অনুবাদ পত্রিকা এপ্রিল ২০২২
ম্যাগাজিনের শুরুতেই একটা কথা লেখা আছে, “১৯৭৫ থেকে অনুবাদ-সাহিত্যের একমাত্র বাংলা পত্রিকা”
আমি ঝটকা খেলাম। এত বছর ধরে একটা
পত্রিকা চলছে, অথচ এই পত্রিকাটা নিয়ে তেমন খবরাখবর বা আলোচনা আমার চোখে পড়ে নি।
যাই হোক, পাতা উল্টালাম ‘অর্ধেক আকাশ’-এর।
বিদেশী এবং আঞ্চলিক
লেখক-লেখিকাদের লেখার অনুবাদ নিয়ে এই পত্রিকাটি তৈরী। আর অনুবাদ কি সব! কৃষ্ণা
সোবতি, সুধা আরোরা বা বিজয়দান ডেঠার অনুবাদ রীতিমতো চোখে জল এনে দেয়। অর্পিতা
মণ্ডল, মিতা দাস কিম্বা অর্চন চক্রবর্তীর অনুবাদ সত্যিই অনবদ্য। পার্ল এস বাকের
একটিই উপন্যাস আমার পড়া। এবার পড়লাম একটি গল্প। অসাধারণ। অনুবাদ যথেষ্ট যত্ন নিয়ে
করা। রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তীর মতো অনুবাদক থাকলে আর ভাবনা কি।
পাশাপাশি কবিতা আর প্রবন্ধের
ক্ষেত্রটিও বেশ ভালো। যদিও আমাকে সবচেয়ে বেশি চমকে দিয়েছে নন্দিতা ভট্টাচার্যের
সাক্ষাৎকার। আমি ওনার নাম আগে শুনিনি। এই ম্যাগাজিনের দৌলতে ওনার নাম জানতে পারাটা
একটা বড়ো প্রাপ্তি বৈ কি।
দুটো
জায়গা নিয়ে আমার বক্তব্য আছে। প্রথম, বানান ভুল। চোখে পড়ার মতো। কাগজের কোয়ালিটি
ভালো না হলেও তা হয়তো কোথাও মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সম্পাদনায় গাফিলতি হলে পড়তে
একটু সমস্যা হয় বৈ কি।
আর
দ্বিতীয়ত, ধারাবাহিক উপন্যাস। কেন ‘কাইট রানার’? আমি যতদূর জানি এই বইটার অনুবাদ
অন্তত বাংলাদেশেই হয়েছে চারবার। করেছেন শওকত হোসেন, কবীর চৌধুরী, খান মসলেহ এবং
জামাল নাসের। এর মধ্যে শওকত হোসেনের ডিজিটাল ভার্সান অতি সহজেই নেটে পাওয়া যায়। তাই
সাধারণ পাঠকের এই অনুবাদটা অন্তত ধারাবাহিকভাবে পড়তে ইচ্ছা না হওয়াটাই স্বাভাবিক।
একই কথা হিটলারের আত্মজীবনীর ক্ষেত্রেও। ‘মেইন ক্যাম্ফ’ও অনুবাদ দুই বাংলাতেই একাধিকবার
হয়ে গেছে।
এছাড়া কিন্তু
সব মিলিয়ে এই ম্যাগাজিন বাংলা প্রকাশনার জগতে আমাদের মতো ইংরাজী না জানা পাঠিকার
কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এতএব, এই পত্রিকার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
Comments
Post a Comment