শিশি-বোতলের জায়গাটা একটু শক্ত ঠেকল

 



ভিগো মর্টেনিসেনকে মনে আছে?

ঠিক মনে আসছে না?

যারা ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’-এর ট্রিলজিটা দেখেছেন তারা কি কখনও এরাগনকে ভুলতে পারে? কিম্বা ‘এ ডেঞ্জারাস মেথড’ সিনেমার সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে?

 

ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টকে মনে আছে?

নিশ্চয় ---

সেটা স্বাভাবিক। ‘টোয়াইলাইট’ সিরিজের নায়িকাকে কে ভোলে? অন্তত যারা একবার দেখেছেন।

 

লিয়া সেইডুয়াক্স?

না!

জানি। মনে থাকার কথাও না। ‘ব্লু ইস দ্য ওয়ার্মেস্ট কালার’ কজন দেখতে পেরেছেন পুরোটা? হাতে গোনা লোকই থাকবে। অমন রগরগে লেসবিয়ান সিনেমা হলে আসামাত্র হইচই পড়ে গিয়েছিল। জেমস বন্ডের ‘টুমরো নেভার ডাইস’ বা ‘নো টাইম টু ডাই’তে থাকলেও চোখে না পড়াটাই স্বাভাবিক। পড়লেও একটু একটু। আমার কিন্তু মনেই পড়ে না জেমস বন্ডের সিনেমা দুটোয় কোন চরিত্রে ছিল। বরং তাকে বেশ মনে পড়ে ফরাসী মুভি ‘ডিসেপশান’-এ। কি মারাত্মক অভিনয়! ‘ব্লু’-তেও অবশ্য অভিনয় ছিল নজরকাড়া।

 

তো এই তিনজন মিলে অভিনয় করেছে ‘ক্রাইম অফ দ্য ফিউচার’ সিনেমাতে। এ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি সম্প্রতি রিলিজ হয়েছে ‘মুবি’তে। আর ডিরেকশান দিয়েছেন ডেভিড করেনবার্গ, লিখেওছেন তিনি। এই করেনবার্গ-ই ‘দ্য ডেঞ্জারাস মেথড’ বানিয়েছিলেন। কি সাংঘাতিক সিনেমা! এখনও রেখে দিয়েছি আমার কাছে। ভাবলাম এরকম সিনেমা ছাড়া যাবে না। দেখেই ফেলি।

 

সিনেমাটা সায়েন্স ফিকশান। ভবিষ্যতের কোন এক সময়ে মানব সম্প্রদায় পলিউশন, মিউটেশান আর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অদ্ভুত এক প্রজাতিতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। যেমন, একটি বাচ্চা প্লাস্টিক খায়এই বাচ্চাটির বাবা চায় মিউটেশানকে স্বাগত জানিয়ে যাবতীয় প্লাস্টিক খাওয়া মানুষ শিখুক। ফলে পৃথিবী বাঁচবে নতুন করে। এখন যারা প্লাস্টিক খেতে পারে না, তারা পুরোনোপন্থী। তারা এই প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে বাঁচতে চায়। এর মাঝে লিয়া আর ভিগো এক ধরণের আর্টের প্রচলন করে বিখ্যাত হয়ে গেছে। তারা মানুষের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে এক-একটা রূপ দেয়, কিম্বা কারো চোখ আর মুখ বন্ধ করে দিয়ে সারা দেহে কানের পর কান জুড়ে দিয়ে এক ধরণের আর্ট দেখায়। মোট কথা তারা বেশ সেলেব্রিটি টাইপের দম্পতি।

এদিকে সিনেমার প্রথমেই ছেলেটাকে তার মা মেরে ফেলেছেলেটার বাবা চায় মৃত ছেলেটাকেও আর্টের প্রদর্শনীতে সবাইকে দেখানো হোকদেখানো হোক নতুন প্রজন্ম কীভাবে প্লাস্টিক খেয়ে বাঁচবে। এ একটা বৈপ্লবিক কাজ হবে। মোট কথা প্রাচীনপন্থী আর নব্যপন্থীর মাঝের একটা টানাপোড়েন। তারপর যে ঠিক কি হল, খোদায় মালুম।

 

     অভিনয় নিয়ে সত্যিই কিছু বলার নেই। চুটিয়ে অভিনয় করেছেন প্রত্যেকে। কিন্তু ওই, সুকুমার রায়ের ভাষায়, শিশি-বোতলের জায়গাটা সত্যিই বেশ শক্ত ঠেকল। ঠিক কি যে বানাতে চাইলেন, কী যে বোঝাতে চাইলেন সেটাই ঠাহর হল না। যে মেটামরফোসিস ব্যবহার করে সিনেমাটা দর্শকের সামনে রাখলেন তা আমার মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেল। আসলেই সম্পূর্ণ সিনেমাটা জুড়ে যে আবহ তৈরী করতে চেষ্টা করলেন তা আমার আদৌ বোধগম্য হল না।

 

আপনারা কি বুঝতে পেরেছেন?

পারলে আমাকেও একটু বুঝিয়ে দিন না...

 

===============================

Crimes of the Future

Cast: Viggo Mortensen, Léa Seydoux, Kristen Stewart

Director: David Cronenberg

Duration:  107 Mins

OTT Platform: MUBI

Comments

Popular posts from this blog

যে বুকে আগুন জ্বলে

শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে

জেরক্স কপির উন্নত ভার্সানে ‘আবার প্রলয়’ এসেছে