দেশ ১৭ই মার্চ

 


এক-একটা সময় আসে, যখন নিয়মিত পত্রিকাগুলো, হঠাৎ করেই চমকে দেয়। এখন আমার স্বচ্ছল অবস্থা, ফলে দেশ প্রায় প্রতি মাসেই পড়ি। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশ নিয়ে লেখার গরজ পাই না। কিন্তু এবারের ‘দেশ’ পত্রিকাতে চোখ বোলাতে গিয়ে বেশ ভালোই লাগল। মানবতীর্থ এবং যুগে যুগে তার পুনরাবিষ্কার শীর্ষক সম্পাদকীয় উচ্চভাষায় উচ্চমানে লেখা হয়েছে। যদিও “প্রায়শ তীর্থ সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণা ব্যাতিরেক কিছু ভাবনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।” এবং “মহাজনেরা তাঁদের চিন্তানুসারে তীর্থ এবং সেই সঙ্গে তার যাত্রা-অভিযাত্রার যে-সনাতনী ধারণা পোষণ করেছেন, তাকে সন্মান-সম্ভ্রম সহকারে মর্যাদা দান এবং তাকে অক্ষুণ্ন রাখা এক অবশ্যকর্তব্য।” বাক্যদুটো কন্ট্রাডিক্ট করল। দুটো যেন দুই বিপরীত অর্থ ইঙ্গিত করল।

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বর্তমান আধাত্মবাদ জগতের কমার্শিয়াল লেখক ও বাগ্মী বক্তা। তার কমপ্যাক্ট লেখা পড়তে ভালোই লাগে। বেশি গভীরে না গিয়েও ভাষার মাধুর্যে গভীর থেকে গভীরতম বোধের ইঙ্গিত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এবং ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত’ তার সব লেখাই ঠাকুর-মা-স্বামীজী-র প্রতি নমন দিয়ে শেষ হয়, এখানেও তাই হয়েছে। মোট কথা, লেখাটা কিন্তু যথেষ্ট সুপাঠ্য।

জয়া মিত্রের ‘তীর্থপথ’ ইনফর্মেশানে পরিপূর্ণ। যতটা গভীরতায় সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় গিয়েছেন, ততটা ব্যাপ্তিতে জয়া মিত্র লিখেছেন। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখা মনকে দ্রবীভূত করে। জয়া মিত্রের লেখা পড়তে গেলেই মনে হচ্ছিল নোটস্‌ নিয়ে বসেছি। কাল পরীক্ষা আছে। এটাকে মুখস্থ করতে হবে, যদি কমন চলে আসে!

সৌরভ গাঙ্গুলীর তীর্থক্ষেত্র ইডেন। হঠাৎ করে এই দুটো প্রবন্ধের মাঝে এমন একটা বেমক্কা প্রবন্ধের জন্য সাধুবাদ প্রাপ্য। যদিও, নতুন কিছু জানা গেল না। সৌরভ গাঙ্গুলী ভারতের অধিনায়ক ছিলেন, BCCI-র প্রেসিডেন্ট ছিলেন, জানেন কতটুকু বললে দুইদিক রেখে বলা হবে। তিনি তাই করেছেন। নিরাপদ ব্যাটিং। প্রচলিত বকুনি। পটাপট বলে গেছেন। সুমিত ঘোষ টকাটক লিখে ফেলেছেন। দেশ ম্যাগাজিন ফটাফট ছাপিয়ে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে এই হল এবারের তিনটে প্রচ্ছদকাহিনী। বাকিগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই। যেমন ছিল তেমনই আছে।

 

[ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সমর্পিতা]

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে