আষাঢ়স্য পঞ্চম দিবসে

 



আষাঢ়ের পঞ্চম দিবসের সকালে ঘ কালো অবিচ্ছিন্ন মৃদুমন্দ মেঘ ভেদ করে আশ্বিন বলল, আমি এসেছি। পৃথিবী চমকে উঠল। শ্যামল কোমল রূপের বদলে এ কোন তীব্ররূপ! আমিও চমকালাম।

রাস্তার পিচের ভ্যাপসা গন্ধ ছাপিয়ে তখন দুপাশের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে যুদ্ধরত ঘাসের মধ্যে থেকে সোঁদা মাটির গন্ধ ম ম করছে। তারাও গেছে থমকে। রসসিক্ত মাটিতে এ কোন উপদ্রব? এ কেমন গন্ধ? এখন ডুবে যাওয়ার সময়। কোথায় আকাশপারে থাকবে উতল হাওয়া, তার বদলে সূর্যদীঘল রুদ্ররূপ! ফাঁকা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, তারের জালে বন্দী আকাশটাকে দেখতে দেখতে আমি বুঝতে পারছি না, আমি কেন?

আমি কেন?

খানে আমি কেন?

আমার কি কোন প্রয়োজন আছে?

মৃত্যু এসে যদি আমায় এখন এক ঝটকায় টেনে নিয়ে যায়, কোথায় নিয়ে যাবে? আমার থাকা আর না থাকাতে কি কোন পার্থক্য হবে? আমি না থাকলে কি জগতের কোন অস্তিত্ব থাকবে? না কি আমার অস্তিত্ব না থাকলে জগতের একবিন্দু আসবে যাবে না?

দুটোই ঠিক। দুটোই ভুল।

যেমন করে এই আশ্বিন জানে না, একটু পরেই আষাঢ় পিছন থেকে মন্দমন্থর পায়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাপটে ধরে হাপিস করে দেবে তাকে, নিজের বুকের মাঝে, চিহ্নমাত্র থাকবে না র। স্মৃতিতেও আসবে না কারো, যে এমনিভাবে আশ্বিন এসেছিল, হঠাৎ করে, রাজার মতো...

রাস্তার মাঝে আমি, একা, সামনে আকাশ জোড়া তুমি। আমার পাশে এসে দাঁড়ালো বাইক, চড়নদার আমার হতভাগা। আজ আমাদের অভিসার। বর্ষার কুঞ্জাভিসার নয়, আশ্বিনের ঝোড়ো পথ অভিসার।

তাই কি সে এসেছিল, আশ্বিনের বেশে, আমারই জন্যে?

Comments

  1. ঠিক যেমন মনের মাঝে কোনো আনমন...
    স্মিত স্মৃতি, মগ্নক্ষণের গান
    অবুঝ বটের ঝুরি,
    ক্ষরিত শব্দ যত মিশেছে ওপর শুন্যতায়

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে