ডঃ দেব
অমৃতার প্রথম উপন্যাস ডঃ দেব। তার প্রথম উপন্যাস তিনি লেখেন
১৯৪৯ সালে। প্রথম উপন্যাসে অনেকে চমকে দেয়, অনেকে ধস্তাধস্তি করে। অমৃতার এই উপন্যাস
নেহাতই বালখিল্যপনা। আমার এক কাকা, যিনি ‘ডঃ দেব’ পড়েছেন, আমি পরেছি শুনে বলল, টিপিক্যাল
অশোক কুমার টাইপ সিনেমা লিখেছেন। যথেষ্ট রকমের ভুলতে চেষ্টা করার মতো উপন্যাস।
আমি ভুলতে চেষ্টা করছি।
ডাঃ স্বরণ চন্দন এই উপন্যাসের একটা
ছোট্ট বিবরণী দিয়েছেন, গল্পের প্লটটা আর কি, আমি সেটাই এখানে লিখে দিচ্ছি, কারন আমার
নিজেরই উপন্যাসটা নিয়ে বলতে মন চাইছে না। স্বরণ সাহেব লিখছেন---
অমৃতার প্রথম উপন্যাস 'ডাক্টর দেব'
(১৯৪৯)। দেব আর মমতার প্রেমের ফসল তাদের সন্তান রঞ্জু। কিন্তু অভিভাবকেরা দেব আর মমতার
অসামাজিক বিয়ে মেনে নেয় না। মমতার বিয়ে হয়ে যায় জগদীশের সঙ্গে। একটি কন্যার জন্ম দেয়
মমতা। কিন্তু দেব এবং প্রথম সন্তানের স্মৃতিকে সজাগ রাখার জন্যে মেয়ের নামও রঞ্জু রাখে
মমতা। আরও কিছুদিন পরে অপরাধবোধে পীড়িত মমতা জগদীশকে ছেড়ে চলে যায়। এদিকে ততদিনে রাজকুমারী
এসে গিয়েছে দেবের জীবনে, কিন্তু হৃদয়ের দরজা তার বন্ধ। রাজকুমারীর বিয়ে হয় সোমনাথের
সঙ্গে। কৃষ্ণলাল আর সরলার সন্তান মন্যু দেবকে যথেষ্ট ভালবাসে। আসে ১৯৪৭। পারিপার্শ্বিকতা
মন্যুর চেতনায় ভরে দেয় সাম্প্রদায়িকতার বিষ। ডা: দেব পাঞ্জাবী সমাজের ভাই 'কানহাইয়া'
হয়ে সামনে আসেন। দেব, জগদীশ, সোমনাথ প্রতিটি পুরুষ পাত্রই সদর্থক। মানবিক চেতনায় উজ্জ্বল।
মমতা, রাজকুমারী এবং সরলা মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের সঙ্গে সংঘর্ষ করে করে বিজিত-আদর্শের
প্রতিমূর্তি। পরম্পরাগত সম্পর্কই সাধারণতঃ সমাজে স্বীকৃত কিন্তু আধুনিক মনোভাব এবং
চেতনার সঙ্গে সংঘর্ষে সমাজ কাউকে নিষ্কৃতি দেয় না।
মোটামুটি এই হল ব্যাপার। অমৃতার বয়স
অল্প, সেই কারনেই কি এই উপন্যাসের সমস্ত চরিত্রগুলোর ওপর তার এত মায়া? সবকটাকে একেবারে
রামায়ণের যুগ থেকে ধরে এনে বসিয়ে দিয়েছেন। সবাই যেন সবকিছু বুঝতে পেরে গিয়ে যাবতীয়
সহানুভূতি নিয়ে চরিত্রগুলোর ওপর সঠিক জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছেন। এবং এটা করতে গিয়ে
চরিত্রগুলো এত বেশি শুদ্ধ-বুদ্ধ-অপাপবিদ্ধ হয়ে গেছে, চরিত্রগুলোর মুখোমুখি হলেই আমার
কেমন একটা অস্বস্তি লাগে।
===============
ডঃ দেব
অমৃতা প্রীতম
অনুবাদকঃ অসিত সরকার
অমৃতা প্রীতম রচনা সম্ভার
দাম ও প্রকাশক অজ্ঞাত
Comments
Post a Comment