পঞ্চায়েত দুই
ওয়েব সিরিজ আমি একটু কমই
দেখি। এমন নয় যে আমার ভাল লাগে না। কিন্তু আমার বেশি ভাল লাগে সামাজিক
পরিপ্রেক্ষিতে নির্মিত ওয়েব সিরিজ। ভূত, খুন-খারাপি, থ্রিলার --- এগুলো আমাকে
কোথাও ক্লান্ত করে। যে সিনেমায় মস্তিষ্কের খাদ্য নেই সেই সিনেমা আমার কাছে একটু কম
গুরুত্ব পায়।
পঞ্চায়েতের
প্রথম সিজন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। দ্বিতীয় সিজনের শেষ পর্বের শেষ আধাঘন্টার আগে অবধি
সেই মুগ্ধতা বজায় রইল। পঞ্চায়েতের তৃতীয় সিজনের অপেক্ষায় রইলাম। কবে আসবে, কে
জানে। কিন্তু আসুক, আমি হৃদয় থেকে চাই।
ভারতের একটি
সাধারন গ্রামের সহজ সরল দৈনন্দিন গল্পগাথা নিয়ে ‘পঞ্চায়েত’। অহেতুক জটিলতা, বা
রাজনৈতিক টানাপোড়েন, বা ইন্টালেকচুয়াল কথাবার্তা দিয়ে ভারগ্রস্থ করে নি বলেই এত
সুন্দর হয়তো বা। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেকার মন্দ-ভালোর টানাপোড়েনকে
এত সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে, যে আমার এক-একসময় মনে হয়েছে, এতো আমার পাশের বাড়িরই
গল্প বলছে।
তা বলে কি
আর মন্দ কিছু নেই? আছে। একদম শেষে অতটা ইমোশনাল ড্রামা না ঢুকালেই হয়তো ভাল ছিল।
কিন্তু তাতে কি আসে যায়? কোন কিছুই তো আর পার্ফেক্ট নয়। মাঝে মাঝে এমন হয় যে, খুব
ভাল কিছু দেখলে তার মধ্যেকার মন্দের কথা বলতে ইচ্ছা করে না।
অভিনয় বিশেষ
করে বলব চারজনের কথা --- নীনা গুপ্তা আর রঘুবীর যাদবকে বাদ দিয়ে। এই দুজনের কথা কি
বলব? অভিনয়টা এদের রক্তে। যত বেশি বলা হবে ততই যেন কম কম পড়বে। আমার তো প্রথম
সিজনে একটু রাগই হয়েছিল নীনা গুপ্তা খুব বেশি সময় ছিলেন না বলে। কিন্তু এবারে সেই
দুঃখ মিটে গেছে।
জিতেন্দ্র
কুমার, ফয়সল মালিক, চন্দন রায় আর ছোট্ট একটা চরিত্রে সুনীতা রাজোয়ার! সুনীতা
রাজওয়ারের কিছু কিছু এক্সপ্রেশান মনের ভেতরে গিয়ে ধাক্কা মারে, সে জুতোর গুতোর
অভিমান হোক, কিম্বা ঝগড়ায় আর হাতাহাতিতে। আর বাকি দুজন তো আমাকে বিস্মিত করেছে। এত
সহজ সরল অভিনয়ে কোথাও অতিঅভিনয় মনে হয় নি। আর জিতেন্দ্র কুমার প্রথম থেকেই এই ওয়েব
সিরিজের নায়ক। অভিনয় করেছেন নায়কের মতোই।
মাঝে মাঝে
মনে হয়, প্রচুর মারামারি, একশন, থ্রিলার এইসব মনগড়া জগৎ থেকে একটু সরে এসে যদি
এরকম সহজ সরল স্বাভাবিক কিছু ওয়েব সিরিজ বানানো হয় তাহলে ক্ষতি কি?
Comments
Post a Comment