Posts

Showing posts from May, 2024

পঞ্চায়েতঃ সিজন ৩

Image
  মানুষে মানুষ থাকে। সে মানুষ শাহরুখ কিম্বা রজনীকান্তের অভিনীত চরিত্রের মতো Larger than Life নয়। সে মানুষ মাটিতে পথ হাটে। সে মানুষে বিষাক্ত প্রেম আছে। সে মানুষে অভিমান, ভয়, হিংসা আছে। সে মানুষে প্রতিরোধ আছে। সে মানুষে ভালোবাসা, দয়া, করুণা আছে। আমার সেই মানুষদের দেখতে বড়ো ভালো লাগে। সেই মানুষ কথায় কথায় অপার্থিব ধর্মীয় সুখানুভূতির কথা বলে না। সেই মানুষ ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের আগুনে আশেপাশের সবাইকে পুড়িয়ে দেয় না। সেই মানুষ দর্শনের বেলাগাম শব্দের অতিপ্রয়োগ ঘটায় না। সে মানুষ বার্বিডলেদের মতো এক কাল্পনিক পৃথিবীতে হাটাচলা করে বোঝাতে চায় না যে, আমরা এই পৃথিবীর মানুষ। সে মানুষ রাবীন্দ্রিক পরিভাষায় কথা বলে বোঝাতে চায় না যে, এলিট ক্লাসের নাগরিকই আসলে হোমো সেপিয়েন্সের প্রতিনিধি। আমি ইদানীং সেই মানুষ দেখতে চাই --- গানে-গল্পে-কবিতায়-ছবিতে-সিনেমায়। সে মানুষ মাটির মানুষ। সে মানুষ ঔদ্ধত্বের গান গায়। সে মানুষ বলে, আমার মাথায় যেহেতু বিধায়কের হাত আছে, এতএব, আমি যা খুশি ইচ্ছা করতে পারি। কিছু মানুষ সে ঔদ্ধত্যের আগুনে জ্বালানী দেয়, রাগ কিম্বা লোভ, সেই আগুনের উষ্ণতার ওমে নিজেদের হাত-পা সেঁকতে সেঁকতে কখন যে

সোলারিস : গ্রহের ফেরে মানুষের বিশ্বচেতনার চিরসংশয়

Image
  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা বিভাগ থেকে এ বছর বইমেলাতে কামিল শেৎচিনস্কি-র করা অনুবাদ ‘সোলারিস’ প্রকাশিত হয়েছে। ‘সোলারিস’ বিখ্যাত এবং ক্লাসিক উপন্যাস। আন্দ্রেই তারাকোভস্কি এবং স্টিভেন সোডেরবার্গ একে আরও বিখ্যাত করে দিয়েছেন। ফলে প্রকাশনা বিভাগ মনে করছেন যে, সাধারণ পাঠকের এই বইটা সম্পর্কে না জ্ঞাত থাকাটা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ফলে বইটার কোন মুখবন্ধ নেই। বইটার বিষয়ের সাথে পরিচিত করানো, বইয়ের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া কিম্বা সমকালে বইটার প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে কোন আলোচনার দায়বদ্ধতা থেকে অনুবাদক কিম্বা প্রকাশক নিজেদের মুক্ত রেখেছেন । ধুম করে বইটা শুরু হয়েছে এবং অসংখ্য ছাপার ভুল সহযোগে, ভুল বাক্যের বিভ্রান্তি দিয়ে, অদ্ভুত সব শব্দের বঙ্গানুবাদের প্রয়োগে একরকম বিস্মিত হয়ে, বিভ্রান্ত হতে হতে, হোঁচট খেতে খেতে উক্ত উপন্যাসটা শেষ করার পর ভাবছিলাম, ইংরাজীতে বইটা পড়লে সময়ের এবং খরচের দিক থেকে কতটা লাভবান হতাম?       স্তানিস্লাভ লেম-র ‘সোলারিস’ সায়েস্ন ফিকশান গল্প। গল্পটার কাঠামোর দিকে যদি নজর দেওয়া যায়, তাহলে মোটামুটিভাবে বলা যায়, ‘সোলারিস’ নামক একটি গ্রহে মানুষ কলোনী গড়েছে, মূ

মৃত্যুপারের জীবনকথা --- সালমান ও একটা ছুরি

Image
  “Language, too, was a knife. It could cut open the world and reveal its inner workings, its secrets, its truths. It could cut through from one reality to another. It could call bullshit, open people’s eyes, create beauty. Language was my knife.”   তা বৈ কি। আপনার ভাষা তো ছুরির মতোই। এমন এক ছুরিকাঘাত করলেন, তা দিয়ে অপারেশান হল, না মানুষের আবেগ ক্ষতবিক্ষত হল, তা ঠিকঠাক ঠাহর করার আগেই আপনার মাথার দাম ধার্য হয়ে গেল। এবং আপনি চলে আসতে বাধ্য হলেন আমেরিকায়। কোন বইতে আপনি আপনার ছুরিটি চালিয়েছিলেন? “It was fashionable in some literary quarters to describe the book as unreadable, a book in which it is impossible to get past page 15. In such quarters people spoke of a “Page 15 Club”.” অর্থাৎ, যে বইটির এক দশমাংশও বেশিরভাগ মানুষই পড়ে উঠতে পারে নি । এমনকি যে যুবক ছুরিটা চালিয়েছিল ধর্মের জিগীরে, সেও পড়েনি বইটা। ফলে বইটার প্রকৃত বিষয়বস্তু থেকে অনেক অনেক দূরে থাকা সত্ত্বেও চৌত্রিশ বছর পর যুবকটি আঘাত হানল, স্রেফ ধর্মীয় উন্মাদনার কারণে! অথচ এই বইটা সম্পর্কে রুশদীর মন্তব্য কি? “ One of the bene

অ্যালিস মুনরো, আপনি কোথায়?

Image
  অ্যালিস মুনরো মারা গেলেন। ১৩ই মে ২০২৪। অ্যালিস মুনরো ‘নোবেল’ পুরস্কার পেয়েছেন ২০১৩ সালে। উইম্যান হয়ে ‘ম্যান বুকার প্রাইজ’ পেয়েছেন। পেয়েছেন কানাডার গভর্নর জেনারেল পুরস্কার, তিনবার। যারা এইসব ‘ছোটখাটো’ পুরস্কারকে পাত্তা দিতে নারাজ তাঁদের বলি, তাঁর ছোটগল্প কখন যে চিরন্তনী কথা হয়ে গেছে, বিশ্ব টেরও পায়নি, কেবল অজ্ঞাতসারে আপন করে নিয়েছে মাত্র।       শুনেছি তাঁর ছোটগল্প ম্যাজিকের মতো। ছোটগল্পই লিখেছেন বেশি। মেয়েদের কথা লিখেছেন। তাঁদের ছোট ছোট সুখদুঃখকে বলেছেন। সেই লেখায় নারীদের ওপর অত্যাচার নিয়ে অহেতুক কান্নাকাটি নেই। ‘আমরা কতো অসহায়’, এই বেদনা নিয়ে অযথা চেচামেচি নেই। বদলে আছে নারীদের ‘নারীত্ব’ নিয়ে সত্যিকারের গল্প। যে নারীত্ব জীবনের মুখোমুখি হয়ে জীবনকে দেখে, দেখে তার উথালি পাথালিয়া, চাওয়া পাওয়া, অসহায়ত্ব, তার আটপৌরে সাধারণী আত্মপ্রকাশ। তাঁর গল্পে ‘নারীবাদ’ চিরন্তনী স্নিগ্ধতা নিয়ে ধরা দেয়। যা একরকম নিত্যকালের চিরপুরাতন। চরমপন্থী নারীবাদী লেখিকা মার্গারেট এটউড পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন, “Alice Munro is among the major writers of English fiction of our time. . . . Among writers themselves

গুরু-সান্নিধ্যে

Image
  চিত্রকর রাণী চন্দের প্রায় সমগ্র জীবনটাই কেটেছে শান্তিনিকেতনে। এবং, এর মধ্যে প্রথম অর্ধ কেটেছে রবীন্দ্রসান্নিধ্যে। এই রবীন্দ্রসান্নিধ্য আবার যেমন তেমন করে নয়। একটা পর্যায় তো কেটেছে একেবারে প্রতিবেশী হিসাবে। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ যে বাড়িতে থাকতেন, একদম তাঁর লাগোয়া বাড়ীতেই তিনি থাকতেন স্বামীসহযোগে। তাঁর স্বামী অনিল চন্দ। রবীন্দ্রনাথের সেক্রেটারি। রাণীর শুরুটা অবশ্য হয়েছিল শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক হিসাবে।       রাণী চন্দের দাদা মুকুল দে গভর্মেন্ট আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ, প্রথম অধ্যক্ষ। রাণীর রক্তে ছিল চিত্রকলা। রবীন্দ্র-উপদেশে শান্তিনিকেতনে রাণী ভর্তি হন কলাভবনে। অবন ঠাকুর, নন্দলাল বসুর স্নেহধন্যা রাণীর কয়েকটি মাত্র চিত্রকলা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, ইন্টারনেটের সৌজন্যে। Mother and Child ছবিটার দিকে যে আমি কতক্ষণ তাকিয়েছিলাম মনে নেই। রাণী ছবি আঁকা শিখলেও নিজের ছবি নিয়ে ততটা সংবেদনশীল ছিলেন কি? না কি শান্তিনিকেতনের অন্যান্য খ্যাতনামা চিত্রকরদের দাপটে তাঁর কাজ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে? অবশ্য নারী চিত্রকরদের কজনকেই বা আমরা চিনি, বিশেষত শান্তিনিকেতনের?       তো এই রাণী কলাভবনে নন্দলাল বোসে

তাহাদের শান্তিনিকেতন, তাহাদের কথা

Image
  “জীবনভর যে ভিড় ছিল সরে গেছে। আজ একা আমি জিৎভূমে। রাত্রিকাল। ঝড় উঠল। শুয়ে আছি। শুয়ে শুয়ে শুনছি হাওয়া ছুটল। এখানকার ঝড়ের ভাষা জানি। শুকনো হিজল পাতাগুলি খরখর করে উরে চলল। গলগলির সরু ডালগুলি ছিটকে পড়ল। শিমূলের কচি ডালটা ভাঙল বোধ হয় --- হালকা গাছ। না, এ ঝড় থাকবে না বেশিক্ষণ। বৃষ্টি নামল। এবারে শুকনো পাতাগুলি ভিজে উঠল। ভিজেপাতা সাড়া তোলা না। চুপ হয়ে যায়।”       রাণী চন্দ। রবীন্দ্রনাথের ‘দ্বিতীয়া’। ‘প্রথমা’ হলেন মহলনাবীশ পত্নী – বিদুষী, শিক্ষিতা, বিদেশে রবীন্দ্রনাথের সাথে বহুবার গিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ তাকেই চিঠি লিখেছেন সবচেয়ে বেশি। আর এই ‘দ্বিতীয়া’ হলেন রাণী চন্দ। রবীন্দ্রনাথের সেক্রেটারি অমল চন্দের পত্নী, শিল্পী মুকুলচন্দ্র দে-র ভগ্নী, অবন ঠাকুর এবং নন্দলাল বোসের স্নেহধন্যা। নিজেও নামকরা আর্টিস্ট। প্রথম জীবনে রবীন্দ্রনাথের সাথে বহুবার ভ্রমণ করেছিলেন দেশে-বিদেশে। রবীন্দ্রনাথ যেখানে থাকতেন, শান্তিনিকেতনের সেই বাড়ীর একদম প্রতিবেশী ছিলেন বলা চলে। ফলে সকাল থেকে রাত্রি --- তাকে দেখেছেন --- অত্যন্ত কাছ থেকে।       শান্তিনিকেতন তখন ছিল, এককথায় বলা যায় চাঁদের হাট। কে না ছিলেন সেখানে? শিক্ষক থে

বিবিদিদির রবীন্দ্রস্মৃতি

Image
  ইন্দিরা দেবী চৌধুরানীকে সবাই চেনে , বিশেষত যারা ছিন্নপত্রের সাথে সুপরিচিত, তারা বিবি-কে চিনবে না, এ সম্ভব নয়। এহেন ইন্দিরা দেবীর একটা লেখা আমার হাতে এসে পড়ল ---- রবীন্দ্রস্মৃতি। প্রশ্ন উঠতেই পারে, আমি এই ধরনের বই কেন পড়ছি? উত্তর বিবিদিদি-ই দিয়েছেন --- “তাঁকে যারা দেখেন নি তাঁর নানা বয়সের ছবির দ্বারা সে অভাব কতকটা পূরণ করা হয়েছে, আর তাঁকে যাঁরা জানেন নি তাঁরা এই ছোটোখাটো বর্ণনাগুলি একত্র করে তাঁর প্রকৃতিরও আংশিক একটি ছবি বোধ হয় মনশ্চক্ষে গড়ে তুলতে পারবেন। এই রকম অনেকগুলি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীর সমন্বয়েই ব্যাক্তিত্ব নামক দুর্জ্ঞেয় পদার্থের কিঞ্চিৎ আভাস পাওয়া যেতে পারে। যদিও বিরাট ব্যক্তিত্বকে স্পষ্টভাবে ধরতে-ছুঁতে পারা সহজ কাজ নয় এবং আমার মতো মনস্তত্ত্ব-অনভিজ্ঞ লোকের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। অতি সাধারণ ব্যক্তিকে যখন অতি কাছ থেকে দেখেও বোঝা শক্ত মনে হয় তখন অসাধারণ ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলা অনেক দূরের কথা --- পঙ্গুর গিরিলঙ্ঘনের মতো। একই ব্যক্তির মধ্যে অনেক ব্যক্তি বাস করে, এ কথাটা কে বলেছেন ঠিক মনে পড়ছে না। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলে না এমন কথা বলতে পারি না।”       ইন্দিরা দেবী বি

এখনকার নারীদের একটু অন্যরকম কাহিনী

Image
  কিছু কিছু সময় আমার বড়ো আক্ষেপ হয়। আক্ষেপ হয় এই ভেবে যে, আমি সিনেমার রিভিউ খুব একটা ভালো করতে পারি না। সাহিত্যের বিদ্যে দিয়ে সিনেমার রিভিউ করলে তা একদৃষ্টি হরিণের মতো হয়ে যায়। সেই সিনেমার রিভিউ অসম্পূর্ন হয়ে যায়। কিন্তু যখন মনে করি সিনেমা যাদের জন্যে বানানো হচ্ছে তারা কারা? তারা তো আমার মতোই অতি সাধারণ মানব মানবী। আমার মতোই তারা সিনেমার আর্ট ডিরেকশান কিম্বা ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল বোঝেন না। তারা সিনেমার পাল্‌স-টা ধরতে চেষ্টা করেন এবং সেখান থেকেই সেই সৃষ্টির সাথে নিজেদেরকে যুক্ত করতে চান। তো সেই আঙ্গিকে সিনেমাটা কেমন লাগে সেটা জানানোটাও কি একটা দৃষ্টিভঙ্গী নয়? অবশ্যই একটা দৃষ্টিভঙ্গী। আমি সেই দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই আমার ভালো লাগা মন্দ লাগার কথা জানিয়ে যেতে চাই। ‘লাপাতা লেডিজ্‌’ দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, এ কোন ভূমিপুত্রদের আত্মা মাটি ফুড়ে বের করে এনে কুশীলবদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন কিরণ রাও? প্রতিভা রত্না, বিশেষ করে নিতাংশী গোয়েল বা স্পর্শ শ্রীবাস্তবদের পেজ ত্রি-তে দেখলে তো এক মুহূর্তের জন্যে মনে হয় না যে এই মহিলাটি একটি অজ্ঞাত স্টেশানে একরাত্রি কাটাতে পারে, কিম্বা মনে হয় না মদ্যপ একটি ছেলেকে

সত্যজিতের ছাত্রসত্তার খোঁজে

Image
  বাংলার শেষ জনপ্রিয় আবেগময় মহাকূলপ্রদীপ সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে এত কিছু লেখা হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে যে, তার মধ্যে আমার কিছু বলা মানায় না। আমি সিনেমা বিশেষজ্ঞা নই। সত্যজিৎ রায়ের কিছু সিনেমা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি, কিছু সিনেমা দু-একবার দেখেছে, বেশ কিছু সিনেমা দেখা বাকি আছে। পথের পাঁচালী ফ্রান্সে Best Human Document Award না পেলে লোকটার কি দুর্গতি হত বলা মুশকিল। অস্কার পুরস্কারটি তাকে সর্বকালের জাতে তুলে দিয়েছিল বটে, তবে বাঙালী তাকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যিক থেকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের তকমা দিয়ে দিয়েছে। এখনও তার গল্পের বই আপামর বাঙালীরা বইমেলায় লাইন দিয়ে কিনে থাকেন। অনেক বাঙালি শিশুরা এখন অবশ্য তার বইয়ের ট্রান্সলেটেড ভার্সান পড়ছে। তার বই এখনও ‘হট কচুরী’।       আমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময় মানুষটার মস্তিষ্ক। রবীন্দ্রনাথের পর অতবড় ভার্সেটাইল বাঙালী আর জন্মেছে কি? সোজা উত্তর – না। তার ছবি, তার সঙ্গীত, তার সংলাপ, তার চিত্রকলা, তার ইলাস্ট্রেশান এই সব কিছুর পেছনে একটাই ব্যাপার কাজ করেছে। তা হল তার ‘মগজাস্ত্র’ । যে মগজাস্ত্রে তিনি দেশ বিদেশের শিল্পকলার অন্তরস্থিত চেতনাকে আত্মীকরণ করেছেন এবং

মহারানী

Image
‘চক্রব্যূহ’ বলে একটা শব্দ আছে, মহাভারত হতেই তা বেশ বিখ্যাত। এই চক্রব্যূহ সাজানো এবং তাকে ভাঙ্গা --- মুখের কথা নয়। আর খাতায় কলমেও তাকে সাজানো এবং ভেঙে দেওয়ার খেলা খেলাও অত সহজ কাজ নয়। মহারানী-র তিনটে সিজন দেখতে দেখতে আমার সেটাই মনে হচ্ছিল। এই ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রচুর আলাপ আলোচনা হয়েছে আগেই, কারণ সিরিজটা বেশ পুরোনো। আমি দেখছি এই প্রথমবার। তবুও লিখছি , কেন? কারণ একটাই, গল্পটা সাজানোর কাঠামো। এত বুদ্ধিদীপ্ত কাঠামো খুব কমই দেখা যায়। এমনকি, ভীমা ভারতীকে হত্যার প্যাটার্ন অগাথা ক্রিস্টীর ‘ মার্ডার ইন ওরিয়েন্টাল এক্সপ্রেস ’ কে মনে করিয়ে দিলেও, কোথাও যেন, এই ওয়েব সিরিজের সাথে একদমই বেমানান লাগে না। বরং শয়তানি চিন্তার অভিব্যাক্তি হিসাবে রাজনীতির কুশীলবরা যে কতটা আলো-আধারির মধ্যে লুকোচুরি খেলতে পারে তা দেখতে বিস্ময় লাগে। এই সিনেমায় হুমা কুরেশি অনবদ্য অভিনয় করেছেন। বলাই বাহুল্য। তার হাটাচলা, কথা বলা, গ্রাম্য বিহারী মহিলা থেকে আস্তে আস্তে রাণী ভারতী হয়ে ওঠার মধ্যে যে শারীরী ভাষার পরিবর্তন তা প্রশংসার যোগ্য। বাকিরাও যথাযথ, তবে আলাদা করে ভিনীত কুমার (কালানাগ) এবং দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য-র (মার্টিন