THE WAR OF THE WORLDS



সাধারণত কোন গল্প বা উপন্যাস পড়লে তার সিনেমারূপ দেখতে ইচ্ছে করে না। মনে হয়, যে ছাপ একটা সাহিত্য আমার মনে ফেলছে, যে কল্পনার বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র সে আমায় দিচ্ছে, সিনেমা তার অনেকটাই কেড়ে নিচ্ছে। হয়তো এই একই কারণে সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজি আমার ভালো লাগে নি। অথচ কাঞ্চনজঙ্ঘা বা ওনার শেষ তিনটে সিনেমা --- গণশত্রু, শাখা প্রশাখা এবং আগন্তুক, আমি কতবার দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই।

এবারকার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকমের। লেখক এইচ জি ওয়েলস, পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ, আর মুখ্য অভিনেতা টম ক্রুজ।

কোথাও কোন ছন্দপতন ঘটে নি। স্টিভেন স্পিলবার্গ হয়তো বুদ্ধি করেই সিনেমাটাকে গল্পের অনুকরণে বানান নি। অনুসরণে বানিয়েছেন। আর কি বানিয়েছেন! আঠারোশো সালের গল্পকে এনে ফেলেছেন ঊনবিংশ শতকে। ইংল্যান্ডের জায়গায় আমেরিকা। পাদরী চরিত্রটার জায়গায় একজন লুক্কায়িত বাড়ির মালিক, যাকে প্রোটাগনিস্ট চরিত্র, টম ক্রুজ, খুন করতে বাধ্য হয়।

সব মিলিয়ে সিনেমাটা ওয়েলসের না হয়ে হয়ে উঠেছে স্পিলবার্গের সিনেমা। একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। হয়ত এটাই সঠিক পদক্ষেপ। সাহিত্যের আঙ্গিনা থেকে বেরিয়ে এসে, আপাদমস্তক খোলনলচে বদলে সিনেমা যদি স্বমহিমায় দাঁড়াতে না পারে তাহলে কীসের সে স্বাধীন আর্ট? এক্ষেত্রে সিনেমাটা দেখার সময়ে, শেষে কি হবে জানা সত্ত্বেও, একবারও মনে হয় নি, অতীব কিছু দেখছি। ওয়েলসের লেখায় যে টানটান উত্তেজনার ছাপ ছিল, বাস্তবতার ছোঁয়া ছিল, এই সিনেমাতেও তাই আছে।

টম ক্রুজ অসাধারণ। তবে মন ছুঁয়ে যায় ডাকোটা ফ্যানিং-এর অভিনয়। টম ক্রুজের পাশাপাশি তার অভিনয়ও মনে রাখার মতো। আর এর সাথে অবশ্যই যোগ করতে হবে আবহ সঙ্গীত। অসাধারণ লাগল টেনশনের স্তরকে আরেক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা দেখে, যেটা আবহ সঙ্গীত করতে পেরেছে। 

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে