মহারানী
‘চক্রব্যূহ’ বলে একটা শব্দ
আছে, মহাভারত হতেই তা বেশ বিখ্যাত। এই চক্রব্যূহ সাজানো এবং তাকে ভাঙ্গা --- মুখের
কথা নয়। আর খাতায় কলমেও তাকে সাজানো এবং ভেঙে দেওয়ার খেলা খেলাও অত সহজ কাজ নয়।
মহারানী-র তিনটে সিজন দেখতে দেখতে আমার সেটাই মনে হচ্ছিল।
এই ওয়েব
সিরিজ নিয়ে প্রচুর আলাপ আলোচনা হয়েছে আগেই, কারণ সিরিজটা বেশ পুরোনো। আমি দেখছি এই
প্রথমবার। তবুও লিখছি, কেন?
কারণ একটাই,
গল্পটা সাজানোর কাঠামো। এত বুদ্ধিদীপ্ত কাঠামো খুব কমই দেখা যায়। এমনকি, ভীমা
ভারতীকে হত্যার প্যাটার্ন অগাথা ক্রিস্টীর ‘মার্ডার ইন ওরিয়েন্টাল
এক্সপ্রেস’কে মনে করিয়ে দিলেও, কোথাও যেন, এই ওয়েব সিরিজের
সাথে একদমই বেমানান লাগে না। বরং শয়তানি চিন্তার অভিব্যাক্তি হিসাবে রাজনীতির
কুশীলবরা যে কতটা আলো-আধারির মধ্যে লুকোচুরি খেলতে পারে তা দেখতে বিস্ময় লাগে।
এই সিনেমায়
হুমা কুরেশি অনবদ্য অভিনয় করেছেন। বলাই বাহুল্য। তার হাটাচলা, কথা বলা, গ্রাম্য
বিহারী মহিলা থেকে আস্তে আস্তে রাণী ভারতী হয়ে ওঠার মধ্যে যে শারীরী ভাষার
পরিবর্তন তা প্রশংসার যোগ্য। বাকিরাও যথাযথ, তবে আলাদা করে ভিনীত কুমার (কালানাগ)
এবং দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য-র (মার্টিন এক্কা) অভিনয় মনে যথেষ্ট দাগ কেটে যায়।
রাজনীতি
কতটা চক্ষুলজ্জার বাইরে এসে নির্লজ্জ হতে পারে, এতদিন সিনেমায় দেখে এসেছি এবং তাকে
মেলোড্রামা বলে উড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে সেই মালোড্রামা যখন বাস্তবের মটিতে
পা রেখে সমগ্র ভারতবর্ষে যাত্রাপালা করছে, তখন, এই ওয়েব সিরিজটাকে বিন্দুমাত্র অতিশয়োক্তি
মনে হয় না, বরং বর্তমান অবস্থার সাথে দিব্যি খাপ খেয়ে যায়।
===========================
মহারাণী
হুমা কুরেশি, সোহুম শাহ্,
অমিত সায়াল, ভিনীত কুমার, প্রমোদ পাঠক, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য
OTT Relies: Sony LIV
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সমর্পিতা
Comments
Post a Comment