Posts

Showing posts from January, 2023

নারী

Image
  “নারী আজন্ম এক রহস্যময়ী চরিত্র! কখনো তেজী , রুক্ষ। আবার কখনো শান্ত , শীতল। কখনো সাহসী ভয়-ডড়হীন যোদ্ধা। আবার কখনো ভীষণ আবেগী। নারী ভালোবাসা পেলে শান্ত নদী হয়ে যায়। ভালোবেসে শাসন করলে অবুঝ বাচ্চাটি হয়ে যায়। অবহেলা করলে হয়ে যায় রোদ্রতাপ কঠিন , অহংকারী। নারী সব পারে ; নারী আগলে রাখে , অবহেলায় রাখে। নারী বরাবরই রহস্যময় চরিত্র। নারীকে আপনি যা দিবেন তা সে দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দিবে , সেটা হোক ভালোবাসা কিংবা অবহেলা !” লেখাটা মেহেদী হাসান শুভ্র -র। চিনি না তাকে। তবে কথাকটা ভাবালো। নারীকে রহস্যময়ীও বলছেন, আবার বলছেন, “ নারীকে আপনি যা দিবেন তা সে দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দিবে , সেটা হোক ভালোবাসা কিংবা অবহেলা!” তাহলে আর রহস্য কোথায়? সমস্ত সমাধানই কি হয়ে গেল না? বোধহয় কবিদের একটাই সমস্যা --- বাস্তবের নারীকে না মেনে নিতে পারার ব্যর্থতা । বাস্তবের নারী এমন কিছু জটিলও নয় যে, তাকে রহস্যময়ী হতে হবে। আপন মনের মাধুরীটিকে সরালে অবশেষে একটা মানুষই সামনে এসে দাঁড়ায়। মানুষের পুরুষ-নারী ভেদ নেই। ডাক্তারের কাছে সবাই রোগী। পার্থক্য নেই। জটিলতা আছে, সে কার না আছে? সাইকায়াট্রিস্টের কাছে নারী-পুরুষ দুজনেই যায় মানসিক

কেস অফ চার্লস ডেক্সটার ওয়ার্ড

Image
  “ এ সংসারে অনেক রহস্যের সমাধান না করাই মঙ্গল। অনেক জিনিস জানতে নেই, জানার জন্যে অনুসন্ধান করতে নেই, যে ভাবে চলছে সেই ভাবেই চলতে দেওয়া ভাল। ”       এই প্রথম, লাভক্র্যাফটের অতীন্দ্রিয় চরম নেতিবাচক বিভীষিকা থেকে সরে গিয়ে একটু অন্যরকম লেখা পেলাম। না না, লেখার বিষয়বস্তু সেই একই --- সেই মন্ত্রগুপ্তি, সেই ভয়ার্ত আবহ, সেই বিপজ্জনক তন্ত্রাচার, সেই মৃত্যুর বিভীষিকা, সেই অন্য ভুবনের ভয়াবহতার হাতছানি, সেই কালচক্রের প্রকৃতিকে টেক্কা মারার চেষ্টা।       কিন্তু এখানে অনুপস্থিত বিষন্নতা, অনুপস্থিত অবষাদ। লাভক্র্যাফট এখানে অবশেষে ভয়কে টেক্কা দিয়ে নির্ভয়ের অগ্রগমনেই শেষ করেছেন। এখানে ভয়কে নিয়ে নাড়াঘাটা করতে গিয়ে খুব বেশি তমসার গভীরে যেতে পারেন নি, বা, বলা ভালো, যান নি। হয়তো উপন্যাস বলেই। ওনার অন্য কোন উপন্যাস পড়া হয় নি বলেই জোর দিয়ে বলতে পারছি না। তবে এ উপন্যাস ভাল লাগল।       যদিও, আমি এখনও আমার প্রথম দিনের সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও হঠছি না। বাঙালী লাভক্র্যাফটকে নেয় নি, তার কারণ ভয়াবহ বলে নয়, তার কারণ নেগেটিভ এপ্রোচ। প্রায় সমস্ত ছোট গল্পগুলো ঘিরে ঘিরে ভয়ের নেতিবাচক যে ভঙ্গিমা তিনি তৈরী করেছেন, বাঙা

The Elephant Whispers

Image
‘মুদুমালাই টাইগার রিসার্ভ ফরেস্ট’ তামিলনাড়ুর এমন একটা জঙ্গল, যেখানে হাতি থাকে প্রচুর পরিমাণে। এই জঙ্গলেরই একটা অংশ ‘থেপ্পাকাডু এলিফেন্ট ক্যাম্প’। ১৪০ বছর আগে তৈরি করা এই ক্যাম্প এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন এলিফেন্ট ক্যাম্প। সর্বাধিক পরিমাণ এশীয় হাতির বাস এখানেই। এই জঙ্গলে অনেক সময় অনেক হাতির বাচ্চা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কিম্বা অনেক হাতি রোগগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে বাঁচানোর এবং ঠিকঠাক দেখাশোনা করার জন্যে তৈরী করা হয়েছে এই ক্যম্পটি। এই ক্যাম্পে আছেন এক দম্পতি --- বোম্মান এবং বেল্লি। আর আছে রঘু এবং আম্মু ---- দুই ছানা হাতি। এই দুই ছানা, বিশেষ করে রঘুকে নিয়েই এই ডকুমেন্টারি। একটা হাতির বাচ্চাকে যে পরম মমতায় লালন পালন করতে হয়, এবং সেও যেভাবে মানুষের সাথে সখ্যতা করতে পারে তার অনবদ্য সংবেদনশীল ডকুমেন্টারি, মাত্র চল্লিশ মিনিটে, মায়াময়ভাবে তুলে ধরতে পারার ক্ষমতা রেখেছেন পরিচালক কার্তিকি গঞ্জালভেস। এই ডকুমেন্টারি এবারের অস্কারে নমিনেশানে গেছে। শর্ট ডকুমেন্টারি ফিল্ম বিভাগে। যোগ্য ডকুমেন্টারি হিসাবেই গেছে...

আমি তখন দশম শ্রেণী, আমি তখন...

Image
ঘটনাটা আবার মনে পড়ে গেল । যখন ক্লাস টেনে পড়ি তখনকার কথা। অন্য একটা স্কুলে আমার হতভাগা তখন পড়ছে। আমাদের দুজনকে অপেক্ষা করতে হবে আরোও একটা বছর। চার আর দুই --- ছয় চোখের মিলন ভবিষ্যতের অন্তরালে।   তো যা বলছিলাম। সরস্বতী পূজোর দিন। সেবারে অশৌচ ছিল বলে আমাদের বাড়ীতে পূজো হল না। কিন্তু তাতে কি? স্কুলে তো যাব। সেখান থেকে বন্ধুর বাড়ী। সেখানে আড্ডা দিয়ে বিকেলে বাড়ী ফিরব। মা যত্ন করে শাড়ী পরিয়ে দিল। এখনো মনে আছে আমার প্রথম শাড়ী পড়ার দিনটা। তার আগে ছোটবেলায় যেমন বাচ্চারা শাড়ী পড়ে তেমন পড়েছি অনেক। কিন্তু এটা যেন অন্যরকম কিছু। স্কুলে সালোয়ার পড়ে যেতাম। এই প্রথম শাড়ী পড়লাম। লাল শাড়ী । পাড়ে হালকা কমলা নকশার কাজ । সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউস। গলায় সরু চেন। হাতে কাচের চুড়ী। আবার শখ করে একটা আঙটিও পড়েছি। বাবা আমার জন্যে, মানে শুধুমাত্র আমার জন্যে শাড়ীটা কিনে এনেছে। তার মেয়ে প্রথম শাড়ী পড়বে বলে কথা! বাবার চয়েস খুব ভাল, রঙ বোঝে। এই প্রথম আমার একটা ‘ শাড়ী ’ সম্পত্তি হ্ল। এটা আমার। একান্তই আমার। কাউকে এর ভাগ দেব না। কিন্তু তবুও, নিজেকে কেমন লাগছে ঠিক বুঝতে পারলাম না । আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুঁটিয়ে

লাভক্রাফট, বাঙালী ও মৃত্যুচেতনা

Image
  “ কোটি বর্ষে মরণেরও মৃত্যু যদি হয় অনন্তশয়ানে থাকে সে তো মৃত নয় ”   আমার কোথাও মনে হয়, ‘ভয়’ আর ‘মৃত্যুর আশঙ্কা’ পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে আছে। যেদিন মৃত্যুকে আমরা জানতে পারব, সেদিন পুরোপুরি ভয়মুক্ত হব; কিম্বা যেদিন মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থাকে জানতে পারব, ভয় থাকবে না; অথবা যখন মৃত্যুকে অন্তর থেকে গ্রহণ করব, ভয়ের পরিধি থেকে বেরিয়ে আসব। লাভক্র্যাফট ভয়কে জয় করতে চান নি। ভয়কে উপভোগ করতে চেয়েছেন। ফলে তার লেখায় এত বিষন্নতা, এত অবষাদ। এবং ভয়ের রহস্যময় বীভৎসতার দিকটাই দেখার চেষ্টা করেছেন। তার সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারেন নি। একদমই কি পারেন নি? দু-একটা গল্প বাদ দিয়ে। যেমনঃ Tha Man Of Stone ( পাথরের মুর্তি ) । প্রসঙ্গত, এই গল্পটি পড়ে ‘শঙ্কুর সুবর্ণ সুযোগ’ গল্পটার কথা মনে পড়ে যায়। দুটো গল্পের মধ্যে কোথাও কি কোন সংযোগ আছে? জানা যাবে না আর হয়তো কোনোদিন। তো লাভক্র্যাফট এই ভয়কে বীভৎসতার রূপ দিতে গিয়ে কতকগুলো শব্দ এবং সেই শব্দের প্রতিভাস তৈরী করলেন নিজের মতো করে। যেমনঃ থুলু, ইথ, নিয়ারলাটহোটেপ, অজাথথ, নেক্রোনমিক্রন ইত্যাদি। এই শব্দগুলোর সাথে জড়িয়ে রাখলেন ভয়ঙ্কর পৈশাচিক মৃত্যুর ইঙ্গিত। একটু ভাল কর

শ্রেষ্ঠ বারোটি রচনা : এইচ পি লাভক্র্যাফট

Image
এইচ পি লাভক্র্যাফটকে, কল্পবিশ্ব ‘ভয়াল রসের সম্রাট’ অভিধায় ভূষিত করেছে, খুব একটা ভুল বলে নি, যদিও, আমার মতে, তিনি বীভৎস রস সৃষ্টি করেছেন। কেন ভয়াল নয়? কারণ, লাভক্র্যাফটের অপার্থিব চরিত্রগুলো ‘ভীষণ’ বা ‘ভয়ানক নয়’, ‘অত্যন্ত কদর্য’ বা ‘ঘৃণা-উৎপাদক’ । এবং এটাই লাভক্র্যাফটের লক্ষ্য ছিল বলে মনে হয়। জ্ঞানত, কিম্বা অজান্তে। “The oldest and strongest emotion of mankind is fear, and the oldest and strongest kind of fear of the unknown.”, বলছেন লাভক্র্যাফট। লাভক্র্যাফটের জীবন পর্যালোচনা করলে হয়তো দেখা যাবে, শিশুকালের সঙ্গে এর নিবিড় যোগ আছে। খানিকটা আভাস বিশ্বদীপ দে-র লেখায় পাওয়া যায় বটে, কিন্তু তা লাভক্র্যাফটের ব্যাপারে কৌতুহল জাগায়, তাকে আরেকটু গভীরে জানতে গেলে তার জীবন আর মানসিক অবস্থার কথা ঘাটতে হবে আরও। যদি বাংলা অনুবাদ যথার্থ ধরে এগোনো যায়, তাহলে কতকগুলো শব্দ লাভক্র্যাফটের লেখাগুলোতে ফিরে আসে বারবার --- বিষন্নতা, স্বপ্ন, মৃত্যু, অবসাদ, সুররিয়াল, আতঙ্ক, বীভৎস, বিকৃত, ভয়ঙ্কর, রাত্রি, অপার্থিব ইত্যাদি। যদি গল্পগুলোকে ভালো করে স্টাডি করা যায়, তাহলে, এর মধ্যে থেকে বিষন্নতা আর অবষাদ যেন ওতোপ্

তখনও রোদ ওঠেনি

Image
  এমন মিঠেকড়া সকালে... কফির ধোঁয়াওঠা কাপ ছিল , শালের কবোষ্ণতা ছিল , সর্বনেশে কুয়াশা ছিল , নরম হলুদ বসন্ত ছিল , আর একটা হতভাগা পাগল ছিল...

চিত্রবিচিত্র মানুষ

Image
  আমার একটা বদ অভ্যাস আছে। ধাঁই করে যে কোন বই শুরু করতে পারি না। প্রথমে প্রচ্ছদ দেখি। তারপর ব্যাক কভার দেখি। কেমন লাগছে দেখতে বইটাকে উলোট পালোট করে দেখি। তারপর প্রকাশকের কথা, লেখকের কথা, মুখবন্ধ ইত্যাদি হাবজি গাবজি দেখতে থাকি। অনেক সময় তারা আমাকে খালি হাতে যেমন ফেরায় না, তেমনই বইটার প্রতি লেখক থেকে শুরু করে প্রকাশক, এমনকি আর্টিস্টের মমত্ববোধও অনুভব করতে পারি। ‘চিত্রবিচিত্র মানুষ’ বা ‘দ্য ইলাস্ট্রেটেড ম্যান’ বইটার শুরুতেই অনুবাদকের লেখাটাতে চোখ বোলাচ্ছিলাম। একটা লাইনে এসে স্থির হয়ে গেলাম। অনুবাদক সুমিত বর্ধন লিখছেন, “... সিসিফাসের মতো অসম্ভবের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলা মানুষ...”। স্যার, আপনি এই লাইনটা লিখলেন কেন? মানে ‘ সিসিফাস ’ কে মনে হল কেন? আমি নিশ্চিত, আপনি রে ব্র্যাডবেরির একদম অন্তরে সেঁদিয়ে গেছেন। না হলে এই উদাহরণ আসে না।       আমার মনে হয়, ঠিক এই লাইনটার মর্মার্থের ফল্গুধারা এই গল্প সংকলনের পরতে পরতে বয়ে গেছে। যেমন ‘ক্যালাইডোস্কোপ’, যেমন ‘কোনও বিশেষ রাত বা সকাল নয়’। পরের গল্পটার একটা জায়গায় তো সরাসরি প্রশ্ন --- “এ জীবনে কেউ কেন কিছু করে, কেউ কি বলতে পারে?” কিম্বা “বোক

মঙ্গল গ্রহের ডায়েরি

Image
  উপন্যাসের সুবিধা --- একদিনে পঞ্চাশ-পচাত্তর পাতা পড়ে ফেলা যেতে পারে। মাঝারি মাপের উপন্যাস তিনদিনে শেষ করে ফেলা যেতেও পারে। ছোটগল্পে কিন্তু সেটি হওয়ার যো নেই। বিশেষত যে সমস্ত গল্পে গভীরতা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে একটি বা দুটি --- ব্যাস! সারাদিনে নতুন গল্পে হাত দেওয়ার মত মানসিকতা রাখা দুরূহ হয়ে পড়ে। আমার এই উপন্যাস তথা ছোট গল্প সংকলনটা শেষ করতে এক সপ্তাহ লাগল এই কারণেই। 'ফারেনহাইট ৪৫১' উপন্যাসেই আন্দাজ করেছিলাম , রে ব্র‍্যাডবেরীর একটা অন্তর্দৃষ্টি আছে। কবির অন্তর্দৃষ্টি। তার লেখার মধ্যে একটা Vision আছে। তিনি স্রেফ বেডরুম স্টোরি বলছেন না। ফলে অনুবাদ তেমন তেমন হলে বই উলটে রাখতেই হবে। ভাবতে হবে। কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হতে হবে। তারপর আবার বই হাতে নিতে হবে। যশোধরা রায়চৌধুরী আপাদমস্তক কবি। কবি অর্থে , যার অন্তরে এক দৃষ্টি জন্মেছে। কোন লেখক যখন কবি হন , তা যেন ঈশ্বরের মহাপ্রসাদের মতো। কিম্বা সরস্বতীর অপাঙ্গ দৃষ্টিপাতের মতো। যশোধরা রায়চৌধুরী এই অনুবাদের কাজ নিজের চেতনসত্ত্বাকে নিংড়ে দিয়ে করেছেন। জানি না , অনুবাদ করতে করতে কখনও তার চশমা মুছতে হয়েছে কি না। জানি না , অনুবাদ করতে গিয়ে কটা রাত

ফারেনহাইট ৪৫১

Image
আমি নির্বাক। আমি নিস্তব্ধ। এইমাত্র শেষ করলাম রে ব্র্যাডবেরির বিখ্যাত উপন্যাস ‘ফারেনহাইট ৪৫১’। যারা ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস পছন্দ করেন, অথবা যারা সায়েন্স ফিকশান উপন্যাসের পোকা, কিম্বা যারা ব্র্যাডবেরিপ্রেমী তারা এই উপন্যাসের সাথে নিশ্চই সম্যক পরিচিত। আমি মূর্খ মেয়েমানুষ। জীবনের অনেক বসন্ত পার হয়ে এসে আজ শেষ করলাম এমন এক উপন্যাস, যে উপন্যাসের বিষয়বস্তুগত সমস্যায় বর্তমানের তাবত বাঙালীকূল ভুগছে। এমন অন্ধকার সঙ্কটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বাঙালী চলেছে। তাদের প্রয়োজন একজন গাই মন্টাগকে, একজন ক্ল্যারিসা ম্যাকক্লিনকে। মূল গল্প নিয়ে আলোচনার কোন মানে হয় না। যদি অল্প কথায় বোঝাতে হয়, তাহলে গল্পটা এই, একটা শহর তথা রাষ্ট্রে বই পড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যারা বই পড়ে, হয় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, অথবা তারা দেশান্তরী হয়। ফায়ারম্যান , যারা এক সময়ে আগুন নেভানোর কাজ করত, তারা এখন বই জ্বালানোর কাজ করে। এমনই এক ফায়ারম্যান গাই মন্টাগকে কেন্দ্র করে এই কাহিনী এগিয়ে চলে। বই পোড়ানো অর্থটা প্রতীকী, এটা সহজেই বোঝা যায়। আসলেই আমরা পড়তে চাই না। পড়ার অর্থই হল চিন্তার ক্ষেত্রটাকে প্রশস্ত করা। কেন চিন্তা করব? চিন্তা আমাক

দ্য গ্রেট গড প্যান এবং দ্য হোয়াইট পিপল

Image
ভয় পাওয়ানো, আর ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। জুজুবুড়ি টাইপ গল্পে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করানো হল ভয় পাওয়ানো। এখানে চট করে কোন শিশু বা শিশুতুল্য মানুষকে কিছুক্ষণের জন্যে বিশ্বাস করানো যায় এক অসম্ভব অস্তিত্বের সম্পর্কে, টেকে না বেশিদিন; আর অন্যদিকে, এক অপার্থিব অস্তিত্বকে বিশ্বাস করানো, একেবারে মূলে গিয়ে বিশ্বাস ধরিয়ে দেওয়া --- ভয় পাওয়ানো। এটার প্রভাব অমোঘ। অনেক ক্ষেত্রে ‘কাল্ট’ ব্যাপারটার সৃষ্টি হয়। ‘বাণ মারা’ এমনই এক বাংলা ভয় দেখানো ছেলেমানুষি। বিশ্বাস করতে মন চায় না, অথচ এড়িয়ে যেতে গেলেও বুক ধুকপুক করে। যে কারনে তান্ত্রিকদের এত রমরমা। আর্থার ম্যাকেন ভয় ধরাতে পারেন। কারণ, তার লেখার কনটেন্টের মধ্যে প্রথমেই যে অপার্থিব জগতের সন্ধান দেন, তা আমাদের মরজগতের সমান্তরালে অবস্থান করে। এবং পাঠকদের এই দুই জগতের ঠিক মাঝামাঝি ফেলে রাখেন। তার দুটি বিখ্যাত নভেলা ‘দ্য গ্রেট গড প্যান’ এবং ‘দ্য হোয়াইট পিপল’ যখন আমি পড়োছি তখন মধ্যরাত্রি। সারা দুনিয়া নিস্তব্ধ। শীতের রাতে দুরাগত ট্রেনের হুইসলও তখন খুব কাছের মনে হয়। সেখানে মনে মনে পরলেও মনে হয় যেন জোরে জোরে পড়ছি। এমনকি যা পড়ছি সেই চরিত্রগুলোও

নতুন বছর, নতুন কিতাব

Image
মানুষ কপাল নিয়ে জন্মায়। আমি এবড়ো খেবড়ো চওড়া কপাল নিয়ে জন্মেছি। বছরের শেষ সপ্তাহে ধুম জ্বরে পড়েছি। আমাকে দেখতে এসে সমর্পিতা মুড়িমাখা খেতে খেতে দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে বলেছিল , অসুস্থ হওয়ার আর সময় পেলে না বাবু! কত প্ল্যান ছিল , সব চৌপাট। প্ল্যান ছিল , সমর্পিতাদের নতুন বাড়ীতে মস্তি করব। সমর্পিতার বাবা নতুন ফ্ল্যাট কিনেছে কিছুদিন আগে। সাজানো গোছানো ফ্ল্যাট ফাঁকাই পড়ে থাকে। আমরা সেখানে যাব ৩১ তারিখ। রাত্রিবেলা তুমুল পার্টি। অরিত্রীকে প্রথম দুদিন বেজায় ভয় দেখিয়েছিলাম। বলেছিলাম , আমরা আমাদের হতভাগাদের নিয়ে যাচ্ছি , তুইও তোরটাকে নিয়ে আয়। ' ফেটিশ ' ' ফেটিশ ' খেলব। অরিত্রী ' ফেটিশ ' জানে না। আমি সদ্য জেনেছি , আমার থেকে সমর্পিতা জেনেছে। ভেবেছিলাম আমাদের হতভাগাদের এ নিয়ে বিপদে ফেলব , কিন্তু প্রথম শিকার হল অরিত্রী। তাকে এ বিষয়ে ভয়ঙ্কর রকমের যা-তা বোঝানো হয়েছিল। এমনিতে যথেষ্ট রকমের স্মার্ট এবং ' হা হা হি হি ' তে ওস্তাদ বটে , কিন্তু ' মুর্গা ' ও খুব সহজে বনে যায়। আমাদের চক্রান্তের শিকার হয়ে সে চোখ বড় বড় করে বলেছিল , আমি যাব না। মোটেই না। এইসব আল বা* কাজ করলে তোদের