Mary

 


যীশুখ্রীষ্টের মাতা মেরী কিম্বা মরিয়ম, তার কোন সার্থক জীবনীগ্রন্থ নেই। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে, মূলত বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্ট, মাতা মেরীর কিছু কিছু ঘটনা উঠে এসেছে।

     কোথায় কোথায় মেরীর উল্লেখ পাওয়া যায়?

 

New Testament: লূকের সুসমাচার (Gospel of Luke), মথির সুসমাচার (Gospel of Matthew), যোহনের সুসমাচার (Gospel of John), প্রেরিতদের কার্যাবলী (Acts of the Apostles)।

Old Testament: মেরীর নাম সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী তার মাতৃত্বের দিকে ইঙ্গিত করে বলে খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ববিদরা বিশ্বাস করেন (যেমন, যিশাইয় ৭:১৪: "একজন কুমারী গর্ভবতী হয়ে পুত্রসন্তান জন্ম দেবেন")।

কোরআন (Qur'an): সূরা আল-ইমরান, সূরা মারিয়াম, সূরা আল-মায়েদা, সূরা আন-নিসা।

অ্যাপোক্রাইফাল গ্রন্থ (Apocryphal Texts): বাইবেলের বাইরের কিছু প্রাচীন লেখা।

Protoevangelium of James: এখানে মেরীর শৈশব, তার মন্দিরে বাস, এবং যিশুর অলৌকিক জন্মের প্রসঙ্গ রয়েছে।

Gospel of the Nativity of Mary: মেরীর জন্ম ও তার পবিত্র জীবন নিয়ে বিশদ আলোচনা রয়েছে এই বইতে।

এছাড়াও আরোও কিছু টুকরা টাকরা গ্রন্থে তার উল্লেখ আছে।

 

     এই সিনেমাটা দেখতে দেখতে আমার মনে হচ্ছিল, নির্ঘাত এক বলিউড ঘরানার সিনেমা দেখছি। সে সমস্ত সিনেমায় অনেক ঐতিহাসিক চরিত্রকে দিয়ে এমন সব মর্মান্তিক কাজ করানো হয়, যা বুক চেপে ধরে দেখতে হয়। আর সেটা যদি দক্ষিণী সিনেমা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে জিভের তলায় দু-তিনটে সরবিট্রেট লাগে। এখানে, যখন মেরী আর যোসেফ শিশু যীশুকে নিয়ে আগুনের মধ্যে দিয়ে ঘোড়া চালিয়ে বেরিয়ে এল বেথলেহেম থেকে, মনে হচ্ছিল, কেন এতক্ষণ গ্যাব্রিয়েলকে তাদের প্রয়োজন হয়েছিল? পড়ত এই সিনেমা রোহিত শেট্টির হাতে, গ্যাব্রিয়েল না, স্বয়ং মেরীই লুসিফারের গালে চড় কষিয়ে সমস্ত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসত অনায়াসে।

এই সিনেমায় একটাই প্রাপ্তি - অ্যান্থনি হপকিন্স। রাজা হেরোদের ভূমিকায় তার অমন নির্মম, নিষ্ঠুর, ঠান্ডা মাথার অভিনয় এক-একবার বুক কাঁপিয়ে দেয়। সারা সিনেমায় তিনি ছিলেন মেরেকেটে মিনিট পনেরো। তাও টানা নয়। কিন্তু ওইটুকু সময়ই যথেষ্ট তার নিজের ক্ষমতা বোঝানোর জন্য।

বাকিটা? সময় নষ্ট।

আমার মনে হয়, সিনেমার ডিরেক্টর মূলত যে বইটা থেকে সিনেমার ভিত গঠন করেছেন তা হল Protoevangelium of James বা জেমসের প্রোটোইভ্যাঞ্জেলিয়াম। গ্রন্থটি সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে লেখা। নামের ভিত্তিতে মনে হয় এটি যিশুর শিষ্য জেমসের লেখা, তবে অধিকাংশ পণ্ডিত একমত যে এটি seudepigraphical অর্থাৎ, যিনি নিজেকে ‘জেমস’ বলে পরিচয় দিয়েছেন কিন্তু আসলে তিনি অন্য কেউ। বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টের অংশ নয়, ফলে, খ্রিস্টান গির্জাগুলি বইটিকে গ্রহণ করেনি, তা স্বত্ত্বেও খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য এবং ধর্মতত্ত্বে গভীর প্রভাব রয়ে গেছে। ক্যাথলিক এবং অর্থোডক্স গির্জায় মাতা মেরী সম্পর্কে বহু ঐতিহ্য ও আচার এই গ্রন্থ থেকে অনুপ্রাণিত।

এর সাথে খানিকটা মশলা মিশিয়ে মাতা মেরী আর পিতা যোসেফ, মনে হয়, মাল্টিভার্সের কোনও যীশুকে জন্ম দিয়েছিলেন এবং বাঁচাচ্ছিলেন। ধন্য মার্ভেল দুনিয়া… এমনই সব সিনেমা বানিয়েছ, যে, তার প্রভাব বাকি সিনেমাগুলোতে পড়তে শুরু করেছে…

====================

Mary

Noa Cohen, Ido Tako, Anthony Hopkins

Directed By: D.J. Caruso

OTT: Netflix

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে