Posts

Showing posts from May, 2023

এক ভীমরতিপ্রাপ্তের নিজচরিতচর্চা

Image
  এক জীবনে একটা মানুষ কটা জেনারেশান দেখতে পারে? পাঁচটা, কপাল ভালো থাকলে। ঠাকুর্দার, বাবার, তার নিজের, সন্তানের, এবং সন্তানের সন্তানের... এর বেশি হলে কপাল ভালো বলতে হবে। আমি দেখেছি, একটা সময় পরে মানুষ তার সুখস্মৃতির কাছে ফিরে যেতে চায়, সেই স্মৃতিকে বাস্তবে ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখে, বিশেষত বাঙালী হলে তো কথাই নেই। “আমি শুধুই ফিরতে চাই। যেখানেই যাই, মনে হয় ফিরে আসি। উজানের গাড়ি ধরলে ভাটার দিকে চাই। ভাটার গাড়ী ধরলে ভাসতে থাকি উজানে। উল্টোটানে আমাকে ছিঁড়েখুঁড়ে খায়।... আর তো ক’টা বছর। আমি ফিরব। ঠিক ফিরব...”       কথাগুলো অনিমেষ বৈশ্য-র। ফেসবুকে নিজের মনের অভিপ্রকাশকে ক্রমাগত লিখে চলা এক সাংবাদিকের। পরের পর ছোট ছোট অনুভূতির অনুরণনের ডালি সাজিয়ে তৈরী তার নিজস্ব জীবন, যার কিছু স্বাদ নুন-মরিচের স্বাদ, তাই-ই আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন । যে নুন-মরিচে কেবল বিগত দিনেরই প্রতিভাস মেলে।       এই মানুষটি যে ছোট ছোট গদ্যে কাব্যিক সুষমায় তার নিজের অনুভূতির কথা লিখেছেন, তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ বাস করেন । এবং, অতি সযতনে তিনি তার রবীন্দ্রনাথকে বারবার ফিরিয়ে আনেন। বলতে চান, তার জীবনের যে স্বাদটিকে তিনি বার

সত্যজিৎ রায়ের দিগ্‌দর্শী কম্পাস

Image
  এক-একসময় এমন হয় যে, নিজেকে দেখে নিজেই একটু চমকে উঠি। মানে আমার এমন এমন সব সিনেমা ভাল লাগে কিম্বা বাজে লাগে যে আপামর বাঙালী সাধারণের মন্তব্যের প্রতিকূলে গিয়ে সেই সিনেমা নিয়ে কিছু বলতে বা লিখতে ভয় লাগে। না, ভুল প্রমাণিত হলে খারাপ লাগে না। যুক্তিপূর্ণ ভুলকে প্রতিষ্ঠা করলে আমার ভাল লাগে। কিন্তু, মত প্রতিষ্ঠা করার বদলে অহেতুক রামপাট আক্রমণ করে কন্ঠরোধ করব --- বাঙালীর এই চমকপ্রদ প্রথাটিকে আমি ইদানীং একটু ভয়ই করতে শুরু করেছি।       তবুও বলি, সত্যজিৎ রায় সম্পর্কিত দুটো সিনেমা --- ‘অপরাজিত’ আর ‘সাবাশ ফেলুদা’, দেখে আমি একটু দমেই গেলাম।       ‘অপরাজিত’ সিনেমা নিয়ে সে কি হইচই ! কিছুদিনের জন্যে প্রশংসার বন্যা দেখে মনে হচ্ছিল বাংলা সিনেমা একটা মাইলস্টোন পেয়েছে, অথচ সিনেমাটাতে জিতু কামালের অসাধারণ ‘সত্যজিৎ’ কপি ছাড়া আর কিছুই নেই। এমনকি ইন্দির ঠাকরুনরূপী চুনীবালা দেবীর সমরূপ কোন চরিত্রকে পাওয়া গেল না এ বাঙালাভূমিতে! একজন পুরুষকে (হর কুমার গুপ্ত) দিয়ে অভিনয় করিয়ে স্বয়ং পরিচালক নিজের গলায় ডাবিং করে চরিত্রটাকে যাত্রাপালার থেকেও বিকটাকার করে দিলেন। আর ছোটখাটো পার্শ্বচরিত্র সম্পর্কে যত কম বলা যায় তত

জামাইষষ্ঠীর একটা দুপুর

Image
  “আমি কি আসতে পারি?” একটি অতীব হাল্কা টেকো-মাথা লোক দরজার দুই ফাঁক দিয়ে ধ্যাবড়া নাক আর গোল গোল চোখ নিয়ে জিজ্ঞাসা করল। “না, পারো না, আমি আর দিদি এখন গল্প করছি, ঝামেলা কোরো না। যাও ভাগো।” লোকটা এবার গলাসমেত মুখ ঢুকিয়ে বলল, “একটু গড়াগড়ি দিতাম আর কি, খাওয়াটা জম্পেশ হয়েছে...” “আরও তো ঘর আছে, আমাদের উত্তরের ঘরটায় যাও না। এসি আছে ওখানে...”, দিদি বলল। “হ্যাঁ”, আমিও বললাম, “দিদিও ওইঘরেই তোমার সাথে রাত জেগে জেগে প্রেম করত, মনে নেই? আরও সব কি কি করত জানি না। উফফ...” (দিদি এক থাপ্পড় মারল) “ইয়ে মানে, ওই ঘরে গিয়ে ঘুমাও না, দেখবে খুব সুখের ঘুম হবে।” “তা কি হয়, তোমার দিদি তো এখানে...” বুকসমেত মাথাটার পুরোটাই ঢুকে এল এবার, “আর এতদিন পরে এলাম, তুমি আছ, দিদি আছে, একসাথে...” “মোটেই ফালতু কথা বোলো না। কতদিন বাদে দিদি এল। অনেক কথা আছে আমাদের। আজ সন্ধ্যেবেলাতেই তো চলে যাবে তোমরা...’ “বাব্বাঃ! যেন এক যুগ বাদে কথা বলছ মনে হচ্ছে। কালকেই তো রাতে দুজনায় ফোনে গল্প করে করে আমাকে আর ঘুমাতে দিলে না। তার ক্ষতিপূরণ---”, জামাইবাবু কোমর সমেত ঢুকে এল এবারে। “বোকা পাঁঠার ঝোল দিয়ে বিরিয়ানি সাঁটালে এক গামলা,

রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়: এক অসম্পূর্ণ রবীন্দ্রচেতনা

Image
  “ভগবান হতে-হতে, ভগবান হতে-হতে, ভগবান হতে-হতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাথরের মুর্তি হয়ে গেছেন। তাঁর রক্তমাংস, বাসনা-কামনা, সুখ-দুঃখ, শোক-ভোগের সমস্ত চিহ্ন ঠাকুরপুজোর ফুলচন্দনের তলায় লুপ্ত। সমস্ত বাংলা জুড়ে এক প্রাণহীণ, প্রবৃত্তিহীন, ইন্দ্রিয়রুদ্ধ রবীন্দ্রনাথের পুজো করেন তাঁর ভক্তের দল বছরে দু-দিন। ... এই রবীন্দ্রস্মরণ ও উদ্‌যাপনের একটি বহুনির্জিত চেনা ছক আছে। যেমন আছে সমস্ত অন্ধভক্তি এবং প্রতিমাপূজোর মন্ত্রে, মুদ্রায়, রীতিতে, ভানে ও আড়ম্বরে। এই ভাবেই আমরা রবীন্দ্রনাথকে ক্রমশ দূরে সরিয়ে দিয়েছি, তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছি আরোপিত দেবত্বে।”       রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্য্যের সম্পর্কে অনেক কথাই কানে এসেছে, বিশেষত বিভিন্ন সন্মানীয় সাহিত্যিককে নিয়ে তার লেখার ব্যাপারে। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তার প্রিয় বিষয়। মোটামুটিভাবে তিনি কিছু গল্পগাছাকে স্বকপোলকল্পিত কল্প-আঙ্গিকে সাজিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট নটা রবীন্দ্র বিষয়ক পুস্তক রচনা করেছেন এবং কুখ্যাত হয়ে গেছেন।       এবারের কৃত্তিবাসে তার লেখা রবীন্দ্র-প্রবন্ধে মূলত তিনি যে বিষয়টা নিয়ে লিখতে চেয়েছেন, তা হল রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তার এই ধরনের লেখাগুলোর একটি কৈফিয়ত এবং লেখ

প্রভাতসংগীতঃ রাবীন্দ্রিক উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা বিলাপ

