ম্যানহ্যাটন

 


“Everybody gets corrupted. You have to have a little faith in people.”

1985 সালের ম্যানহ্যাটন কিম্বা 2024 সালের কলকাতা।

নাগরিক সভ্যতার উদ্ভ্রান্ত দৌড়ের মধ্যে কত কথা, কত তত্ত্ব, কত আলোচনা, কত বুদ্ধির বাহারি ঝিলিক। সমস্তটাই মানুষকে অবশেষে ক্লান্ত করে। সে আসলেই একজন খাঁটি সম্পর্কের মধ্যে নিজের অস্তিত্বকে খুঁজতে চায়। ব্যবহার করতে করতে এবং ব্যবহৃত হতে হতে, মেকি চিন্তার মধ্যে থাকতে থাকতে এবং মেকি বিশ্বাসকে বিশ্বাস করতে করতে ঠিক কোনটা আসলেই সে, সে ভুলে যায়।

এই গল্পে আইজ্যাক এক মারাত্মক ট্যালেন্টেড মানুষ। বইয়ের পাতায় পাতায় যে চিন্তাধারার স্রোত বয়ে যায়, তার মধ্যে থেকে সে খুঁজতে থাকে শহর ম্যানহ্যাটনকে। তার বিয়ে ভেঙে যায়। সম্পর্ক হয়ে এমন একজন মেয়ের সাথে যার বয়স মাত্র সতেরো। মেয়েটি তার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেলেও সে মেয়েটির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পায় না। একটু সাহস করেই বলা যেতে পারে, আমাদের সমাজকে একটু সরিয়ে দিয়ে, বয়সের অনিশ্চয়তার মধ্যে ভালবাসার ভিতকে সে প্রোথিত হতে দেয় না। সত্যিই তো, মাত্র সতেরো বছরের মেয়ে সে। আর তার নিজের বয়স?

বিয়াল্লিশ।

আইজ্যাকের বন্ধুর প্রেমিকাকে তার প্রেমিকা করে নেয় বন্ধুরই বিয়ে বাঁচাতে। কিন্তু এখানে সমস্যা বন্ধুত্বে নয়। সমস্যা আইজ্যাকের চিন্তাস্রোতে। আইজ্যাক তার জটিল মানসিক তত্ত্ব ঘাটতে গিয়ে ভুলেই যায় যে সে ব্যবহৃত হচ্ছে। তার মেধা তাকেই আস্তে আস্তে ক্ষয়িত করে দিচ্ছে।

তার প্রাক্তন স্ত্রী যখন আত্মজীবনী লিখছেন, তার সম্পর্কে কি বলছেন? প্রসঙ্গত, এই একটুখানি চরিত্রে অভিনয় করেছেন, আমার প্রিয় অভিনেত্রী, মেরিল স্ট্রীপ।

“Jewish liberal paranoia, male chauvinism, self-righteous misanthropy and nihilistic mood of despair. He had complaints about life, but never any solutions. He longed to be an artist, but balked at the necessary sacrifice. In his most private moments, he spoke of his fear of death, which he elevated to tragic heights when in fact it was mere narcissism.”

জীবনের অর্থ এবং সুখের চাবিকাঠি খুঁজতে খুঁজতে, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অর্থ খুঁজতে খুঁজতে, সত্য এবং আত্মজ্ঞানের পিছনে ধাওয়া করতে করতে কখন যে সম্পর্কে অস্থায়িত্ব তাকে ক্লান্ত করে তোলে, সে বুঝতেও পারে না। যত সে নিজেকে খুঁজতে থাকে বইয়ের পাতায় কিম্বা ইন্টয়ালেকচুয়াল জগতে, ততই তার বিশ্বাস এবং বিশ্বস্ততা হারাতে থাকে। এই এতো বড়ো নগরীতে সে হারিয়ে যেতে থাকে। এক সময় সে নিজেই নিজেকে ভয় পেতে শুরু করে। সে একা থাকার সাহস হারিয়ে ফেলে।

আর তখনই তার কাছে প্রেম আসে, এবং বলে, অপেক্ষা করো। পরীক্ষা দাও। ধৈর্য ধরো। অনেকটা পথ চলতে হবে। তার জন্যে প্রস্তুত হও।

সর্বোপরি মানুষের ওপর বিশ্বাস রাখো।

উডি অ্যালেনের সিনেমার রিভিউ লেখা আমার কম্মো নয়। আর এই সিনেমায় স্বয়ং উডি অ্যালেনই অভিনয় করেছেন। ফলে সিনেমাটা দেখতে দেখতে আমার যেটুকু অনুভব হল, আমি শুধু সেটুকুই বলতে পারি। আমি সেটুকুই বললাম।

======================

Manhattan

Directed By: Woody Allen

Cast: Woody Allen, Mariel Hemingway, Diane Keaton, Meryl Streep

OTT Platform: Amazon Prime

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে