Posts

Showing posts from December, 2023

পরস্পরকে ভালোবাসো

Image
  “Love One Another” এই একটি কথাই হয়তো আজ গোটা বিশ্ব-বিভীষিকার মোড় ফেরাতে পারে। এই একটি কথার নীল-প্রয়োজনীয়তা এখন ভেসে বেড়াচ্ছে প্যালেস্তাইনের অলিতে গলিতে। এই একটি বাক্যের বাকরুদ্ধ ধুসর জীবন আলেখ্য ইউক্রেনের রাস্তায় রাস্তায়। এই তিনটি শব্দের যথাযথ মর্মার্থবোধ মণিপুরের ঘরে ঘরে কালো বিষাদে ঢেকে আছে। এই একটি কথার মর্মার্থ পাশ্চাত্য বুঝেছিল ১৯৪৫-এর পর। তারও প্রায় উনিশশো বছর আগে, চুনাপাথরের তৈরী চার দেওয়ালের ঘরে জনা কয়েক আকাট গন্ডমুর্খকে বলেছিলেন যিনি, তিনি রক্তাক্ত হয়েছিলেন কাঠের ক্রুশে। একটানা সাত বছর ধরে চলা বিশ্বযুদ্ধে তখন গোটা ইউরোপ ধুঁকছে। ১৯৫০ সালে, যুদ্ধ পরবর্তী বিদ্ধস্ত এবং লোভাতুর দেশগুলোর মধ্যে যখন এক ঠান্ডা যুদ্ধের অশনি সংকেত প্রোথিত হচ্ছে, তখনি একটা উপন্যাস, বারাব্বাস, জনচেতনার মাঝে স্থান করে নিতে চাইল। পরের বছরেই, বিশেষত, উক্ত উপন্যাসের জন্য, সুইডিশ এই লেখক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। লেখকের নাম P ä r Lagerkvist, রোমান হরফেই লিখলাম, কারন, ইদানীং, বানান পুলিশের দৌরাত্ম্যে ভাববস্তু নির্মমভাবে ঢেকে যাচ্ছে।       আমরা কি বারাব্বাসকে চিনি? যীশুখ্রীষ্টকে যার বদলে ক্রুশব

আনন্দ জুয়েলার্সের একটি মুক্তোর মালা

Image
  “Climate change is like death, no one wants to talk about it.”   ‘Exploitation’ শব্দটা আমাকে মাঝে মাঝে বড়ো অতিষ্ঠ করে তোলে। আমরা, সুযোগ পেলেই, প্রতিদিন, কীভাবে যে শোষণ করতে পারি, তা বলে বোঝানো দুষ্কর। এই শোষণ কি শুধুই মানুষের প্রতি মানুষের? না তো! মনুষ্যেতর জীবের প্রতি, এমনকি আমাদের পরিবেশের প্রতিও। শোষণ ‘মানুষ’ জীবটার দৈনন্দিন জীবনের একটা বড়ো পারিচালক মাধ্যম হয়ে পড়েছে। খুঁটিনাটিভাবে প্রতিটা মানুষের আচরণ দেখলে মনে হওয়া অসম্ভব নয় যে, Exploitation , বর্তমানে, শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতোই, আমাদের জীবনে অপরিহার্য, বেঁচে থাকার জন্য। এই Exploitation –এর সবচেয়ে বড়ো শিকার, পরিবেশ। ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ বড়ো বালাই। সারা পৃথিবী জুড়ে অনেক কিছু আবেদন, নিবেদন, বাদ-প্রতিবাদ হয়ে চলেছে। আশানুরূপ লক্ষণ কিছু দেখা যাচ্ছে না। প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস তো মৃত্যুর কয়েক মাস আগে একটা ইন্টারভিউতে বলেই ফেলেছিলেন, আমাদের অন্য গ্রহে, অন্য কোথাও, বিশেষ করে মঙ্গলে, জনবসতি বিস্তার করার কথা ভাবনাচিন্তায় আনাটা আশু প্রয়োজন। ইলন মাস্ক তো একধাপ এগিয়ে বলেই ফেললেন, আমাদের উচিৎ, মঙ্গলে একগাড়ি, থুড়ি, একরকেট পরমাণু বোমা

কিন্তু তবুও...

Image
  কাব্যি করে ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়’ লাগতেই পারে, কিন্তু একটা মানুষ ক্ষুধায় নিজের নৈতিকতা বিসর্জন দিতে পারে কি?       এ নিয়ে ভুরি ভুরি লেখা আছে। কিন্তু সাধারণ মানব মনস্তত্ত্বে এর খোঁজ এমন একজন নোবেলপ্রাপ্ত লেখক করেছেন, যার লেখার মধ্যে দিয়ে এক বিষন্ন খোঁজে যেতে যেতে আমিও এই বিতর্ক থেকে সরে আসতে পারছিলাম না।       উপন্যাস ন্যুট হ্যামসুনের ‘ক্ষুধা’ তথা ‘ Hunger’.       উপন্যাসটিকে আধুনিক ধারার উপন্যাসগুলির মধ্যে একটি প্রধান সাহিত্যকর্ম বলে ধরা হয়। এটি পরবর্তীকালে জেমস জয়েস কিম্বা কাফকা থেকে কাম্যু এবং কেলম্যান পর্যন্ত সাহিত্যিকদের গল্প উপন্যাসকে প্রভাবিত করেছে। মনোজগতের এক বিষন্নতা, আমার পড়তে পড়তে, সত্যিই কোথাও কাফকাকে মনে পড়ে যাচ্ছিল ।       যে উপন্যাসের লেখক নোবেল পুরস্কার পান তার লেখার বাঁধুনি কিম্বা সৃষ্টিধারা নিয়ে আলোচনা করা আমার কাছে খানিকটা বাড়াবাড়িই লাগে। বিশেষত, ইদানীং, অনেক বাঙালী পাঠক, লেখক, এমনকি ইন্টালেকচুয়াল গোষ্ঠী মনে করেন, নোবেল, বুকার, পুলিৎজার ইত্যাদি পুরস্কারের সাথে কেবল এবং কেবলমাত্র রাজনীতি মিশে আছে, কিম্বা, এরকম একটা পুরস্কার সাহিত্যের মানদণ্ড হতে পা

এক দেশ, তিন জাতি, সারা বিশ্ব, এবং যুদ্ধ

Image
  “জাতি ছাড়া একটি দেশ আছে, ঈশ্বর তার বিচক্ষণতা ও দয়া দিয়ে দেশবিহীন একটি জাতির দিকে আমাদের ধাবিত করছেন।” ~ লর্ড মেলবোর্ন       এই মুহূর্তে, সম্ভবত, সমগ্র বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে, একটাই বিষয় আর আর সকল বিষয়কে ছাপিয়ে গিয়েছে। ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ দুতরফা হচ্ছে না। হচ্ছে একতরফা। অত্যধিক শক্তিশালী ইজরায়েল যেভাবে ঝাপিয়ে পড়েছে প্যালেস্তাইনের ওপর, কোনভাবেই মনে হচ্ছে না যে, সামান্যতম লড়াই করার ক্ষমতাও তাদের আছে। গোদের ওপর বিষফোঁড়া, ইউরোপ-আমেরিকার অধিকাংশ দেশ নীরবে ইজরায়েলকেই সমর্থন করছে। প্যালেস্তাইনের ওপর, সম্ভবত, তামাম মুসলিম বিশ্বের দরদী সমর্থন থাকলেও, এই মুহূর্তে যুদ্ধের ক্ষেত্রে, তাদের বজ্রনির্ঘোষণা তেমন কিছু নেই। মাঝখান থেকে অসংখ্য সাধারণ মানুষের হীমশীতল দেহের কারণে কবরস্থান উপচে উঠছে।       যুদ্ধে, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে, আমরা প্রত্যেকেই, হয়তো বা, কাউকে না কাউকে সমর্থন জানাবো, কিম্বা জানাবো না, কিন্তু, যদি এই যুদ্ধের ওপর আমাদের কারো কৌতুহল কিম্বা অনুভবী বেদনা থেকে থাকে, তাহলে, এই যুদ্ধের বেদনার্ত বিষয় থেকে সরে এসে, যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির পাশাপাশি, যুদ্ধের কারণসূত্রের দিকে তাকাত