Posts

Showing posts from March, 2024

কশেরুকার মালার বাঁধনে এক নাস্তিক পণ্ডিত

Image
  ইংরাজীতে ‘COMPACT’ বলে একটা শব্দ আছে। ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ সেই অর্থেই কমপ্যাক্ট লেখা। ঝরঝরে, নির্মেদ এক উপন্যাস, যার জন্যে পড়াশোনা করতে হয়। ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ গত চার বছরের অন্যতম জনপ্রিয় এবং আলোচনাপ্রিয় উপন্যাস। মাথা চটকিয়ে দেওয়া এমন আর কোন উপন্যাস এযাবৎ মনে পড়ে কি? না। অন্তত এতদিন ধরে সাধারণ পাঠকসমাজে এতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নি আর কোনও উপন্যাস। বর্তমানে এর ২৩-তম মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসটির রহস্যময়তা, বিশেষত থ্রিলার উপাদান এবং রোমান্স উপাদান একে এক মহতী জায়গায় নিয়ে গেছে। আমার মতে, মাঝখান থেকে দর্শনের উপাদান মার খেয়ে গেছে। এর কারণ লেখক নন। পাঠক সমাজ। দর্শনের জায়গাগুলি নিয়ে সুগভীর আলোচনা তেমন করে আমার অন্ততঃ চোখে পড়ে নি। অধিকাংশ পাঠক সেই জায়গায় চোখ উলটে দিয়েছেন, অর্থাৎ, “শিশি-বোতলের জায়গাটা শক্ত ঠেকেছে”। পরিবর্তে এর রোম্যান্টিক আখ্যান এবং থ্রিলার উপাদান একে জনপ্রিয় করে তুলেছে। সাথে যুক্ত হয়েছে তিন সময়কালের ওভারল্যাপিং, যা বাংলা সাহিত্যে এযাবৎ কেউ করেন নি। এই ওভারল্যাপিং-এর জায়গাটাকে অনেকে রিলেটিভিটি, বিগ ব্যাং, ফিজিক্স ইত্যাদি শব্দ দিয়ে পুরণ করতে গিয়ে কৌতুহলে উপন্যাস না

সময়কালের উজানে কতকগুলি ঢেউয়ের জল

Image
  একটি গাছ, একটি পাখি, একটি যন্ত্রণা, একটি রুমাল, একটি ছবি, একটি ঘড়ি, একটি চিঠি, একটি চিত্রলিপি, একটি সম্পর্ক এবং একটি ঘুমপুতুল। এই হল সাদিয়া সুলতানার কতকগুলি জিয়নকাঠি। দেশভাগ, দাঙ্গা, মুক্তিযুদ্ধের যন্ত্রনাকাতর ক্যালাইডোস্কোপ। এই দিয়েই হয়েছে ‘উজানজল’-এর নির্মাণ। সাদিয়া সুলতানার মুন্সিয়ানা ঠিক কোথায়? কতকগুলি চিহ্ন, কতকগুলি আখর, কতকগুলি ইঙ্গিতের মধ্যে দিয়ে গল্পের ঠাস বুনোট। মেদবর্জিত গল্পগুলি তোমার, আমার এবং তাদের পুর্বপুরুষের, এসে পৌছচ্ছে আমাদের কাছে, আখরকথায়, উত্তরপুরুষের কাছে। আমাদেরকে, এখনও, চিহ্নিত করা হয় ‘ওপার বাংলার’ বলে, বাঙাল বলে, রিফিউজি’র জেনারেশান বলে। আমরা কি সম্পূর্ণ ভুলতে পেরেছি ওপার বাংলাকে? আমাদের বাবা কিম্বা ঠাকুর্দা-ঠাকুমার রক্তের মধ্যে থাকা ঘাসফুল-হিজলের গন্ধের ঢেউ কি আমার রক্তের মধ্যেও নেই? --- “নিজের দেশ ছেড়ে অন্যের দেশে রিফিউজি পরিচয়ে নতুন করে জীবন-জীবিকা শুরু করার দিনগুলোর স্মৃতি হাতড়াতে হাতড়াতে ভুবন মিত্র শাফায়েতকে মিহি গলায় কত কী বলছেন, মানুষটার অস্ফুট কণ্ঠস্বর ভেদ করে শাফায়েত সব শব্দ বুঝতে না পারলেও তার কন্ঠের অকৃত্রিম আবেগ ধরতে পারে।” আর শুধু কি আমরা।