Posts

Showing posts from August, 2025

রসিদি টিকট

Image
  “একদিন খুশওয়ান্ত সিং কথায় কথায় বলেন, 'তোমার আবার জীবনী কি, শুধু এক-আধটা অ্যাকসিডেন্ট। লিখতে বসলে রেভিনিউ স্ট্যাম্পের পেছনে লিখে শেষ করা যায়। রেভিনিউ স্ট্যাম্প সম্ভবত এজন্যই বলেন, অন্যান্য টিকিটের সাইজে পরিবর্তন হয়, কিন্তু রেভিনিউ স্ট্যাম্পের সাইজ একই থাকে।        ঠিকই বলেছিলেন—যা কিছু ঘটেছে, মনের স্তরেই ঘটেছে এবং সে সবই কাহিনি-নভেলের মাঝে ঢুকে গেছে। তাহলে বাকি আর কী থাকে?        তবুও কয়েক ছত্র লিখছি—এমন কিছু, যা জীবনের লেখা-জোখা কাগজে যেন ছোট্ট এক রেভিনিউ স্ট্যাম্প এঁটে দিচ্ছি—কাহিনি-নভেলের লেখাজোখা কাঁচা রসিদকে পাকা রসিদ করার জন্য।” লিখছেন অমৃতা। তার জীবন তাহলে কেমন? শুধুই কি এক টুকরো রসিদে টিকিট? না তো! সেই টিকিটের পরতে পরতে ছবির পর ছবি। সেই ছবি যুক্ত করেছেন জনা কয়েক মানুষ — সাজ্জাদ হায়দার, শাহির, ইমরোজ… আমি যে অনুবাদ পড়ছি, ‘আমার কাছের বন্ধুরা’ — রসিদে টিকিট -এর থেকে একটু আলাদা। কতটা আলাদা সেটা হয়তো ভাষা সংসদ থেকে যে অনুবাদ বেরিয়েছে রসিদি টিকিট নামে, সেটা পড়লে বোঝা যাবে। কেন আলাদা? এই বইটার ভাষান্তর করেছেন যিনি, সেই সুব...

কুকুরপ্রেমীদের নতুন আন্দোলন?

Image
  পথকুকুরদের নিয়ে আদালতের একের পর এক রায় বেরিয়েছে। প্রথম রায়, তার বিরুদ্ধে আপিল, তারপর সংশোধিত রায়—কোনোটাই কুকুরপ্রেমীদের মন জয় করতে পারেনি।      অধিকাংশ কুকুরপ্রেমী এই রায় মেনে নিতে নারাজ। কেউ কেউ আইন অমান্য আন্দোলনের কথাও ভাবছেন। মহাত্মা গান্ধীর পর স্বাধীন ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন হয়েছে, তবে তার প্রায় সবকটিই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সম্ভবত এই প্রথম, একেবারে গৃহস্থালি স্তরে আমরা দেখতে যাচ্ছি non-violent, non-cooperation আন্দোলনের রূপরেখা। কুকুরপ্রেমীদের কাছে এটা এক বিরল সুযোগ—নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে ভারতীয় ইতিহাসে লিখে রাখার। হাজার হোক, গান্ধী আমাদের 'ফাদার অফ নেশন' বলে কথা। তার পথই আমাদের পথ। আর প্রেমে কি না হয়। দশটা খুন করে ফেলা যায়, আর এ তো... দুটো মানুষ আহত হলে বা মারা গেলে কিই বা যায় আসে? তারা তো কুকুর নয়, তারা মানুষ। কুকুর অবলা, তার ওপর পরিবেশ পরিস্থিতি ইত্যাদি ইত্যাদি...      বিরোধীদের ব্যঙ্গের মুখেও এনাদের পড়তে হচ্ছে। বলা হচ্ছে—“কুকুর এতই প্রিয় হলে, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে লালন-পালন করুন।” অথচ এঁরাই কুকুরপ্রদত্ত নিরাপত্তা নিতে যত...

পিঞ্জর

Image
  “যে কোনো মেয়ে, সে হিন্দু হোক কি মুসলমান, যে সব মেয়েরা ফিরে গিয়ে আপন আপন ঘরে ঠাঁই পাচ্ছে, মনে করো তাদের সঙ্গে পূরোর আত্মাও সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে গেছে।”        দেশভাগের ক্ষতচিহ্ন আর তার থেকে যে বিষ ছড়িয়েছে, আজও আমরা তার ভুক্তভোগী। অন্তত আমাদের আগের জেনারেশন। আমাদের মধ্যে কিংবা আমাদের পরে এর প্রভাব অতটা সুদূরপ্রসারী হবে না, এবং আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাবে। পড়ে থাকবে এক টুকরো মর্মান্তিক ইতিহাস।        এই ইতিহাস আমাদের গল্পে-গাঁথায়। এই ইতিহাস আমাদের চারপাশের রাস্তায়, বাড়িতে, ক্ষেতে-খামারে। ভারত এবং প্রতিবেশী দুটি দেশই এই ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে, আজকের যুগে সঠিক ও সটীক প্রমাণের কারণে যাকে আর অস্বীকার করা যায় না। অমৃতা প্রীতম দেশভাগের শিকার। অমৃতা দেশভাগের পরে দেশভাগের কুটিল পরিণতির সাক্ষী। অমৃতা রচনা করেছেন ‘পিঞ্জর’।        এই উপন্যাস বহুপঠিত। বহু আলোচিত। আর তাই আমার বলার জায়গা খুব কম। অহেতুক আবেগপনায় ভাসতেও মন চায় না। কারণ, অনেক আবেগ আমরা খরচ করে চলেছি অহেতুক। নিজেদের আবেগী বলে গর্ববোধ করি বটে, বুঝতে চাই না—এই আবেগ ...