কৃত্তিবাস এপ্রিল ১৫
১। “ফেসবুকে বেরোক আর
ছাপার অক্ষরে বেরোক, সাহিত্য মানে সাহিত্যই। ফেসবুকে ভালো লেখাও হয়, ট্রাশও হয়।
আগে ফেসবুক ছিল না, তখনও ছাপার অক্ষরে ট্র্যাশ বেরোত।”
২। “শুরুটা সকলকেই কোথাও
না কোথাও থেকে করতে হয়। আমাদের আগের প্রজন্ম লিটল ম্যাগাজিন থেকে করেছিলেন, আমরা
ফেসবুক থেকে করছি।”
৩। “বর্তমানে সবার
বাড়ীতে কম্পিউটার, তখন আমি একা যদি টাইপ রাইটার নিয়ে খটখট করি সেটা যেমন অস্বাভাবিক
লাগবে; তেমনই ফেসবুকের যুগে এটাই যখন প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে জনসংযোগের, তখন
আমি ফেসবুকের লেখা পড়ি না বলাটাও হাস্যকর হয়।”
১৫ই
এপ্রিল কৃত্তিবাসের পাক্ষিক সংখ্যার প্রথম নিবেদন – নূতন সাহিত্য না বটতলা? বিষয়টা
যথেষ্ট গোলমেলে। উপরোক্ত তিনটে মন্তব্যে পরিস্কার যে এই বিষয়টা নিয়ে বেশ ঝড় বইয়ে
দিয়েছে এবারের পত্রিকাটি। যে নিক্তিতে এটা মাপার চেষ্টা করা হয়েছে সেটায় অংশগ্রহণ
করেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, অমর মিত্র, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিনায়ক
বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভাস রায়চৌধুরী, সমরেশ মজুমদার, আবুল বাশার, হিমবন্ত
বন্দ্যোপাধ্যায় এমনকি শংকর। নিক্তির উল্টোদিকে দেবারতি মুখোপাধ্যায়, অর্পিতা
সরকার, অভীক সরকার, মৌমিতা ঘোষ, পল্লবী সেনগুপ্তেরা। অবাক লাগে যাদের লেখা পড়ে বড়
হয়েছি তাদের অনেকে ফেসবুক কি তা-ই জানেন না! এতটা উদাসীনতা! এটা এগিয়ে যাওয়া, না
পিছিয়ে পড়ার অশনি সংকেত! আবার যশোধরা রায়চৌধুরী কিম্বা সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কথায় যে ঝাঁঝ থাকে তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট যে এই বিষয় নিয়ে সাহিত্যের দিকপালরা
শুধু দুটি ভাগেই ভাগ হয় নি, স্পষ্টতই দ্বিখন্ডিত। উল্টোদিকে দেবারতি
মুখোপাধ্যায় এবং অনিমেষ প্রামাণিকের সাক্ষাৎকারেও উলটো জবাবের ঝাঁঝ। রূম্পা দাস
ভট্টাচার্য আর দিপঙ্কর সেনের প্রতিবেদন খুবই ভাল। তবে দীপঙ্করবাবু সমীক্ষাটা
কতজনকে নিয়ে করেছেন জানতে ইচ্ছা হয়। সমীক্ষার ছবিটা সঙ্গে দিলাম।
দুঃখের
বিষয়, কবিতাগুলো কহতব্য নয়, একমাত্র তসলিমা নাসরিন ছাড়া। বিশেষ করে সুবোধ সরকার আর
রণজিৎ দাস। কিছু কবিতা হয়তো সত্যদৃষ্টিতে ভালো, কিন্তু বড্ড কড়া। সেখানে কবির গোপন
ইচ্ছেটাও মিশে থাকে বলে সেটা একান্তই তার হয়। পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য না-ও হতে
পারে। শুভাপ্রসন্নের কাজ কিন্তু মন্দ নয়। কবিতাগুলোর ইলাস্ট্রেশান আমার বেশ ভালো
লেগেছে।
এবারে
গল্প আছে পাঁচটা। লিখেছেন সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, নলিনী বেরা, অমিতাভ সমাজপতি,
রাজশ্রী বসু অধিকারী এবংহামিরুদ্দিন মিদ্যা। গল্পগুলো নিয়ে বিশেষ কিছুই বলার নেই।
তবে সুন্দর লেগেছে কামরুজ্জান্মানের খলিল জিবরানের ওপর লেখা এবং অর্জুন গোস্বামীর
লেখা ‘জেলখানায় সংস্কৃতি’ নামক নিবন্ধ দুটি। সব মিলিয়ে মন্দ লাগল না এবারের
ম্যাগাজিনটা।
Comments
Post a Comment