Posts

Showing posts from March, 2023

উভচর মানব

Image
  কিছু কিছু বই প্রশ্ন রাখে। এক-এক বইয়ের প্রশ্ন এক-এক রকম। কোন কোন প্রশ্নের উত্তর হয়, কোন কোন প্রশ্নের উত্তর হয় না , সে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে উত্তর অমিমাংসীত, অনেক ক্ষেত্রে উত্তর অনন্তকালের অপেক্ষার। এতএব, প্রশ্ন করার ক্ষমতা রাখে যে বই, সেই বই আমার চোখে মারাত্মক শক্তিশালী বই। চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন রাখার সাহস দরকার, ক্ষমতা দরকার। আলেক্সান্দর বেলায়েভ প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্ন একটা না, বেশ কয়েকটা। চিরন্তনী সেই সব প্রশ্ন--- ১। বিজ্ঞান সত্যিই আশীর্বাদ, না অভিশাপ? ২। মানুষের প্রয়োজনে প্রকৃতি, না কি প্রকৃতির প্রয়োজনে মানুষ? ৩। প্রকৃতির স্বাভাবিকী ক্ষমতাকে প্রয়োজন এবং ইচ্ছামতো পরিবর্তন করার ক্ষমতা এবং ঔচিত্য কি আমাদের আছে? ৪। ধর্ম বিজ্ঞানের হাত না ধরে আর কতদিন বিরোধিতা করবে? ৫। মানুষ মানুষকে মানুষের প্রয়োজনে কতখানি পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারে? ৬। মানুষের নিজস্ব স্বাধীনতা এবং সেই সাথে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা --- কতটা কি হবে তা কে ঠিক করবে?       এ প্রশ্নের অবশেষ উত্তর কি? সব প্রশ্নের উত্তর হয় না। কালের গর্ভে থাকে। কালই তার উত্তর দেয়। হতে পারে, মানুষে মানুষে সেই উত্তর

গ্রহান্তরের আগন্তুক

Image
  অনেক সময় এমন হয়, কিছু কিছু বই আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে। যেন সে বলতে চায়, পড়ে দেখা দেখি, কেমন দম আছে। এই সমস্ত বইয়ের ক্ষেত্রে দুটো পথ। এক, বইটাকে না পড়া; এবং দুই, বইটাকে ঠেলে গুঁতিয়ে শেষ করে বলে ওঠা, হিপ্‌ হিপ্‌ হুররে... তৃতীয় আরেকটা পথ আছে। বইটাকে পড়ার জন্য পড়াশোনা করা। ইংরাজীতে যাকে বলে ‘ প্রিপারেশান ’ । সেই সাথে পড়ার মাঝে মাঝেও পড়াশোনা করা। এবং আস্তে ধীরে, সময় নিয়ে, বইটাকে শেষ করা । তৃতীয় ক্ষেত্রে আপনি পরিশ্রমী, কারণ, বিশেষ করে, যে পর্যায়ে আপনাকে পৌছতে হচ্ছে, সে পর্যায়ে পৌছনোর একটা মানসিকতা থাকা চাই। সেই মানসিকতা না থাকলে এ বই শেষ করতে আপনি অপারগ। আর অপারগ হলেই, আপনি জ্ঞানের কিয়দংশ খোয়ালেন, সেই জ্ঞানের সূত্র ধরে আরোও যে সমস্ত জ্ঞান অর্জন করতে চান, সেগুলোর পথও বন্ধ হয়ে গেল। এসমস্ত কথা আমার নয়। আমি শুনেছিলাম আমার স্যারের কাছ থেকে। আজ ‘গ্রহান্তরের আগন্তুক’ গল্পগুচ্ছটা পড়তে গিয়ে আবার সে কথাগুলো মনে পড়ল। ননী ভৌমিকের বেশ কয়েকটি অনুবাদ আমার পড়া। তার অনুবাদ পড়তে আমার ভালোই লাগে। কিন্তু এই অনুবাদটা পড়তে পড়তে আমি বারবার অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম। কীভাবে অনুবাদ করলেন তিনি? অনুবাদ করার আগে কিরকম প্র

আমার গডব্রাদার, আমার জান-এ-মন্‌

Image
  যারা আমার লেখা নিয়মিত পড়েন, তারা জানেন, আমার একটা গডফাদার আছেন; তারা জানেন, আমার একটা বর আছেন; তারা জানেন, আমার একটা ভ্যাবাগঙ্গারাম হতভাগা আছে; তারা জানেন, আমার তিনটি বন্ধু আছে; তারা জানেন, আমার একটা বাবা, একটা মা আর একটা ভাই আছে; তারা জানেন, আমার জেমস্‌ বন্ড আছেন; এবং এদের প্রত্যেককেই তারা চেনেন আমার লেখার মধ্যে দিয়ে। কিন্তু তারা জানেন না, আমার একটা গডব্রাদার আছে। এই গডব্রাদারটিকে আমি আমার শাড়ীর আঁচলের খুঁটে পরম যত্নে বেঁধে রেখে দিয়েছি, আমি তার বড়ো আদরের, আমি তার কোহিনূর। সে আমার ইন্দ্রমণির হার। আমার গলার মালা করে তাকে রেখে দিয়েছি পরম যত্নে। আমাকে যারা জানেন, তারা যদি ধারণা করেন, আমার মা আমার ভাইকে, কিম্বা সমর্পিতাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, তাহলে ভুল করছেন। আমার এই গডব্রাদারটি হল তার নয়নের মণি। এই গডব্রাদারটির সবচেয়ে যে পুরোনো ছবি আমাদের বাড়ীতে আছে তা হল আমার বাবা-মা’র বিয়ের দিনের ছবি। সে ছবিতে সে সরাসরি আমার মায়ের কোলে চড়ে বসে গলা জড়িয়ে ধরে ছবিটা তুলেছিল। পাশে আমার বাবা। মায়ের সাথে তার পিরীতির সেই শুরু। ‘ইচ্ছা হয়ে ছিলি মনের মাঝারে’ বোধহয় মায়ের অনুভূতিতে সেইদিন থেকেই ঢুকে পড়েছ

দেশ ১৭ই মার্চ

Image
  এক-একটা সময় আসে, যখন নিয়মিত পত্রিকাগুলো, হঠাৎ করেই চমকে দেয়। এখন আমার স্বচ্ছল অবস্থা, ফলে দেশ প্রায় প্রতি মাসেই পড়ি। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশ নিয়ে লেখার গরজ পাই না। কিন্তু এবারের ‘দেশ’ পত্রিকাতে চোখ বোলাতে গিয়ে বেশ ভালোই লাগল। ‘ মানবতীর্থ এবং যুগে যুগে তার পুনরাবিষ্কার ’ শীর্ষক সম্পাদকীয় উচ্চভাষায় উচ্চমানে লেখা হয়েছে। যদিও “প্রায়শ তীর্থ সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণা ব্যাতিরেক কিছু ভাবনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।” এবং “মহাজনেরা তাঁদের চিন্তানুসারে তীর্থ এবং সেই সঙ্গে তার যাত্রা-অভিযাত্রার যে-সনাতনী ধারণা পোষণ করেছেন, তাকে সন্মান-সম্ভ্রম সহকারে মর্যাদা দান এবং তাকে অক্ষুণ্ন রাখা এক অবশ্যকর্তব্য।” বাক্যদুটো কন্ট্রাডিক্ট করল। দুটো যেন দুই বিপরীত অর্থ ইঙ্গিত করল। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বর্তমান আধাত্মবাদ জগতের কমার্শিয়াল লেখক ও বাগ্মী বক্তা। তার কমপ্যাক্ট লেখা পড়তে ভালোই লাগে। বেশি গভীরে না গিয়েও ভাষার মাধুর্যে গভীর থেকে গভীরতম বোধের ইঙ্গিত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এবং ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত’ তার সব লেখাই ঠাকুর-মা-স্বামীজী-র প্রতি নমন দিয়ে শেষ হয়, এখানেও তাই হয়েছে। মোট কথা, লেখাটা কিন্তু যথেষ্ট

মিলক গ্রহে মানুষ

Image
‘মিলক গ্রহে মানুষ’ উপন্যাসটা পড়ার ইচ্ছে জেগেছিল মূলত দুটো কারণে --- এক, এর অদ্ভুত প্রচ্ছদ, এবং দুই, অদ্রীশ বর্ধনের মৌলিক লেখা। এরকম একটা প্রচ্ছদের ওপরে আকর্ষণের কারণ আমি প্রথমে বুঝতে পারি নি। অনেকদিন ধরেই বইটা চোখের সামনে ঘোরাফেরা করছিল, এমনিই ফেলে রেখেছিলাম, কিন্তু তবুও, টানছিল আমাকে নিতাই ঘোষের আঁকা ওই অদ্ভুত প্রচ্ছদটা। কিছু একটা চেনা, তবুও যেন চিনতে পারছিলাম না। অবশেষে একটানে বইটা শেষ করলাম। কিশোর উপন্যাস। পড়তে পড়তে একটা কনসেপ্টে এসে আসল ব্যাপারটা খোলসা হল। তা হল, মগজ ধোলাই টাইপের মেশিন, যার নাম এখানে ‘মগজ’। ‘হীরক রাজার দেশে’ ১৯৮০ সালে নির্মিত, আর ‘মিলক গ্রহে মানুষ’ লেখা হয়েছে ১৯৮৪ সালে। আমি জোর করে অবশ্যই মিল টানতে চাইছি না। কিন্তু ছবি, সিনেমা আর উপন্যাসটাকে যদি এক সরলারেখায় টানার চেষ্টা করা যায়, তাহলে হয়তো রেখার খুব কাছাকাছিই তিনটে থাকবে।       দ্বিতীয় কারণ, অদ্রীশ বর্ধন । ওনার অনেক অনুবাদ পড়েছি। জুল ভের্ন থেকে শুরু করে এডগার এলান পো --- আমার একটুকরো ছোটবেলায় কোথাও ওনার মৌলিক লেখা পড়ি নি। বিগত আড়াই মাস ধরে সায়েন্স ফিকশান পড়ে চলেছি, কিন্তু কোথাও বাংলার মাটির গন্ধ নেই। এমতাবস্থায় এম

The Whale

Image
  “ সত্য যে কঠিন , কঠিনেরে ভালোবাসিলাম , সে কখনো করে না বঞ্চনা। আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন , সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে , মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ করে দিতে। ”   একদম শেষ পর্যায়ে রবীন্দ্রনাথ যখন অসুখের ঘোরে চলে গেছেন, সেই সময় তার একটা ‘দর্শন’ হয়, সেই ঘোরের মধ্যেই দেখেন বিশ্বসংসার আর তার সাথে চিরন্তনের সম্পর্ক --- সত্যের সম্পর্ক। জেগে ওঠেন যখন, তখন শেষরাত। এই লেখাটা মুখে মুখেই রচিত হয়। লিখে রাখেন তারই আপন কেউ, যার নাম আমার মনে পড়ছে না। “ সত্য যে কঠিন , / কঠিনেরে ভালোবাসিলাম , / সে কখনো করে না বঞ্চনা।” --- সমগ্র জগৎ থেকেও যদি বা সে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবুও না। এবং এই সত্যের রূপ যে সুরূপ তা বলা চলে না। ফলে যে মানুষটি শুধুমাত্র সত্যকেই অনুসরন করছে, সারা পৃথিবী, এমনকি ঈশ্বরের তথাকথিত গসপেলও যদি তার বিরুদ্ধে যায়, তাহলেও তার কিছু করার থাকে না। “আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন” --- কতটা দুঃখ? মৃত্যুর মুহূর্তে আপন তার টিন এজ মেয়ে যদি তাকে কথার আঘাতে বেদনায় জর্জরিত করতে থাকে, তার পিতা মারা যাচ্ছে জেনেও করতে থাকে, তার থেকে মর্মান্তিক কিছু আছে কি? মৃত্যুপথযাত্রীর কাছে এর থেকে র

আএলিতা, অপার্থিব প্রেম, ও তার অভিঘাত

Image
  "চারিদিকে মরচে ধরা লোহালক্কড় আর সিমেন্টের ফাঁকা পিপে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত। তারের তালগোল পাকানো কুন্ডলী, ভাঙা কলকব্জা, তার মধ্যে আবর্জনার স্তুপের ওপর ঘাসের রুগ্ন শীষ গজিয়েছে।"      লাইনদুটোর মধ্যে কাব্যের ছোঁয়া পেতেই আমি নড়েচড়ে বসলাম। যারা 'গারিনের মারনরশ্মি' পড়েছেন, তারা জানেন আলেক্সেই নিকোলিওভিচ তলস্তয়ের মধ্যে যতটা মার্ক্সিজম আছে, কাব্যিক ব্যাপার স্যাপার তার ছিঁটেফোঁটাও নেই। যদিও একটা উপন্যাস দিয়ে একজন লেখককে যাচাই করা উচিৎ নয়, তবুও, একটা ধারণা তো করা যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে হঠাৎ করে এমন একটা কাব্যিক বাক্যের জন্যে সত্যিই আমি প্রস্তুত ছিলাম না।      'বিনিদ্র রাত্রি' নামক পর্বে এসে আবার চমকালাম। কি লাইন বেরিয়ে এসেছে ওনার হাত ধরে! তলস্তয় লিখছেন,      "প্রেমের বিষ কেন খেয়েছিলাম? অসাড় থাকলে আরো ভালো হত। প্রাণের হিমজমাট বীজ, ইথারে ভাসমান সব স্ফটিক বিন্দু, তারা কি গভীর নিদ্রায় মগ্ন নয়? কিন্তু আমাকে ধরণীতলে পড়তে হল, অঙ্কুরিত হতে হল -- জানা যে চাই প্রেমের সেই ভয়ঙ্কর তৃষ্ণার অর্থ কি, অন্যতে বিলীন হওয়ার, নিজেকে হারানোর, নিঃসঙ্গ বীজ হয়ে না থাকার মানেটা কি। আর

মহাজীবনে মহামরণ

Image
  জঁ-র ব্যাপারটা আমার কোনকালেই পছন্দের ছিল না। এইভাবে সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্মে ভেঙেচুরে ‘ট্যাগ’ করাটা শপিং মলে কিম্বা ওষুধের দোকানেই শোভা পায়। সেখানকার যারা কর্মচারী তাদের সহজ হয় বিক্রীবাট্টার ক্ষেত্রে। তেমনই জঁ-র ব্যাপারটা স্কলার বা রিসার্চারদের ক্ষেত্রে ঠিকঠাক মনে হলেও পাঠক মহলে এটা বর্জনীয় হলে আত্মিক দৃষ্টি সুদূরপ্রসারিত হয়। নাহলে যে সমস্ত পাঠক শুধু ‘গোয়েন্দা’ কিম্বা ‘তন্ত্র’ ইত্যাদি (উদাহরণস্বরূপ) নিয়েই শুধু থাকতে চাইছেন, তাদের অবস্থা খানিকটা একদৃষ্টি হরিণের মতো হয়ে যায়। লাভের লাভ খুব একটা কিছু হয় না। যারা নিজেদেরকে জঁ-র-এর জটাজালের থেকে বাইরে নিয়ে আসতে চান তাদের লাভ বেশি। এর একটা বড়ো উদাহরণ ‘গারিনের মারনরশ্মি’ নামক উপন্যাসটি। আলেক্সেই তলস্তয় উপন্যাসটা লিখছেন সায়েন্স ফিকশনের আশ্রয়ে, এটা একপক্ষের মত। সম্প্রতি এর বঙ্গানুবাদ কল্পবিশ্ব পাবলিকেশান পুণর্মুদ্রণ ঘটিয়েছে, যারা কল্পবিজ্ঞান টাইপেরই একমাত্র উপন্যাস প্রকাশ করে । আবার, যদি পুরোনো বইয়ের প্রচ্ছদ দেখা যায়, সেখানে লেখা আছে ‘রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস’, একদম জটায়ু স্টাইলে, যদিও, ‘তামসিকতার রশ্মি’ অংশে লেখা আছে --- এটি একটি কল্প-উপন্যাস। অর্থ

নারী দিবস

Image
  আমার আবার জ্বর এসেছে, আর জ্বর এলেই ধুম জ্বর। গলা এমন বসে গেছে যে, নিজের গলা শুনে নিজেই চমকে উঠছি। সঙ্গে মাথাব্যাথা, গা-হাত-পা টাটাচ্ছে । মাথাব্যাথা থাকলে একটা অদ্ভুত সেবা পাওয়া যায় ভাইয়ের কাছ থেকে। সেটা হল, ভাই সোফায় বসে। তার দুপায়ের ফাঁকে মেঝেতে একটা কুশানের ওপর আমি বসি দু-পা সামনে ছড়িয়ে । আমার দুই হাত ভাইয়ের দুই থাইয়ের ওপর দিয়ে ঝুলতে থাকে, এমতাবস্থায় ভাই আমায় চুলগুলোর মধ্যে তার দুই কাঠি-হাত আমূল প্রোথিত করে আস্তে আস্তে টানতে থাকে, অম্রুতাঞ্জন সহযোগে কপাল দিয়ে, চোখের ওপর দিয়ে আস্তে আস্তে টেনে টেনে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। ঘরে একটা গান হালকা করে বাজতে থাকে, আমি স্বর্গসুখ অনুভব করি। অনেকদিন ভাইয়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়েও পড়েছি এমনও হয়েছে যেমন, তেমন আবার, কখনও কখনও আমাদের মধ্যে এই সময় অনেক উচ্চস্তরের দার্শনিক আলোচনাও হয়েছে । যেমন আজ হল---       “এই নারী দিবসটা এখনও তোরা চালিয়ে যাচ্ছিস কেন রে? নারীশ্রমের কেসটা তো কবেই সাল্টে গেছে...”, ভাই হঠাৎই জিজ্ঞাসা করল।       “তোরা নারীদের ওপর এখনও অত্যাচার করছিস বলে।”       “তাই? করব না কি অত্যাচার?”, চুলের গোছায় জোরে টান মারে সে। “উফফফফ...

অনিবার্য মৃত্যুর পাদটীকা

Image
“মৃত্যু তো অপরিহার্য, কেউই তাকে এড়িয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু শুধু কারুর অনুপস্থিতি নয়, মৃত্যু যেন তার চেয়ে অনেক বেশি শূণ্যতা সৃষ্টি করে। ... আসলে মৃত্যু এমন একটা ঘটনা যাতে কেউই অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারে না।”       খুব কম বই-ই আছে, যেটা শুরু করার সময়ে মনে হয়েছে, না করলেই ভালো হত। আসলেই সেক্ষেত্রে বইটার মানসম্মত প্রশ্ন, কিম্বা রুচিতে আঘাত করলে বেশি করে মনে হত। কিন্তু এবারে একেবারে অন্যরকম। এমন সত্য যা’র মুখোমুখি না হওয়াই ছিল ভাল, অন্তত মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে।        অলোক কাকুর কথা আমি আগে অনেকবার বলেছি। এই অলোক কাকু যে কয়েকজনের লেখা পড়তে অত্যন্ত পছন্দ করেন, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ তার মধ্যে অন্যতম। গ্যাবোর প্রায় সবকটা বই-ই তার কাছে আছে। আমি অনেকবার বইগুলো পড়তে চেয়েছিলাম, ফিরিয়ে দিয়েছেন, বলেছেন, সময় হয় নি এখনও। মুশকিলটা হল, আমি অলোক কাকু’র প্যাম্পার্ড ছানা। 2014 সালের এপ্রিলের প্রায় শেষ অর্ধজুড়ে যার নাম পেপারে ছেয়ে গেল তিনি হলেন মার্কেজ। আমি একটু হতচকিত। গ্যাবো এমন একজন লেখক, যার সম্বন্ধে মোটামুটি ছোট-বড়-মাঝারি প্রায় সকল ভারতীয় চেনা-অচেনা লেখক কিছু না কিছু লিখছেন, শুধু তাই নয়, রীতিম

ঈশ্বরের খোঁজে, আঙ্কিক পদার্থবিদ্যার পথে পথে

Image
  আমাকে যে কয়েকটা শব্দ সবথেকে বেশি ভাবিয়েছে, তার মধ্যে ‘ঈশ্বর’ একটা শব্দ । যখন টিন এজ বয়সে ছিলাম, আমার, আর চার-পাঁচজন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর মতোই মনে হত, ঈশ্বরের অস্তিত্ব কেবলমাত্র অন্ধবিশ্বাসে। তারপর যখন পড়াশোনা আরেকটু এগোলো, বিজ্ঞানের হাত ধরে, যত এগোতে লাগলাম, দেখলাম, বিজ্ঞানের চোখে ঈশ্বরের কনসেপ্টটা একটু অন্যরকম। বিজ্ঞান ঈশ্বরকে স্বীকার করে না, অস্বীকারও করে না। যে ঈশ্বর দশহাত, কিম্বা দুইহাত, কিম্বা একটা বিমূর্ত আবহ নিয়ে ধর্ম ও দর্শনে প্রতিভাত হয়, বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণটা তার থেকে একটু অন্যরকম। আমি মূলত যে বইটা পড়ে উঠলাম, The God Equation, সেই বইটার কথা বলতে হলে, মূলত পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েই কথা বলব।       সে বিষয়ে আসার আগে কয়েকটা মনের কথা আগে বলি। ‘ঈশ্বর’ ব্যাপারটাই মূলত কল্পনাপ্রবণ মানুষের মন থেকে এসেছে। প্রাচীন মানব সম্প্রদায়কে দেখলে, বোঝা যায়, ঈশ্বর একটা গল্প, যে গল্প তাদের একজোট করে, সমাজ বন্ধনে আবদ্ধ করে, মানব সম্প্রদায়কে ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ রাখতে সাহায্য করে। ক্রমশঃ মানব সম্প্রদায় ভাগ হয়ে যায়, গল্পের তারতম্য পালটায়, বোধ-রুচি পালটায়, ঈশ্বরানুভূতিও পাল্টে যায়। ক