Posts

সাদা বই হান কাং

Image
  “For God’s sake don’t die, she muttered in a thin voice, over and over like a mantra. After an hour had passed, the baby’s tight-sealed eyelids abruptly unseamed. As my mother’s eyes met those of her child, her lips twitched again. For God’s sake don’t die. Around an hour later, the baby was dead. They lay there on the kitchen floor, my mother on her side with the dead baby clutched to her chest, feeling the cold gradually enter into the flesh, sinking through to the bone. No more crying.” [Newborn Gown]       হান কাং আমায় সত্যিই বিস্মিত করছে। যত তার রচনা-অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আমি যাচ্ছি, আমার মনে হচ্ছে, এ অনন্ত মহাবিশ্বে কোটি কোটি কালো হতাশার মধ্যে যে আলোক বর্তিকা জীবনের অর্থ বহন করে চলেছে, তার এক সত্যরূপ প্রতি পৃষ্ঠার, বলা ভালো প্রতি লাইনের পরতে পরতে তিনি বয়ে নিয়ে চলেছেন। এ এক সত্যরূপ। আলো ও অন্ধকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একেই বলে ‘হাং’।       “ভগবানের দোহাই, মরে যাস না।”       হান কাং-এর ‘সাদা বই’ ...

Thinking Fast and Slow

Image
  বেশ কয়েকটা বছর বাংলা-পড়ুয়া গ্রুপগুলোতে কাটানোর পর আমি একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি, নন-ফিকশন বই আমরা বাস্তবিকই খুব কম পড়ি। আর সেই বই যদি হয় পপুলার সায়েন্সের ওপর, তাহলে তো কথাই নেই। আমরা ছুঁয়ে দেখার কথাও ভাবতে পারি না। কত রকমের নন-ফিকশন বই বের হচ্ছে! কত অদ্ভুত তার বিষয়। কয়েকটি জনপ্রিয় বইয়ের রিলস কিংবা short video-তে দেখি একটা বইকে বর্তমান সময়ে কী সাংঘাতিক গুরুত্বই না দেওয়া হচ্ছে। অতঃপর বইটা কিনলাম। Thinking Fast and Slow. লিখেছেন Daniel Kahneman. Kahneman সাহেব নোবেল পেয়েছেন। আর তাঁর এই বইয়ের বিষয়বস্তু কি অদ্ভুত! তাঁর মতে, আমাদের চিন্তাভাবনা দুইটি সিস্টেমে বিভক্ত—   System 1 → Fast Thinking স্বতঃস্ফূর্ত, স্বাভাবিক, দ্রুত, আবেগনির্ভর চিন্তা। এটাই আমাদের ‘intuition’ বা ‘gut feeling’-এর জায়গা। সুবিধা: দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করে। অসুবিধা: ভুল সিদ্ধান্ত বা bias তৈরি করে।   System 2 → Slow Thinking সচেতন, যৌক্তিক, ধীর ও বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা। এই চিন্তা আমাদের অনেকটা সময় নিয়ে করতে হয়। (অঙ্কের কথাই ভাবুন না, বাজারের মাসকাবারির টাকা আমরা কত সময় নিয়েই না হিস...

ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট

Image
 ১ চিন্তায় পড়ে গেল রাস্কলনিকভ, “কিন্তু আমার চিন্তা যদি মিথ্যা হয়ে থাকে!”—আচমকা আপনা-আপনি বেরিয়ে এলো তার মুখ থেকে। “মানুষ যদি সত্যি-সত্যি ইতর প্রাণী না হয়ে থাকে—অর্থাৎ, সাধারণভাবে, সামগ্রিকভাবে মানবজাতি যদি তা না হয়ে থাকে—তাহলে দাঁড়াচ্ছে এই যে, বাদবাকি যা থাকছে... সব... নেহাত সংস্কার... কেবল মনগড়া ভয়। বাধা-বাঁধন বলে কিছু নেই—তাই এমনটাই হওয়া উচিত...।”        লিখছেন দস্তয়েভস্কি, ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট উপন্যাসে। বেশ কয়েক বছর পরে ফিরে এলাম দস্তয়েভস্কির এই উপন্যাসের কাছে। মনে আছে, প্রথমবার যখন পড়েছিলাম, তখন ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঘটনার গতিপ্রকৃতি। আমার কম বয়সের জন্য? কম ম্যাচিউরিটির জন্য? অথবা কাল্ট সাহিত্যের বৈশিষ্ট্যই এই—প্রতিবার পাঠকের কাছে নতুন করে ধরা দেয়।        কিন্তু এবার প্রতিটা বাক্য যে আবহ তৈরি করছে, তার দিকে চোখ পড়ছে। এমন কিছু খুঁটিনাটির দিকে চোখ পড়ছে, যা আগে কখনও চোখে পড়ে নি। এই কথাগুলোতে এসে ধাক্কা খেলাম। কেন? দস্তয়েভস্কি এই কথাগুলো লিখছেন উপন্যাসের প্রায় শুরুতেই—সোনিয়ার বাবা মার্মেলাদভের সঙ্গে কথোপকথন শেষে, তাকে তার ব...

জেন আয়ার - দুটো প্রবন্ধ

Image
 ১ “আমি বড় খুশি, জেন; যখন তুমি শুনবে আমি আর নেই, আমার জন্য দুঃখ কোরো না। দুঃখ পাওয়ার ব্যাপারই নয় এ। আমাদের সবাইকেই তো একদিন মরতে হবে; আর যে অসুস্থতা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, তা ব্যথাহীন; খুব ধীরে ও কোমল স্পর্শে সে আমাকে টানছে; আমার মনে কোনো গ্লানি বা অশান্তি নেই। আমার পেছনে এমন কাউকে রেখে যাচ্ছি না, যে আমার জন্য শোক করবে। আমার শুধু বাবা আছেন, কিন্তু তিনিও হালে বিবাহ করেছেন, তাই আমার জন্য বিশেষ শোক করার সময় তাঁর হবে না। অল্প বয়সে এভাবে মারা গিয়ে আমি ভবিষ্যৎ জীবনের অনেক দুঃখ-কষ্টকে এড়াতে পারব। এই পৃথিবীতে অনেক ওপরে যাওয়ার জন্য আমার বিশেষ কোনো প্রতিভা ছিল না; সারাজীবন সবার কাছে আমি দোষী হয়েই থাকতাম।” সাহিত্যে কালোত্তীর্ণ গল্প–উপন্যাস–কবিতা–প্রবন্ধ নিয়ে রিভিউ করার ধৃষ্টতা দেখানো আমার কম্ম নয়। কিন্তু আজ যদি আমি সেইসব কালোত্তীর্ণ লেখার সামনে এসে দাঁড়াই, কী লিখব তাদের নিয়ে? এই যেমন, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস নিয়ে সম্প্রতি যে সিনেমা হল, তা ভালো–খারাপ ব্যতীত আমি দেখছি; কুসুমের ব্লাউজের নিচে মন আছে কি নেই, থাকলে তা ফ্রয়েডিয়ান না বাঙালীয়ান—তা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই বাঙালি এখনও দিন কাটাচ্ছে, আর সি...

বিদ্বান বনাম বিদুষী

Image
অসাধারণ গল্পকারদের দলে প্রীতম বসু নিঃসন্দেহে অন্যতম। ‘পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল’ কিংবা ‘চৌথুপীর চর্যাপদ’ উপন্যাস দুটোতে এটা বেশ লক্ষ্য করেছি। এবং এত সুখপাঠ্য লেখা খুব কম লেখকের লেখায় পেয়েছি। মাঝের উপন্যাসগুলো আমি পড়িনি। কিন্তু এখন ‘বিদ্বান বনাম বিদুষী’ পড়ার পর মনে হচ্ছে, বাকি উপন্যাসগুলোও পড়ে ফেলতে হবে।        এর সঙ্গে তার উপন্যাসে দেখি রিসার্চ ওয়ার্ক। এই রিসার্চ ওয়ার্ক শুধুমাত্র আমাদের ঋদ্ধ করে, শুধু তাই নয়, কৌতূহলীও করে তোলে। ইংরেজিতে যাকে বলে ফার্দার রিডিংস —সেটাতে উৎসাহিত করে।        এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু খনা। এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু টাইমলাইন—চিরপরিচিত এই চেনা ছকে এখন তাবৎ লেখককুল হাঁটছেন, বিশেষ করে যারা ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখছেন। ওই অনেকটা এভারেস্টে ওঠার মতো। এই প্যাটার্নের লেখায় এখন ট্রাফিক জ্যাম হয়ে গেছে। প্রীতম বসু সেই ট্রাফিকের মধ্যেই নিজের থ্রিলার-মেশানো ঐতিহাসিক কাল্পনিক পটভূমিতে খনাকে দাঁড় করিয়েছেন। কিরকম দাঁড় করিয়েছেন? একটা জায়গা তুলে ধরি, তাহলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে— “বেহুলা চুপ হয়ে বসে রইল। সাহেবও স্বল্পক্ষণ মৌন থেকে তার...