Image
  আমার রবীন্দ্রনাথ – পর্ব ৯ অদ্ভুতভাবে প্রভাতসংগীতের রবীন্দ্রনাথ কিছুতেই যেন আমার পথ ছাড়তে চাইছে না। দশ নম্বর সদর স্ট্রীটে কিম্বা দার্জিলিং-এর বনচ্ছায়ায় তার সাথে সাথে আমিও আটকে গেছি। প্রায় একই বয়সী হওয়ার কারণেই আমি কি ওনার সাথে এমনভাবে আটকে গেছি? না কি ওনার ওই উচ্ছ্বাসের ভেতরে যে অনন্ত সৌন্দর্যের বেদনাভাস আছে, তাকে ক্ষণিক উপলব্ধি করে মুগ্ধ হয়ে গেছি --- “হাতের ধরা ধরতে গেলে ঢেউ দিয়ে তায় দিই যে ঠেলে-- / আপন-মনে স্থির হয়ে রই , করি নে চুরি।”       “ যত সুন্দর, যত মহানই হউক, রবীন্দ্রনাথ কোনো ভাবনাকে মনের কোণে স্থায়ীভাবে বাসা বাঁধিতে দেন না। তাঁহার বিরাট ব্যক্তিত্ব বিচিত্র রসধারায় পুষ্ট। ক্ষীণ অষ্পষ্ট শিশু ভাবনাগুলি ধীরে ধীরে রূপ গ্রহণ করে, গতি ও শক্তি অর্জন করে, মনোরাজ্যে বৃহৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে --- সাহিত্যে নূতন পথ বাহিয়া সেই সৃষ্টিধারা চলিতে থাকে। তাই প্রভাতসংগীতের আনন্দময় ভাবলোক হইতেও মুক্তির আকূতি শোনা গেল। ” লিখছেন প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়। উদাহরণস্বরূপ, চারটি কবিতাকে সামনে রাখলেন, প্রভাতসংগীতের শেষ চারটে কবিতা – স্রোত, চেয়ে থাকা, সাধ এবং সমাপন।       আমি তার সাথে সম্পূর্ণ সহমত

প্রভাতসংগীতের মূর্ছনায় তিনটি কবিতা

Image
  আমার রবীন্দ্রনাথ – পর্ব ৮ এই কাব্যগ্রন্থটি পড়তে গিয়ে প্রথম আমার মনে প্রশ্ন জাগে, কাব্যগ্রন্থের নামে ‘সংগীত’ শব্দটার ব্যবহারের কারণ কি? তৎক্ষণাৎ খেয়াল করি, একটি নয়, তিন-তিনটি কাব্যগ্রন্থের নামে ‘সংগীত’ শব্দটি যুক্ত। শৈশব সংগীত, সন্ধ্যাসংগীত এবং প্রভাতসংগীত। ভাল করে খেয়াল করলে দেখা যাবে, কবিতাগুলির মধ্যে যে ছন্দ আছে তা সুরেলা। এই সুরের টাইপ অতীত গ্রীসের ধারাকে বহন করে। গ্রীকরা সুর করে ছন্দোময় পদ আবৃত্তি করত বলে সেই কবিতাগুলিকে ‘লিরিক’ বলা হয়। কালক্রমে যেখান থেকে এসেছে ‘লিরিক্স’ শব্দটি। রবীন্দ্রনাথ উক্ত তিন কাব্যগ্রন্থে তার কবিতাগুলিকে আবদ্ধ করেছেন এই ছন্দোময় সুরে। ফলে শিরোনামে এসে পড়েছে ‘সংগীত’ শব্দটি। এই কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর ভূদেব মুখোপাধ্যায় তাকে ‘প্রকৃত আর্য-কবি’ হিসাবে ভূষিত করেন। মজার ব্যাপার, প্রথম প্রকাশিত বইতে দেখা যায় – শব্দটি ‘সঙ্গীত’। পরবর্তীকালে পরিবর্তিত বানান – ‘সংগীত’, যা বর্তমান রবীন্দ্র রচনাবলীতে গৃহীত রবীন্দ্রসন্মতিনুসারে। এখনকার ‘বাঙালা ভাষা বাঁচাও’-এর সদস্যরা আরেকবার ‘গেল গেল’ রব তুলবেন না কি? প্রভাতসংগীতের কালবিজয়ী রচনা ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’, এবং দেখ

তুমি আমায় ডেকেছিলে

Image
      ঘন কালো মেঘ আকাশ জুড়ে। মেঘের পরত মেঘকে ভারী করছে। আস্তে আস্তে সে নেমে আসছে মাটির বুকে। তার জলভরা যন্ত্রনাকে সে হালকা করতে চাইছে পার্থিব শরীরে। এর মধ্যে কোন সাহিত্য নেই , আছে নিখাদ বিজ্ঞান। আমি এই বিজ্ঞানের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে চাই না। সাহিত্যের মর্মবেদনায় নিজেকে ভাসিয়ে দিতে চাই।        যখন অন্ধকার হয়ে আসা ঘরের কোনে একটা হ্যারিকেন জ্বলে , তখন মনে হয় আমার সাজ আলগা করি , একটু বেপরোয়াভাবে নিজেকে বিছানার ওপর মেলে ধরি। আমার মাথা থাকুক বিছানার পাশে সুবিশাল জানালার কাছে , বালিশের ওপরে। চুল মেলে দিই , সে ঝরে পড়ুক বিছানা থেকে মেঝেতে , কিছু বা থাকুক অবিন্যস্ত। চোখ থাকুক মেঘের আবিলতায় , কান থাকুক মৃদু বজ্রগর্জনে। আর মন থাকুক পথের পাশে। যে পথ আমাকে গ্রীষ্মের সকালে কিম্বা বসন্তের দুপুরে ডাকে বটে যাযাবর হওয়ার জন্যে , কিন্তু বর্ষার বিকালে পথকেই ডাকতে চাই নিজের ঘরে... নিজের বুকে...

রবীন্দ্রনাথের নির্বাণলাভ কিম্বা সমাধিপ্রাপ্তির সাধনা

Image
আমার রবীন্দ্রনাথ – পর্ব ৭ আজি এ প্রভাতে        সহসা কেন রে পথহারা রবিকর আলয় না পেয়ে      পড়েছে আসিয়ে আমার প্রাণের ' পর! এই কবিতা সম্পর্কে তাবৎ বাঙালীকূল অবগত। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই কবিতাংশ ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’-তে পাওয়া যায় । এর ইতিহাসও অনেকেই জানেন, তবুও প্রসঙ্গহেতু, তার সারাংশটি হল--- রবীন্দ্রনাথের বয়স তখন মাত্র একুশ । অধুনা ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের আশেপাশেই দশ নম্বর সদর স্ট্রীট। সেখানে তিনি থাকতেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাদম্বরী দেবীর সাথে । ১২৮৮ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসে ভাড়া নেওয়া ওই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পরের বছর অর্থাৎ ১২৮৯ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত প্রায় সোয়া তিন মাস। এই সময়েই একদিন সকালে তার এক অতিলৌকিক দর্শন হয়, যাকে বলে vision । জীবনস্মৃতিতে তারই ভাষ্যে এই অভিজ্ঞতা পাই, “হঠাৎ এক মুহূর্তের মধ্যে আমার চোখের উপর হইতে যেন একটা পর্দা সরিয়া গেল। দেখিলাম , একটি অপরূপ মহিমায় বিশ্বসংসার সমাচ্ছন্ন , আনন্দে এবং সৌন্দর্যে সর্বত্রই তরঙ্গিত। আমার হৃদয়ে স্তরে স্তরে যে একটা বিষাদের আচ্ছাদন ছিল তাহা এক নিমিষেই ভেদ করিয়া আমার সমস্ত ভিতরটাতে বিশ্বের আলোক একবারে বিচ্ছু

কালাতীত কবি ও কালবিজয়ী লেখক

Image
১ আমি যখন এই লেখাটা শেষ করেছি, খবর পেলাম, সমরেশ মজুমদার আর আমাদের মধ্যে নেই। তার চলে যাওয়া যতটা না ক্ষতি, তার থেকেও বেশি ক্ষতি সাহিত্যের আঙ্গিনায় এক শূন্যতার সৃষ্টি হওয়া। অনিমেষ-মাধবীলতার লেখা যায় না। একমাত্র সরস্বতীর বরপুত্রই এমন নির্মাণ করতে সক্ষম। তিনি ছিলেন সেই বরপুত্র।       ‘অনিমেষ-মাধবীলতা’ সিরিজ নিয়ে অনেকেই কথা বলবেন। কারণ, তা কালবিজয়ী। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলব ‘গর্ভধারিণী’-র কথা। তার লেখা এই একটা মাত্র বই আমি আমার নিজস্ব সংগ্রহে রেখেছি। শুধু তাই নয়, আমার কিশোরী বেলার যেকটা সযত্নে রাখা বইয়ে ন্যুনতম ধুলো পড়লেও আঁচল কিম্বা ওড়না দিয়ে পরম যত্নে মুছে তার দিকে তাকিয়ে থাকি, তারই একটা বই এটা। গডব্রাদারের হাত থেকে এই বই আমার হাতে এসেছে। আজও সযত্নে রক্ষিত।       কিশোরী থেকে যুবতী হবার পথে বেশ কিছু বই আমায় সঙ্গ দিয়েছে। বয়ঃসন্ধিক্ষণ এসে বাইরের জগৎটার সম্পর্কে যে রূপকথামাত্রিক চেতনা আচ্ছাদিত করে রেখেছিল, সেখান থেকে বাস্তবের কঠোর রাস্তার ইঙ্গিত দিয়েছিল কিছু বই, তার মধ্যে এই বই অন্যতম। এই উপন্যাসটা আমি বহুবার পড়েছি, এবং পড়তে পড়তে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, জয়ীতা হতে গেলে কেবলমাত্র বুকের পাটা থ