জ্বরের ঘোর এবং একটা দৃশ্যপট

 



ঘুম, তন্দ্রা কিম্বা ঘোর --- এক অদ্ভুত অবস্থা। এমন কিছু চোখের সামনে ঘোরাফেরা করে যার কোন আপাত ব্যাখ্যা মাথায় আসে না।

জ্বরে পড়েছিলাম এই কদিন, গা-হাত-পা-মাথা ব্যাথা। এগুলো কোন সমস্যা নয়। বেশ আদর এবং সেবা পাওয়া যায়। একদিক থেকে ভালোই লাগে। সমস্যা হয় যখন জ্বর ১০১ এর ওপরে উঠে যায়। মনে হয় চোখ-মুখ দিয়ে আগুনের হলকা বের হচ্ছে, পাশাপাশি বাকি শরীর ঠান্ডায় ঠকঠক করে কাঁপছে। আমি তখন এক ঘোরে চলে যাই। বাস্তব আর কল্পনার মাঝামাঝি অবস্থাএবং সেই ঘোরের মধ্যে অদ্ভুত কিছু জিনিস দেখতে থাকি।

এবারে তিনবার এমনই এক ঘোরে চলে গিয়েছিলাম। এবং তিনবারই, অদ্ভুতভাবে, একই জিনিস দেখলাম। দেখলাম এক অন্ধকার পৃথিবী। তার মাঝে আলোর পথ। সে পথ কালোয় মিশেছে দূরে বহুদূরে। আমাকে যেতে হবে এই আলোর পথ ধরে। দূরে কোথাও যেন আগুন জ্বলছে। সে আগুন নরম আলোর আগুন, না ভয়ঙ্কর বিধ্বংসী আগুন বোঝার উপায় নেই। আমার সেখানে যেতে ভয় করছে। বুঝতে পারছি না, আমার যাওয়া উচিৎ হবে কি হবে না, গেলে ধ্বংস অনিবার্য, না কি অন্য কিছু আমার জন্যে অপেক্ষা করছে? অথচ আশেপাশের অন্ধকারের মাঝে এড়িয়ে যাওয়ার পথ খোলা নেই।

আমি প্রতিবারই এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে ঘেমে-নেয়ে জেগে উঠি। অনুভব করি, ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে গেছে। আবার যখন জ্বর ফিরে আসে, আবার আমি আলোর পথের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকি, আতঙ্কিত অবস্থায়।

আজ সকালে, জ্বর মোটামুটি যখন ছেড়েছে, স্যুপ খেতে খেতে মনে করার চেষ্টা করছিলাম, এমন স্বপ্নের অর্থ কি? মনে হল দৃশ্যটাকে কোথাও যেন এই মরজগতে আমি দেখেছি। ভাই কম্পিউটার খুলে দিল। তিনদিন পরে কম্পিউটারে বসলাম। ভাই দরজায় পাহারায় বসল। মা পাছে চলে এসে দক্ষযজ্ঞ বাধায়! শরীর খারাপ থাকলে, মা বাদে, আর সকলেরই দয়ার শরীর।

যা ভেবেছিলাম তাই। তিন বছর আগে একটা ছবি তুলেছিলাম। তার Back Up কম্পিউটারে রাখা আছে। সেই ছবিটাকেই একটু এদিক এদিক করে আমার অবচেতন মন আমার ঘোরের মধ্যে আমায় নিয়ে খেলা করেছে। যার কারণ এবং অর্থ আমি এখনও খুঁজে পাই নি...

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে