Posts

Showing posts from December, 2024

ইয়াসুনারি কাওয়াবাতার গল্প

Image
  ব্লার্বে দেখছি লেখা আছে, “ বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে লেখা প্রথম ছোটোগল্পর সময় থেকে তাঁর মৃত্যুর সময় অব্দি প্রকাশিত গল্পগুলিকে ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা ‘তানাগোকোরো নো সোসেতসু’ বলতেন যার অর্থ হল এমন সব গল্প যা তাদের আয়তনের কারণে হাতের তালুর মধ্যে চলে আসতে পারে। কাওয়াবাতার এই হাইকু-সুলভ রচনাশৈলীতে ভাবনার গভীরতা, সূক্ষ্ম-ইশারা বা ইঙ্গিত, মানুষের হৃদয়ের মধ্যেকার অস্থিরতা, তার উপলব্ধি এবং রূপান্তর ধরা দেয়। ধরা দেয় সেইসব মানুষ যাদের কাছে বিচারবুদ্ধির থেকে অনেক সময় অনুভূতি বা কোনও একটি মুহূর্তের উষ্ণতা বেশি প্রাধান্য পায়। ”       আমাদের পাঠকদের, মূলত যারা, একটু গভীরে গিয়ে গল্পগুলোকে পাঠাভ্যাস করতে চায়, তাদের সমস্যা শুরু হয় ঠিক এইখান থেকেই। কাওয়াবাতা-র লেখা ছোটগল্পের বই কিন্তু একটা নয়, একাধিক। এর মধ্যে কোন গল্প থেকে কোন গল্পের অনুবাদ হয়েছে, তার কোন নির্দেশিকা নেই। ফলে আমাদের পক্ষে জানার উপায় নেই সে, এই গল্পগুলো পড়ার পর, যাকে বলে, Further Reading, সেটারও কোন বোধগম্যতা নেই, অন্তত এই বই থেকে।       এই ধরনের বইগুলো আগে আমার কাছে বেশ ল...

দ্য লেক

Image
  মানসিক অসুস্থতা। বর্তমানে দাঁড়িয়ে অবশ্যই বড়ো বিষয়। কারণ, মানুষের মন যে কোন ধারায় কখন বয়ে যায়, তা ধরতে পারা, অনেক সময়, সেই মানুষটির পক্ষেও অসম্ভব। তার একটা অতীত আছে, বর্তমান আছে, কিন্তু ভবিষ্যৎ? ভবিষ্যৎ সেই মানুষটারই হাতে। শারীরিক অসুস্থতার ওষুধ আছে, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে, রোগীকেও নিজের সাথে লড়তে হয়, ওষুধের পাশাপাশই, অনেক সময়।       গিমপে, এই উপন্যাসের মূল চরিত্র, একজন মানষিক অসুস্থ মানুষ। ‘হ্রদ’ এক শান্ত, স্থির জলাশয়, কিন্তু তার গভীরতার, অনেক ক্ষেত্রে কোন অন্ত পাওয়া যায় না। শিশুকালে, একদিন এমনই একটি হ্রদে, ভেসে ওঠে, গিমপের বাবার দেহ। হত্যা? না আত্মহত্যা? কেউ জানে না। গিমপের মনে ভয়, পাছে তার মা তাকে ছেড়ে চলে যায়! মামাবাড়ীতে থাকতে সেই কারনেই সে চায় না। আরেকটা কারণ আছে, মামাতো বোন। ছোটবেলার খেলার সাথীকে সে ভালোবেসে ফেলে। কিশোরীবেলায় বোনটি বদলে যায়। তার ক্রুরতা ও নিষ্ঠুরতার কারনে গিমপে সেখানেও ব্যর্থ হয়। এই হল অতীত। মেয়েদের ওপরে এমন এক প্রভাব এই দুইজন দিয়ে ফেলে গিমপেকে, যে, বড়ো হয়ে, যখন সে স্কুলের শিক্ষক হয়, শিকার হয় এক অদ্ভুত মানসিক জটিলতার। মেয়েদের ...

দ্য সাউন্ড অফ দ্য মাউন্টেন

Image
  কাওয়াবাতা-র এই পর্যায়ের উপন্যাসটি, যেটা আমি পড়ে শেষ করে উঠলাম, সেটা যদি কেউ শুরু করতে চান, তাহলে তাকে দুটো বিষয় একটু মাথায় রাখতে হবে, নচেৎ, এই উপন্যাস দুই-তিন পর্বের মধ্যেই একঘেয়ে লাগতে পারে। প্রথম বিষয় – যুদ্ধ। আমাদের জেনারেশান যুদ্ধ কি জিনিস, মানে, তার ডায়রেক্ট ইমপ্যাক্ট কি, তা জানে না। আমরা কোনদিন কোন যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করি নি, এমনকি, ভারত-পাকিস্থান কিম্বা ভারত-চীন যুদ্ধের ভয়াবহ প্রভাব আমাদের জনসমাজে তেমন করে পড়ে নি, অন্তত, ইউক্রেন কিম্বা প্যালেস্তাইনের দিকে তাকালে ব্যাপারটা আরও পরিস্কার হয়ে যাবে। কাওয়াবাতার এই উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে যখন বের হচ্ছে, সেই সময়কাল হল ১৯৪৯-১৯৫৪। অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান শুধু পর্যুদস্থই হয় নি, সমগ্র জাতি এমন এক সংকটের মধ্যে দিয়ে এরপরের কয়েক দশক অতিক্রান্ত করেছিল যে, তার সামগ্রিক সত্ত্বাটিই একটা ভয়ানক অস্থিরতা এবং অনির্দেশ্যতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল। সামাজিক পরিকাঠামো, অর্থনৈতিক পরিকাঠামো এবং জাতির মূল্যবোধ --- এই তিনটে জায়গায় চরম দ্বিধা ও দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে তাকে চলতে হয়েছিল। ফলে একটা পরিবারেই মাত্র দুটো জেনারেশানের মধ্যেকার মূল্যব...