অতঃপর
অতঃপর বালিকা জ্বরে পড়িল।
১০৩.২
এই তীব্রতায় ভিজে গামছার প্রলেপের
ভেজাচিহ্ন থাকে না
পরক্ষণেই, বরং, এক তীব্র তাপনির্মমতায় সমগ্র বিশ্বজীবনী লোহিততপ্ত রাঙামুকুর হয়ে ওঠে।
মাথার দুপাশের রগ দপদপ করতে করতে বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে চায়। সে যন্ত্রণার আপাততীব্রতা
যেন তূণীর থেকে সহসা বের হয়ে আসা জ্যা-মুক্ত তীরের তীব্র বেদনার্ত কষাঘাত। যন্ত্রণায়
গোঙ্গাতে থাকি। যন্ত্রণামুক্তির উদ্দেশ্যে, না কি যন্ত্রণাকেই সান্ত্বনা দিতে চাই?
দস্তয়েভস্কি'র কয়েকটা লাইন মনে পড়ে, “...
এই অবস্থায় নীরবে মানুষ গায়ের জ্বালা মেটায় না, গোঙাতে গোঙাতে মেটায়। কিন্তু এই গোঙানীর
মধ্যে থাকে শিল্পনৈপুণ্য, ভুক্তভোগী সূক্ষ্মভাবে অপরের অনিষ্ট কামনা করতে করতে
গোঙায় এবং দেখবেন গোঙানীর সঙ্গে এই অনিষ্ট কামনাকে মেলানোটাই আসল ব্যাপার। এর
মধ্যে ভুক্তভোগী সুখ প্রকাশের উপায় খোঁযে, সুখানুভূতি না হলে সে গোঙাবেই না, এটাই
মোদ্দা কথা...”
আমি কেন
গোঙাচ্ছি? এমনিই দস্তয়েভস্কির লেখা আমায় অসুস্থ করে দেয়, তার ওপর এই অদ্ভুত এক
সুররিয়েল অবস্থানের মধ্যে তিনি চলে এসে আমায় আরও অসুস্থ করে তুলছেন। যার অস্তিত্ব
আছে, ব্যক্তিত্ব নেই...
আমি আবার
তীব্র উত্তপ্ততার স্বপ্নিল মায়াবিহারে বিহারিনী হয়ে উঠি---
একস্তুপ
তালার ওপরে একটা বালিঘড়ি। বালিঘড়িতে কোন বালি নেই। কেবল চাবি আর চাবি... ঝরে ঝরে
পড়ছে। কিন্ত কোন তালার সাথেই তার সংযোগ নেই। সময়ের ঘেরাটোপে সব বন্দী। মুক্ত থেকেও
বন্দী। মহাকালের পায়ের কাছে স্তুপাকারে পড়ে রয়েছে। দূরের আকাশে শনির বলয়ের মধ্যে
এক দরজা খুলে যায়। সেই দরজা খুলে রামধনু পথ বেয়ে নেমে আসে কে? সে বালিঘড়িটাকে ঠেলছে।
ঠেলছে তো ঠেলছেই... ঠেলেই চলেছে... ঠেলেই চলেছে... ঠেলেই চলেছে...
তুমি কে?
Comments
Post a Comment