Posts

Showing posts from February, 2023

জাহান

Image
মাত্র সাতচল্লিশ মিনিট, একটা সাইকোথ্রিলার। বাংলাদেশ ভাবতে পারছে। তারা বানাতে পারছে নান্দনিকভাবে। একজন অসুস্থ মানুষ দেখছে সে তার মা-কে খুন করেছে, তার স্বামীকে খুন করেছে, তার বাড়ীর কাজের লোককে খুন করেছে। এবং অবশেষে দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখে সব ঠিকই আছে। মায়ের মৃত্যু যে প্রভাব ফেলে তার মনে, সে সেই মৃত্যুপ্রভাবকে কাটিয়ে উঠতে পারে না। তার স্বামীর অতিরিক্ত সস্নেহ ভালোবাসাও পারে না। অবশেষে সে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে... আর তার কেবলই মনে হয় সে একটা খুন করবে। এই খুনের বিভীষিকাতেই অবশেষে একটা খুন হয়। এবং এখানেই সিনেমার শেষ, এবং যাবতীয় মনস্ত্বাত্বিক দ্বন্দ্বের অন্তরকম প্যাঁচ। চমকে উঠতে হয়। অভিনয় নিয়ে কিছু বলার নেই। চমৎকার অভিনয় করেছেন নাজিয়া হক ওর্ষা। বাকিরাও যথাযথ। আমার বাংলাদেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সহজ ড্রয়িংরুমের স্বাভাবিক অভিনয় বেশ ভাল লাগে। দেখতে দেখতে কাহিনী কখন যেন বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। অতি মেলোড্রামা থেকে বাঁচিয়ে এমন চমৎকার অভিনয় দেখার জন্য মন মুখিয়ে থাকে। আর, সেই সাথে, কনটেন্ট অসাধারণ। এমন গল্প লেখা হচ্ছে, ভাবতেই ভালো লাগছে। আর প্রশংসনীয় পরিচালনা। ক্যামেরা এমনভাবে রাখা, যাতে ক

একটি মা-মেয়ের কথোপকথন

Image
  মা... ওম্মা... কি? [গলাটা কি রাগী রাগী ঠেকছে?] শোনো না গো... এই ঝামেলা করিস না, দেখছিস একটা কাজ করছি... একটা কথা ছিল... [আমার ন্যাকামীটা কি ঠিকঠাক হচ্ছে? মানে আদুরে আদুরে হচ্ছে কি?] বল... বলব? তুমি শুনবে তো? তাড়াতাড়ি বলে বিদেয় হ, না হলে খুন্তির বাড়ী দেব [এই রে!] শোন্নোই না... [এই পর্যায়ে মাতাদেবী রোষাকষিত নেত্রে তাকালেন] বলছিলাম কি, ইয়ে... পাঁচশোটা টাকা দেবে? কেন? টাকা নিয়ে কি করবি? ভাইকে দেব? কেন? তার আবার কি কাজে লাগবে? রিচার্জ করবে... [এই পর্যায়ে মাতাদেবী হাতের কাজ অসমাপ্ত রেখে সরাসরি আমার দিকে ঘুরে গেল।] ঝেড়ে কাশো তো বাপু, বই কেনা বাদে আর কি কাজে খরচ করবে? উমমমমমমম... বললাম তো ভাইকে দেব। [আদুরে ন্যাকামী --- ঠিকঠাক না উতরালে কেস জন্ডিস হয়ে যাবে] তা তিনি রিচার্জটা কিসে করবেন? গুগল পে তে এই ফাজলামী হচ্ছে? তুই আমার সাথে ফাজলামী করছিস? সত্যি কথাই তো বললাম [কেস কোনদিকে গড়াচ্ছে রে বাবা!] আমার সাথে একদম রাউন্ড এন্ড রাউন্ড খেলবি না কিন্তু বলে দিচ্ছি। গুগল পে আমি বুঝি না ভেবেছ? হ্যাঁ? অ্যামাজনে আমি দামড়াটাকে দিয়ে জিনিস অর্ডার করাই, আমি জানি না গুগল

সানন্দা ১৫ই ফেব্রুয়ারী ২০২৩

Image
  বয়স্ক লোকেদের বলতে শুনি, “আমাদের কি সময় ছিল! কী সব লেখক ছিল, কি সব বই ছিল, আর কি সব পত্রিকা ছিল, এখন আর কিস্যু নেই...” মনে হত ভুল কথা বলতেন, তারা বুড়িয়ে গেছেন, নতুন কোন কিছুর সঙ্গেই খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা নেই। এতএব, বদনাম করছেন। কিন্তু, এখন মনে হয়, না, কথাটা ফেলে দেওয়ার মত নয়। আমি যে বয়সে আছি, সে বয়সেই মাঝে মাঝেই মনে হয় এই কথাটা, অন্তত, বাংলা পত্রিকার দিকে তাকালে। এই যেমন ধরুন, সানন্দার কথা। প্রায় এক বছর পর আবার পড়লাম। শুরুতেই সানন্দার সম্পাদিকা বললেন, একুশে ফেব্রুয়ারী কি তারা ভুলতে পারেন? না। পারেন না। সেই কারণেই এবারের নিবেদন --- বাঙালীর বুকে বাংলাদেশ। তা কি আছে এই সংখ্যায়? ইমদাদুল হক মিলনের লেখা থেকে বোঝা যায়, তিনি এপার বাংলার মহিলাদের গন্ডমূর্খ ঠাউরেছেন। তিনি যা লিখলেন, এসব গুগ্‌ল করেই পড়া যায় তো দূর অস্ত, আমাদের মতো অজ পাড়া-গাঁ মেয়েরাও ইতিহাসের বই থেকে বা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স থেকে যা জানে তা এর থেকে বেশি জানে। দেবলীনা অধিকারী কোন ক্লাসে পড়েন? তার লেখা পড়ে মনে হল অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মেয়েদের অবদান’ নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখতে দিয়েছিল দশ নম্বরের, সেটাক

কৃত্তিবাস ফেব্রুয়ারী সংখ্যা ২০২৩

Image
  প্রথমেই বলা যাক, আমি ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকাকে রীতিমতো সমীহ করি । মাঝে অনেকবার স্থির করেছিলাম যে, অনেক হয়েছে, আর নেবো না, কিন্তু, এক অমোঘ আকর্ষণে বারবার পত্রিকাটা কিনি। কিছু না কিছু থাকেই এই পত্রিকাতে। অন্য একটা বড়ো কারণ --- কৃত্তিবাসের বিশেষ মেগা সংখ্যা। এবারের ফেব্রুয়ারীতে একটাই সংখ্যা বের হল --- সাহিত্য সংখ্যাঃ বিষয় বাংলা ছোটগল্প। অনেকদিন পর এবারের সংখ্যা মেগা সংখ্যা। এবং এই মেগা সংখ্যার জন্যে একগুচ্ছ প্রাবন্ধিক লিখেছেন একগুচ্ছ প্রবন্ধ। এই একগুচ্ছ মানে সাত-আটটা নয়, একেবারে ৩৪টা! এবং তাকেও সাজানো হয়েছে সুনিপুণ দক্ষতায়--- ১। প্রথম আটটা প্রবন্ধ রবীন্দ্র যুগ হয়ে পাঁচ-ছয়-সাত-আট-নয়ের দশক হয়ে থেমেছে নতুন শতকে। কৃত্তিবাসের মতে , রবীন্দ্রনাথ হলেন প্রকৃত বাংলা ছোটগল্পের জনক এবং সার্থক রূপকার । মূলত তার সময় থেকেই শুরু হচ্ছে ছোটগল্পের স্বর্ণযুগ। ২। বাংলাদেশের লেখকদের লেখা ছোটগল্প নিয়ে একটা প্রবন্ধ। ৩। এক-এক করে কয়েকজন রবীন্দ্রপরবর্তী মাস্টার ছোটগল্পকারদের নিয়ে একগুচ্ছ প্রবন্ধ, যেমনঃ জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, কমলকুমার মজুমদার, সমরেশ বসু, মতি নন্দী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় প্

অনুবাদ পত্রিকা জা-ফে ২০২৩

Image
  কিছু কিছু পত্রিকার বিষয়বস্তু আমায় খুব কৌতুহলী করে তোলে। যতই সেই বিষয়ে আমার অজ্ঞতা থাক, যতই অনাগ্রহ হোক, কৌতুহলী করে তোলেই। এই যেমন এবারের অনুবাদ পত্রিকার কথাই ধরুন না কেন? অনেকদিন ধরেই আমার কাছে পড়ে ছিল, অনেককটা বইয়ের আড়ালে। আজ আবার চোখে পড়ল। চোখে পড়ল সুন্দর প্রচ্ছদটা। চোখে পড়ল বিষয়বস্তুটা। ‘লোকসংস্কৃতি’ ব্যাপারটা মোটামুটি আমরা সবাই বুঝি। আমাদের আশেপাশে প্রায় প্রত্যেকটা মফস্বলেই এক-আধটা সেমি কিম্বা মিনি লোকসংস্কৃতি ভবন আছে। তাতে কি হয় আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমরা এটা জানি কি, এমন এমন অদ্ভুত সংস্কৃতি আছে, যা কালের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে? এই যেমন বজ্জিকা ভাষা, বিহারের এই আদিম ভাষার মান্যতাই তেমন করে নেই। অথচ তার লোকগীতি আছে, লোককথা আছে। এমনকি ‘লোকউক্তি’ আছে – “কানে কেমন ত আঁখমে গেল ঘুঁটি”, ধোঁয়ার ছলনা করে কাঁদি; কিম্বা ধরুন, ‘নিয়োলি’ নামক আরণ্যক বিষাদসঙ্গীত, কিম্বা ‘চাপোলি’ লোকসঙ্গীত। কুমায়ুন অঞ্চলের এক লোকসংস্কৃতি। যদি দেশের বাইরে যাওয়া যায়? ‘চুনজী’ পরব। চীনের সবচেয়ে ঐতিহ্যপূর্ণ এবং শ্রেষ্ঠ ঊৎসব, যার শুরুই হয় প্রেতাত্মা নিধন যজ্ঞ দিয়ে! কিম্বা মোঙ্গল, যেখান থেকে এসেছেন মুঘলরা, তাদ

দ্য ইনভিসিবল ম্যান

Image
  ‘ইনভিসিবল ম্যান’ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আমার মনে হয়, যারা বই পড়তে ভালবাসে, সিনেমা দেখতে ভালোবাসে, অডিও স্টোরির পোকা --- তাদের অধিকাংশই কোন না কোনভাবে উপন্যাসটা পড়েছে, কিম্বা নাম শুনেছে, নিদেনপক্ষে গল্পটার বিষয়বস্তু জানে। আমি ছোটবেলায় স্কুলের লাইব্রেরী থেকে নিয়ে বইটা পড়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিছুটা পড়ে ছেড়ে দিয়েছিলাম, ভালো লাগে নি। এবারও একই দশা হয়েছিল। তবে, ঐ, যাকে বলে বাঙালের গোঁ, বারে বারে দম নিয়ে ডুব দিলাম, এবং, অবশেষে উপন্যাসটা শেষ করলাম। ধরে নিই, আসাদুজ্জামানের অনুবাদ অনুবাদ পূর্ণাঙ্গ। তাহলে, বলতে হবে, অন্তত প্রথম এগারোটা পর্বে ওয়েলস খাবি খেয়েছেন এই গ্রিফিন লোকটাকে নায়ক বানাবেন, না খলনায়ক বানাবেন তার সিদ্ধান্তে আসা নিয়ে। বারো পর্বে এসে যেই দেখলেন, একে অ্যান্টি হিরো বানানোরও দরকার নেই, একেবারে ভিলেনের ভিলেন, তস্য ভিলেন বানিয়ে ফেলা যেতেই পারে, মানে উপন্যাসটা সেটাই ডিমান্ড করছে, তখন নিশ্চিন্তে শুরু করলেন যাত্রা, এরপর আমার গল্পটা শেষ করতে লাগল --- মাত্র একটি রাত। দুই খেপে শেষ করলাম --- এক খেপ একবার সন্ধ্যাবেলায়, শেষ খেপ মধ্যরাত্রিবেলায়। ওয়েলসের একটা বই আছে, মারাত্মক মোটা বই

আমার ভ্যাবাগঙ্গারাম, আমার হতভাগা

Image
  “অ্যাই, ফুচকা খাবি?”, তার প্রশ্নটা ছিল খুব নিরীহ। যে ছেলেটি আমায় এই প্রশ্নটা করে ভ্যাবাগঙ্গারামের মতন তাকিয়ে ছিল, তখন কি জানতাম, সে আমায় প্রপোজ করছে? জানলে কি বলতাম? জানি না... যান! তবে তারিখটা খুব মনে আছে --- ১৪ই ফেব্রুয়ারী। ফুচকা মেয়েদের বড়ো দুর্বল করে দেয়। একরাশ ঘনচুলের তলাকার কাঁধটার মতোন, হালকা উষ্ণ বাতাস পেলেই শিরশির করতে থাকে সারা শরীরটা, তেমনই, জিভটা, না খেয়েও, স্রেফ মনে মনে, তেঁতুল জল আর কাঁচালঙ্কার স্বাদ পায়। আমি অমোঘ দুর্বলতায় বলে ফেলেছিলাম, “হ্যাঁ---” তাকে আমি ততদিনে চিনে গেছি। অকম্মার ঢেকি। মানে ‘কোন কম্মের নয়’ বলতে যা বোঝায়, একদম তাই । তার যত আনন্দ খেলাতে, লেখাপড়ায় অষ্টরম্ভা, স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়ে স্যারের কাছে এবং বাড়ীতে মার খেয়েছে একাধিকবার। আমাদের মধ্যে একমাত্র তারই কম্পিউটার সম্পত্তি ছিল, ফলে সে আর তার বন্ধুরা হুল্লোড় করত প্রায়ই । আমরা অনেকদিন সিনেমা দেখেছি, একসাথে, তবে, বিশেষ বিশেষ সিনেমার ক্ষেত্রে মহিলা বর্জনীয়। আমরা সবাই মিলে তার বাড়ীতে কম্পিউটার দেখতে গিয়ে একরাশ বিস্ময় নিয়ে বাড়ী ফিরে এসেছি। জেনেছি, সেই কম্পিউটার থেকে যা খুশি করা যায়। এই ভ্যাবাগঙ্

এই জি ওয়েলস কল্পগল্প সমগ্র

Image
  ‘সায়েন্টিফিক রোমান্স’ আসলেই জিনিসটা কি, আমি শিখেছিলাম জুলে ভের্নের কাছ থেকে। তার ‘এরাউন্ড দ্য ইয়ার্ল্ড ইন এইটটি ডেজ’ কিম্বা ‘মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড’ --- সবকিছুতেই এমন অদ্ভুত এক মানবিকতার ছাপ ছিল, যার অনুভব আমি এখনও চোখ বন্ধ করলেই অনুভব করতে পারি।       অনেকদিন পর, এইচ জি ওয়েলসের মধ্যে আবার সেই অনুভূতিটা পেলাম। এমনকি, ওনার লেখা ছোটগল্পগুলো পড়তে পড়তে এও বুঝতে পারছিলাম, ওয়েলস, কীভাবে বাংলা সাহিত্য জগতে, বিশেষত কল্পবিজ্ঞান জগতে প্রভাব ফেলেছেন গভীরভাবে, অবচেতনে। কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যাক --- ১। ওয়েলসের লেখা ‘অদ্ভুত অর্কিড’ বা ‘ The Flowering of the Strange Orchid’ পড়তে পড়তে স্পষ্ট বোঝা যায়, সত্যজিৎ রায় তার ‘সেপ্টোপাসের খিদে’ লেখার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পেয়েছিলেন। এমনকি স্পেটোপাস আর অর্কিডের বর্ণনার অনেক জায়গায় মিল আছে।       মজা লাগবে ‘ইপাইওরনিস আইল্যান্ড রহস্য’ বা ‘ Epyernis Island ’ পড়লে এবং সেইসাথে তার অলঙ্করণ দেখলে। ‘বৃহচ্চঞ্চু’ নামক ছোটগল্পটার সাথে এর অনেকটাই মিল আছে, শুধু তাই নয়, বেঞ্জামিন এডুইন মিন্‌সের চিত্রিত ইপাইওরনিস ভ্যাসটাস আর সত্যজিৎ চিত্রিত বৃহচ্চঞ্চু-র মধ্যে প্রায় কোন পা

দেশ-র বইসংখ্যা এবং কয়েকটি প্রশ্ন

Image
আমাদের মতোন মানুষ, যারা বইমেলা যেতে পারে না ফি-বছর, তারা, এই বইসংখ্যার জন্যে হা-পিত্যেশ করে বসে থাকি। এখন না হয় ফেসবুকের রমরমা, কিন্তু বছর কয়েক আগেও এই বইসংখ্যার প্রয়োজনীয়তা আমার কাছে ছিল মারাত্মক রকমের। অনেক নামিদামী প্রকাশক তাদের নতুন প্রকাশিত বইয়ের খবর ঘটা করে দিয়ে থাকেন। আমার কাজ হল, সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এই বিজ্ঞাপনগুলোকে পড়া। এবং সেখান থেকে বইয়ের লিস্ট তৈরী করা। এবং অবশেষে, হাতে দু-চারটি পয়সা জুটলে জেমস বন্ডের মাথার পোকা এবং ঘিলু যথাসম্ভব নরমে-গরমে বাক্যবাণে নাড়িয়ে ঘাটিয়ে বইগুলোকে সংগ্রহ করা। এবারের বইসংখ্যা জোগাড় করলাম। যথারীতি অনেক অনেক নতুন বইয়ের সন্ধান মিলল। সেই সাথে মিলল বেশ কিছু প্রবন্ধ। ফোর্ড ম্যাডক্স ফোর্ড, জোসেফ হেলার, ইভ বনফোয়া, ভিশওয়াভা শিম্বর্সকা, মিরোলসাভ হোলুব, ইতালো ক্যালভিনো, নাদিন গর্ডিমার --- আরও কত নাম, যাদের কাউকে শুনিনি, পড়িনি, সবাই আপন আপন জন্মের সার্ধশতবর্ষ কিম্বা শতবর্ষ পার করেছেন। কিন্তু এদের মধ্যে থেকে আমার সবচেয়ে ভালো লাগল পুনর্জিৎ রায়চৌধুরীর অ্যাডাম স্মিথের ওপর লেখা ‘আধুনিক অর্থবিজ্ঞানের পুরোধা’ নামক প্রবন্ধটি। অ্যাডাম স্মিথের নাম শুনেছি। এর ব

THE WAR OF THE WORLDS

Image
সাধারণত কোন গল্প বা উপন্যাস পড়লে তার সিনেমারূপ দেখতে ইচ্ছে করে না। মনে হয়, যে ছাপ একটা সাহিত্য আমার মনে ফেলছে, যে কল্পনার বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র সে আমায় দিচ্ছে, সিনেমা তার অনেকটাই কেড়ে নিচ্ছে। হয়তো এই একই কারণে সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজি আমার ভালো লাগে নি। অথচ কাঞ্চনজঙ্ঘা বা ওনার শেষ তিনটে সিনেমা --- গণশত্রু, শাখা প্রশাখা এবং আগন্তুক, আমি কতবার দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই। এবারকার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকমের। লেখক এইচ জি ওয়েলস, পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ, আর মুখ্য অভিনেতা টম ক্রুজ। কোথাও কোন ছন্দপতন ঘটে নি। স্টিভেন স্পিলবার্গ হয়তো বুদ্ধি করেই সিনেমাটাকে গল্পের অনুকরণে বানান নি। অনুসরণে বানিয়েছেন। আর কি বানিয়েছেন! আঠারোশো সালের গল্পকে এনে ফেলেছেন ঊনবিংশ শতকে। ইংল্যান্ডের জায়গায় আমেরিকা। পাদরী চরিত্রটার জায়গায় একজন লুক্কায়িত বাড়ির মালিক, যাকে প্রোটাগনিস্ট চরিত্র, টম ক্রুজ, খুন করতে বাধ্য হয়। সব মিলিয়ে সিনেমাটা ওয়েলসের না হয়ে হয়ে উঠেছে স্পিলবার্গের সিনেমা। একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। হয়ত এটাই সঠিক পদক্ষেপ। সাহিত্যের আঙ্গিনা থেকে বেরিয়ে এসে, আপাদমস্তক খোলনলচে বদলে সিনেমা যদি স্বমহিমায় দাঁড়াতে না পারে তাহ

এইচ জি ওয়েলস ও তিনটি উপন্যাস

Image
         George Mann এর লেখা The Mammoth Encyclopedia of Science Fiction বইতে দেখছি, ‘সায়েন্টিফিক রোমান্স’ নামে এক জঁরের উৎপত্তি হচ্ছে যুগপৎ জুলে ভের্ণ এবং এইচ জি ওয়েলসের হাত ধরে। জুলে ভের্নের ‘জার্নি টু দ্য সেন্টার অফ দ্য আর্থ’ এবং এইচ জি ওয়েলসের ‘টাইম মেশিন’। প্রসঙ্গত, জর্জ মানের বইটার জন্যে সন্তু বাগ দাদাকে অনেক কৃতজ্ঞতা। এই বইটার সন্ধান দিয়ে উনি আমাকে সায়েন্স ফিকশনের ইভোলিশানের ছবিটা স্পষ্ট করলেন। হাতের কাছে ছিল দ্বিতীয় উপন্যাসটা। অনুবাদ করেছেন অদ্রীশ বর্ধন। কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়েলসের ‘কল্পগল্প সমগ্র’ বইটা হাতে এসেছিল। বইটা খুললাম। এবং গোগ্রাসে পড়ে ফেললাম, এক রাত্রে মধ্যে! আমাকে সারাটা সময় এক মুহূর্তের জন্যে থামতে দেন নি ওয়েলস এবং অদ্রীশ বর্ধন। পড়ার পরে ভাবতে বসেছিলাম, এই তাহলে সায়েন্সের রোমান্টিসিজম! যে কারণে ওয়েলসের এত জনপ্রিয়তা! টাইম মেশিনের গল্প সবাই জানে। টাইম মেশিন-কে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে বহু সিনেমা হয়েছে। ভবিষ্যতে বহু সিনেমা হবেও। অতএব নতুন করে বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু গল্পের বুনন, প্রতি মুহূর্তে টেনশন তৈরী করা, সত্যিই জুলে ভের্নের পরে আর কেউ পেরেছে কি? আমি