3 Body Problem

 


আমাদের পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। অর্থাৎ, গ্রহটির একটাই নক্ষত্র। একটাই কক্ষপথ। দিন-মাস-বছর সবকিছুই নিখুঁত হিসাবের মধ্যে।

কিন্তু যদি তার তিনটে সূর্য থাকত?

অর্থাৎ, গ্রহ এক। তার নক্ষত্র সংখ্যা তিন। এতএব তার প্রদক্ষিণ পথ নির্দিষ্ট নয়। এবং শুধু তাই নয়, কক্ষপথের সাথে সাথে তার দিন-মাস-বছর এমনকি আবহাওয়া --- ক্রমাগত পরিবর্তনশীল।

এমতাবস্থায়, সেই গ্রহের অধিবাসীদের অবস্থা কি হবে?

তারা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে।

মজার কথা, তারা এর মধ্যেও লড়াই করে বেঁচে আছে। প্রতিটা সভ্যতা কিছু দিন অন্তর অন্তর বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অবশিষ্টাংশ থেকে আবার নতুন করে নতুন সভ্যতার জন্ম হচ্ছে। এইভাবে উন্নততর সভ্যতাটি টিকে আছে। শুধু তাই নয়, বেঁচে থাকার আকুল তাড়নায় তাদের উন্নতি আকাশছোঁয়া। মানব সভ্যতার থেকে তারা অনেকটাই এগিয়ে।

একটি মানুষ একদিন যোগাযোগ করে এদের সাথে - রেডিও সিগন্যাল। সভ্যতাটির হাতে জ্যাকপট লেগে যায়। তারা দেখে, কোনভাবে যদি পৃথিবীতে চলে আসা যায়, তাহলে, তাদের পক্ষে সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব। তারা একশোটি মহাকাশযানে তাদের যাত্রা শুরু করে।

তাদের আসতে সময় লাগবে চারশো বছর।

কিন্তু এই চারশো বছরে মানুষ কতটা উন্নতি করবে? কি হবে যদি তারা এর মধ্যেই তাদের থেকেও বেশি উন্নত হয়ে গিয়ে তাদের ধ্বংস করে দেয়? তারা হিসেব করে। দেখা যায়, তাদের আশঙ্কাই সত্য। মানব সভ্যতার উন্নতির রূপরেখা তাদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে। যদিও এই মুহূর্তে তারা মানব সভ্যতা থেকে অনেক অনেক এগিয়ে আছে।

এতএব, উপায় একটাই। তাদের বিজ্ঞানীদের হত্যা করো, কিম্বা এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করো, যাতে করে, বিজ্ঞানীরা, তাদের কাজ বন্ধ করে দেয়। সমাজের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তাদের উন্নতির পথ রোধ করার এটাই মোক্ষম উপায়।

মানুষের কাছে এই খবর আসে। এবং দেখে, তার হাতে আছে আর মাত্র চারশো বছর।

কিছু মানুষ তাদের ভগবান ভাবতে শুরু করে। কিছু মানুষ সাক্ষাৎ শয়তান ভাবতে শুরু করে। কিছু মানুষ তাদের সহায় হয়। তাদের একটা গ্রুপ তৈরী হয়। তারা তাদের সাথে যোগাযোগ রাখে। নিয়মিত। সবার আড়াল থেকে। তারা বিশ্বাস করে মানুষের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে তাদের প্রয়োজন।

কিছু মানুষ চেষ্টা করতে শুরু করে তাদের কিভাবে আটকানো যায়। তারা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। তাদের একটাই লক্ষ্য, এদের আটকানো। আর, যেসব মানুষেরা তাদের ‘মসীহা’ ভাবছে তাদের আটকানো এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা যে, ঘটনা আদৌ তা নয়।

‘থ্রি বডি প্রবলেম’ সিরিজটার মূল বিষয়বস্তু এইটাই। এবং গল্পের সূত্রপাত এই জায়গা থেকেই।

একটা সিরিজ, তার ব্যাপ্তি অনেক অনেক বড়ো হবে, এটাই স্বাভাবিক। লেখাটি Liu Cixin–এর একটি বিখ্যাত ট্রিলজি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চীনা বিজ্ঞানী প্রথম এই ভীনগ্রহীদের সাথে যোগাযোগ করে। অতঃপর ঘটনা আমেরিকার দিকে মোড় নেয়।

প্রথম সিজনে গল্পটার প্লট এবং জটিলতাকে সাজানো হয়েছে। সিরিজটি বানাচ্ছেন গেম অফ থ্রোনসের David Benioff and D.B. Weiss, সিরিজের শুরুটা আহামরি না লাগলেও, দেখা যাক, শেষ কোনদিকে গড়ায়।

এখন পরবর্তী সিজনের অপেক্ষা, নেটফ্লিক্সে।

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে