"যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু"
এইসব অন্ধকারকে ভাষায় লিখব কি করে? এখানে মানুষ মানুষকে আড়চোখে দেখে। মন এখানে নদীর মতো বহমান নয়। নর্দমার ঘুর্ণির মতো পঙ্কিল আবর্তে হারিয়ে যায়। এখানে নরকঙ্কালের হাত আমার কাঁধে হাত রাখে। এখানে ঘাসের বনে আনমনে খেলতে খেলতে বালিকা হারিয়ে যায়। এখানে তীর বেঁধা পাখী ‘কাঁচা বাদাম’ গান গায়।
কোথায় যেন আমরা হারিয়ে গেছি। সে হারানো
পথের মধ্যে আরোও পথ এসে কাটাকুটি খেলে। ড্রোন দিয়ে তোলা সে পথের ছবি কেমন জানেন? পাশের
বাড়ীর বউটার পিঠে আগের দিন রাত্রে তার বরের হাতের চাবুক যেমনভাবে আছড়ে পড়েছিল, ঠিক
তেমনি। পথ পথকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, গন্তব্যের মরীচিকা চক্রাকারে মানুষকে ঘুরিয়ে মারছে।
মানুষ ‘জম্বি’দের মতো হেটেই চলেছে... হেটেই চলেছে। তার যেন কোন লক্ষ্য নেই, উদ্দেশ্য
নেই, দিন নেই, রাত নেই...
তবুও এখানে পাথরে ফুল ফোঁটে। সে ফুল
ঔদ্ধত্যের সঙ্গে পরম বিক্রমে নিজের অস্তিত্বের কথা জানিয়ে দেয়। পরক্ষণেই মিলিয়ে যায়
ফসিল হয়ে। অস্তিত্ব থাকে, ব্যাক্তিত্ব থাকে না।
এখানে কেউ নেই। কোথাও কেউ নেই। থেকেও
কেউ নেই। অস্বাভাবিক সময়, অস্বাভাবিক মানুষ, অস্বাভাবিক ভবিষ্যৎ। মন-বুদ্ধি-চিন্তা-বাক্য
সব কেমন ছন্নছাড়া। এমনকি নারী, এমনকি পুরুষ, এমনকি প্রেম। অন্ধকারে চোরাপথের বাঁকে
একবার হারিয়ে গেলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনকি বিদ্বেষ। চিন্তার জটিল সংকটে বিদ্বেষ
কেমন যেন ফেনিল মদের মত। বিষাক্ত গ্যাঁজলা আছে, স্বাদ নেই।
একেই কি ডিপ্রেসন বলে? না কি ফ্রাস্ট্রেশান?
না কি অন্য কিছু? ডাক্তার এখন বাংলার ঘরে ঘরে। সবাই জানে অসুখ করলে প্যারাসিটামোল ৬৫০
খেতে হয়। কেউ জানে না অসুখটা কি।
শুনছি করোনার চতুর্থ ঢেউ আসছে। চীনে
লকডাউন চলছে। আমেরিকা লক ডাউনের পথে যেতে চলেছে আবার। আমাদের এখানে এপ্রিল-মে মাসে
সার্জ এলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিচ্ছিন্নতাবাদ এখন আর রাশিয়া-ইউক্রেনে নয়, ইজরায়েল-প্যালস্তাইনে
নয়, আফগানিস্তানেও নয়। প্রত্যেকটা মনের জগতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। আর তার
জটিল চক্রবুহ্যে আমার ‘আমি’ কুয়াশার আলো-অন্ধকারে পথ হাতড়ে জটিল এক আবর্তে ঘুরে ঘুরে
আর্তনাদ করে চলেছে...
[ছবি ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত]
Comments
Post a Comment