পুরস্কার

 


কিছু পুরস্কার জীবদ্দশায় পেতে ইচ্ছে করে না। মনে হয়, মরণকালের জন্য জমিয়ে রাখি। মনে হয়, মরণের পরে যদি অন্য কোন জীবন থাকে, তাহলে তার জন্যে তোলা থাক।

এ জীবনে কি আমি অনেক কিছুই পেয়েছি? জীবন তো শেষ হয় নি। তবুও, এটুকু পথ এসেই বোঝা যায়, কেমন কাটবে আমার বাকি জীবন। লেখার প্যাটার্নের মতো মনের প্যাটার্ন তৈরী হয়, মন বুদ্ধির প্যাটার্ন তৈরী করে, আর বুদ্ধি জীবনের প্যাটার্ন খুঁজে বের করে।

ঠোঁটের ওপর আলতো চুমু, কিম্বা হাতের আঙ্গুলে আঙ্গুল আলতো জড়িয়ে থাকা, জ্বরতপ্ত কপালে শীতল হাতের স্পর্শ, গ্রীষ্মের দগ্ধদিনে আমবাগানে বন্ধুনীসমভিব্যাহারে কাসুন্দির ফোয়ারা ছোটানো, অথবা প্রিয়জনের কিনে আনা শাড়ীর পাড়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে দেওয়া --- কম কি কিছু পেয়েছি?

ঈর্ষাকাতর দৃষ্টি কিম্বা সাপের হিসিহিসানির মতো শীতল থ্রেট, পরজীবীর মতো পরচর্চায় ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়ার বীভৎস উল্লাস কিম্বা গিরগিটির মতো রঙ বদলে যাওয়া --- এও তো দেখেছি।

পেছন থেকে যে ছুরি বুকের হৃৎপিন্ড ভেদ করে, সে ছুরি হৃদপদ্ম ভেদ করতে পারে কি? 

যা পাইনি তা-ই কি বড়ো হল? যা পেয়েছি তাই বা কম কি? তেমন করে হাত বাড়িয়েছি, সুখ না পাই, আনন্দ পেয়েছি।

বঞ্ছিত হই নি। জীবন বঞ্চিত করে নি আমাকে। তাই যা কিছু পুরস্কার আমি জমিয়েছি, তার পায়ের কাছেই দিতে ইচ্ছা করে।

মরণের পরে, মরণে পাড়ে...

=====================

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সমর্পিতা

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে