আজীব দাশতান
চারটে গল্প।
চারটে ঘটনা। যেখানে সম্পর্কগুলোর টানাপোড়েন
চলে। কিন্তু একটু অন্য ছকে। সম্পর্কের একটু অন্যরকম টানাপোড়েন দেখানোর চেষ্টা হয়েছে
এই সিনেমাতে।
প্রথম গল্পঃ মজনু। পরিচালকঃ শশঙ্ক
খৈতান। বিয়ের রাতে স্বামী স্ত্রী-কে বলে তার এ বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু বাধ্য
হয়েই করতে হয়েছে। এরপর এই সম্পর্কে আসে একটি ছেলে, যার বাবা স্বামীটিরই গাড়ীর চালক
ছিল। এই স্ত্রী-টির সঙ্গে একটা সম্প্ররক তৈরী হয়। এই স্বামী এবং স্ত্রী দুজনের বংশই
উচ্চবংশ – মানে উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের নেতার পুত্র-কন্যা। ফলে ব্যপারটা ছেলেটার এবং
স্ত্রী-টির পক্ষে রিবেল টাইপের। কিন্তু টুইস্ট আসে স্বামীটির কাছ থেকে। অভিনয় মোটামুটি।
কিন্তু চেনা ছক। মনে তেমন দাগ কাটে না।
দ্বিতীয় গল্পঃ খিলোনা। পরিচালকঃ রাজ
মেহেতা। একটি বস্তিতে থাকে দুই বোন। বড় মিনাল বাড়ী বাড়ী কাজ করে, সম্পর্ক আছে একজন
জামা-কাপড় ইস্ত্রী করা সুশীলের সাথে। ছোট বোন বিন্নি। স্কুলে পড়ে। ঘটনাচক্রে বিনোদ
আগরওয়ালের বাড়ীতে কাজ নেয় মিনাল, উদ্দেশ্য নিজের বাড়ীতে কারেন্টের লাইন চালু করা। বিনোদের
নজর পড়ে মিনালের ওপর। ঘটনা এগিয়ে চলে বিনোদের বাচ্চাটার নিখোঁজ হওয় থেকে। এটা আরও সাদামাটা।
মিনালের চরিত্রে নুসরতকে কোনভাবেই মানায়নি। দুধে-আলতা রঙের কাজের লোক বড়োই বেমানান।
তৃতীয় গল্পঃ গিলি পুচ্চি। পরিচালকঃ
নীরজ ঘেয়ান। কর্মক্ষেত্রে আলাপ হয় ভারতী আর প্রিয়ার। একজন দলিত, অপরজন উচ্চবংশের। অফিস
রাজনীতির শিকার ভারতী, প্রিয়ার হঠাৎ উচ্চপদে আসীন হওয়াটা মেনে নিতা না পরলেও একটা অদ্ভুত
ধরনের সম্পর্ক তৈরী হয় দুজনের মধ্যে। এই টানাপোড়েন এগিয়ে চলে সময়ের সাথে সাথে। এবং
একসময় বোঝা যায় সুবিধা নেওয়া এবং সাবমিসিভ হওয়া দুই জাতের যেন ভবিতব্য। তবুও এর মধ্যে
একটা টার্নিং পয়েন্ট আছে। সাদামাটা না হলেও এটা একটু ভালই লাগে। বিশেষত কঙ্কনা সেনশর্মা
আর অদিতি রায়ের অভিনয়। কঙ্কনা আমার অন্যতম প্রিয় অভিনেত্রী। কিন্তু এখানে তার যতটুকু
করার ছিল তার মধ্যে ততটা মনে ছাপ ফেলতে পারে নি। যদিও ভাল লাগে।
চতুর্থ গল্পঃ আনকহি। পরিচালকঃ কায়োজে
ইরানী। দুই বোবা’র গল্প। নাতাশা আর কবীর। নাতাশা বিবাহিতা। কিন্তু তবুও কবীরের সঙ্গে
সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। একসময় চমক লাগে কবীরের। সবটা জানতে পারে। চেনা ফর্ম্যাট। চরিত্রেরআ
বোবা-কালা। কিন্তু, এই একটি গল্পই বারবার দেখতে ইচ্ছে করে। কারণ, গল্পটা বলা হয়েছে
চমৎকার। কোথাও কোন অতিনাটকীয়তা নেই। অতি অভনয় নেই। যত দিন যাচ্ছে শেফালী শাহের আমি
ফ্যান হয়ে যাচ্ছি। চোখ আর মুখ দিয়ে যে কীভাবে অভিনয় করতে হয় তা দেখিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন
উনি। সাথে মানভ কৌলও চমৎকার। ছোট্ট চরিত্রে টোটা রায়চৌধুরী দারুন। সারা অর্জুনও চমৎকার।
পরিচালক অপূর্ব সুন্দরভাবে গল্পটাকে বলেছেন ক্যামেরা দিয়ে। মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো।
তো এই হল আজীব দাস্তান। শেষ গল্পটা
ছাড়া মনে রাখার মত তেমন কিছু নেই এই সিনেমায়। ‘আজীব’ই বটে।
Comments
Post a Comment