না রাধা না রুক্মিণী

Image
  অমৃতা প্রীতমকে চিনি তার কবিতা দিয়ে। আহা! কি সমস্ত তার কবিতা! একটা যেমন--- तुम मिले तो कई जन्म मेरी नब्ज़ में धड़के तो मेरी साँसों ने तुम्हारी साँसों का घूँट पिया तब मस्तक में कई काल पलट गए — কেমন যেন ‘বাজিল বুকে সুখের মতো ব্যথা’, আমার মনে হয় এমনভাবে কোন মেয়ে যখন বলে ওঠে তখন পুরুষের বুকের ভেতরে কি এমনি রকমই উথাল-পাথাল চলে? কি জানি, আমি মেয়ে নই, আমি জানি না। অমৃতা মেয়ে, অমৃতা কবি, অমৃতা জানে, অমৃতা শব্দগুলোর মধ্যে দিয়ে কেমন ছন্দে ছন্দে অনুভূতিগুলোকে সাজায়, রঙের পরতে পরতে যেমন একজন চিত্রকর চিত্রনির্মাণ করে, ঠিক তেমনিভাবেই। অমৃতার জীবন কবিতা, অমৃতার কথা কবিতা, এমনকি অমৃতার উপন্যাসও কবিতা... না রাধা না রুক্মিণী — উপন্যাসটি আদতে উপন্যাস নয়। এক কাব্যোপন্যাস। অমৃতা এখানে কোন মেয়ের কথা লেখেননি, লিখেছেন একজন পুরুষের কথা — কৃষ্ণ (হরেকৃষ্ণ), একজন চিত্রকর, যার জীবনে না রইল রাধা, না পেল রুক্মিণীকে। কিন্তু শুধু এই কি গল্প? না তো! অমৃতা এমন সহজ-সরল গল্প লেখেন না। অমৃতা যার গল্প লিখছেন তিনি একজন চিত্রকর, যার ছবি দেশে-বিদেশে সমাদৃত। ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা — কোথায় ন...

কোরে কাগজ

Image
  “অমৃতা প্রীতমের উপন্যাসের মূল তত্ত্ব হলো মানবিক অনুষঙ্গ। নারী-পুরুষের সম্পর্কের জটিলতা এবং সেই জটিলতার অরণ্যে হারিয়ে-যাওয়া তথা পরম্পরাগত সীমার বাইরে দাঁড়িয়ে-থাকা স্ত্রী এবং পুরুষ। বহুধা পরিভাষিত সম্পর্ক থেকে পৃথক। চিরন্তন অনুবন্ধের উল্লিখিত নামের বাইরে সম্পর্কের সৃজন এবং খণ্ডন। অমৃতা অনাদিকাল থেকে সযত্নে লালিত পরম্পরাকে মুহূর্তে খারিজ করেছেন। এই প্রক্রিয়ার অবস্থান্তরই তাঁর সাহিত্য চেতনার কেন্দ্র বিন্দু।”       বলছেন ডাঃ স্বরণ চন্দর। তাই কি? তিনি আরও বলছেন,       “'ডাক্টর দেব' (১৯৪৯) থেকে 'কোরে কাগজ' (১৯৮২) অমৃতা ২৬টি উপন্যাস লিখেছেন তেত্রিশ বছরে। বিভিন্ন সমাজে ভিন্ন ভিন্ন স্ত্রী-পুরুষ বিষম পরিস্থিতিতে, বিচিত্র বহু নর-নারীর সম্পর্ক এবং সম্পর্কহীনতার কথা লিখেছেন। সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়েছে মধ্যবিত্ত চরিত্রের কনট্রাডিকশন বা দ্বন্দ্ব। পরিবেশ পরিস্থিতির প্রতিকূলতা নয়-তাঁর চরিত্রগুলি নিজেদের স্বভাব, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভাল-মন্দ সবকিছুর মিশ্রণ নিয়ে পাঞ্জাবী উপন্যাসের ইতিহাসে মাইলস্টোনের সম্মান এনেছে। পরিস্থিতি পরিবেশ উপ...