বিদ্বান বনাম বিদুষী
“বেহুলা চুপ হয়ে বসে রইল। সাহেবও স্বল্পক্ষণ মৌন থেকে তারপর
নীরবতা ভাঙল 'বেহুলা, একটা কথা বলব?'
'কী কথা সাহেব?'
'টুমি এত সুন্দরী, টুমি সাজলে খুব সুন্দর লাগবে। টুমি সাজো
না কেন?'
'আমি যে বিধবা সাহেব, সমাজ বলে বিধবাদের সাজতে নেই। বিধবারা
সিঁথি কেটে চুল আঁচড়াতে পারে না। মাথা কামিয়ে ফেলতে হয় আর তা না হলে সিঁথি না কেটে
মাথার পিছনে চুলে একটা গিঁট দিতে হয়। আমি এসব করিনি। আমাদের সমাজে বিধবাদের নিজের সুখদুঃখকে
অস্বীকার করে পরিবারে টিকে থাকতে হয়। আর এই অসহনীয় বেঁচে থাকা থেকে মুক্তি পেতে বিধবারা
কায়মনোবাক্যে ঈশ্বরকে আঁকড়ে ধরে নিজেদের প্রতি উদাসীনতার পথ খোঁজে। আমাদের সাধ আহ্লাদ
বলে কিছু থাকতে নেই।'
'বেহুলা টুমি এত বুদ্ধিমতী, টুমি আবার বিয়ে কর।'
বেহুলা মলিন হেসে বলল, 'একবার পালিয়ে গায়ে আগুন দেওয়া থেকে
বেঁচেছি। কী দরকার সাহেব আবার নিজেকে ঝামেলায় ফেলার। আমাদের দেশে তো আর তোমাদের দেশের
মতো মেয়েদের সম্মান করে না। আমাদের দেশে মেয়েরা লেখাপড়া শিখলেই পুরুষের চক্ষুশূল হয়ে
যায়।'
'আমাদের দেশেও কম না। এসব সংবাদ চাপা পড়ে যায়,' ডেভিড বলল।
'ইউরোপে গত তিনশো বছরে কত এরকম গুণবতী নারীকে ডাইনি আখ্যা দিয়ে বিচারের নামে গণহত্যা
করা হয়েছে তার ইয়ট্টা নেই। প্রায় পাঁচ লাখ নারীকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। যে
নারী পুরুষের কাছে পোষ না মানে, সেই বিদ্রোহী নারী হয়ে যায় ডাইনি। সব দেশেই পুরুষের
সূত্র আর অনুশাসনের ফাঁস নারীকে গলায় বেঁধে চলতে হয়…”
ছন্দ নিয়ে চমৎকার একটি বই আছে
ReplyDelete