাকান্ড, সেই পরিণামটিকে হত্যাকারী পিছিয়েই যাচ্ছে একটি একটি দিন করে। অর্থাৎ, হত্যাটি তার উদ্দেশ্য নয়, অথচ, হত্যা ছাড়া আর কোন দ্বিতীয় পরিণাম হত্যাকারীর কাছে ছিল না। এক এবং অন্তিম পরিণাম।       ব্যাপারটা খুব জটিল কি? জীবন বড়ো জটিল, বাবুমশাই!       কিয়েগো হিগাশিনোর ‘স্যালভেশান অফ আ সেইন্ট’ এমনই এক জটিল মনস্