মানুষ জেগে থাকছে



শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকতে কি ভালোই না লাগে! শাড়ির আঁচলটাকে গাছ কোমর করে পেঁচিয়ে পাড়া দাপিয়ে হল্লাবাজি করে যখন বাড়ি ফিরি, মায়ের একটা চাপড় ব্লাউজ ভেদ করেও পিঠে জ্বালা ধরিয়ে দেয়। বাবা মুচকি হাসে। বোধ করি বুঝতে পারে, আর তো বেশিদিন নেই। বয়স বড়ো বালাই। তারও এমন একটা দিন ছিল, যখন ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে তারা দুই ভাই মিলে চড়ুই পাখী ধরত। আজ তা করলে লোকে সাইকায়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে যাবে। এতএব, মেয়ে যে বয়েসটা পার করেও করতে চাইছে না, তার অন্তরের উদগ্র ইচ্ছার মতো, কিচ্ছুক্ষণ তার অস্তিত্ব না হয় থেকেই যাক তার জীবনে। 

কেবল আমার এই ডানপিটে দিশেহারা উড়নচণ্ডী রূপ দেখে আমার হতভাগা বলে, তোকে দেখে মনে হচ্ছে, বিয়ে না করলে আমার এমন কি আর ক্ষতি হবে? আমি জানি, উত্তরে তার টি শার্ট ভেদ করে আমার অমোঘ চপেটাঘাত লাল দাগ রেখে গেছে, ঠিক আমার মায়ের মতো। 

হতভাগার সাথে হেটে হেটে যখন ফিরছি, বিশ্বকর্মা পূজোর প্যান্ডেল থেকে, কিম্বা প্যান্ডেল সংলগ্ন ছেড়ে আসা 'গাদী' খেলার কোর্ট থেকে, তখন সন্ধ্যে নামছে। আস্তে আস্তে পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়ছে, কিন্তু মানুষ জেগে থাকছে...


Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে